কেউ কেউ অন্যদের বলবে যে, আদমের কাছে চল। তখন সকলে তার কাছে এসে তাকে বলবে, আপনি আবূল বাশার। আল্লাহ তা’আলা আপনাকে স্বীয় হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তার রুহ আপনার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন, এবং ফেরেশতাদের নির্দেশ দিলে তারা আপনাকে সিজদা করেন। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি? আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কি অবস্থায় পৌঁছেছি? তখন আদম (আলাইহিস সালাম) বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরুপ রাগান্বিত হবেন না। তিনি আমাকে একটি বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু আমি অমান্য করেছি। নফসি, নফসি, নফসি (আমি নিজেই সুপারিশ প্রার্থী ), তোমরা অন্যের কাছে যাও। তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও।
তখন সকলে নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, হে নূহ (আলাইহিস সালাম)! নিশ্চয়ই আপনি পৃথিবীর মানুষের প্রতি প্রথম রাসুল। আর আল্লাহ তা’আলা আপনাকে পরম কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে অভিহিত করেছেন। সুতরাং আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আমার একটি গ্রহণীয় দোয়া ছিল যা আমি আমার কওমের ব্যপারে করে ফেলেছি। (এখন) নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে।
তখন তারা ইব্রাহিম (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এসে বলবে, হে ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম)! আপনি আল্লাহর নাবী এবং পৃথিবীর মানুষের মধ্যে আপনি আল্লাহর বন্ধু। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আর আমিতো তিনটি মিথ্যা বলে ফেলেছিলাম। রাবি আবূ হাইয়ান তার বর্ণনায় এগুলোর উল্লেখ করেছেন। (এখন) নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে।
তারা মূসা র কাছে এসে বলবে, হে মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আপনি আল্লাহর রাসুল। আল্লাহ আপনাকে রিসালাত এর সম্মান দান করেন এবং আপনার সাথে কথা বলে সমগ্র মানব জাতির উপর মর্যাদা দান করেছেন। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আর আমিতো এক ব্যাক্তিকে হত্যা করে ফেলেছিলাম। যাকে হত্যা করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়নি। (এখন) নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে।
তারা ঈসার কাছে এসে বলবে, হে ঈসা (আলাইহিস সালাম)! আপনি আল্লাহর রাসুল এবং কালেমা যা তিনি মরিয়ম (আলাইহিস সালাম) এর উপর ঢেলে দিয়েছিলেন। আপনি রূহ আপনি দোলনায় থেকে মানুষের সাথে কথা বলেছেন। আজ আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরুপ রাগান্বিত হবেন না। তিনি নিজের কন গুনাহের কথা বলবেন না। নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে। তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলবে, হে মুহাম্মদ! আপনি আল্লাহর রাসুল শেষ নাবী। আল্লাহ তা’আলা আপনার আগের, পরের সব গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না আমরা কিসের মধ্যে আছি?
তখন আমি আরশের নীচে এসে আমার রবের সামনে সিজদা দিয়ে পড়ব। তারপর আল্লাহ তা’আলা তার প্রশংসা এবং গুণগানের এমন সুন্দর পদ্ধতি আমার সামনে খুলে দিবেন যা এর আগে অন্য কারও জন্য খুলেন নি। এরপর বলা হবে, হে মুহাম্মদ! তোমার মাথা উঠাও। তুমি যা চাও তোমাকে দেওয়া হবে। তুমি সুপারিশ কর, তোমার সুপারিশ কবুল করা হবে। এরপর আমি মাথা উঠিয়ে বলব, “হে আমার রব! আমার উম্মত! হে আমার রব! আমার উম্মত! হে আমার রব! আমার উম্মত! তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! আপনার উম্মতের মধ্যে যাদের কোন হিসাব নিকাশ হবে না, তাদেরকে জান্নাতের দরজাসমূহের ডান পাশের দরজা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দিন। এ দরজা ছাড়া অন্যদের সাথে অন্য দরজায় ও তাদের প্রবেশের অধিকার থাকবে। তারপর তিনি বলবেন, যার হাতে আমার প্রান সে সত্তার শপথ! বেহেশতের এক দরজার দুই পাশের মধ্যবর্তী প্রশস্ততা যেমন মক্কা ও হামিরের মধ্যবর্তী দূরত্ব, অথবা মক্কা ও বসরার মাঝখানের দূরত্ব।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৫৪ | 4354 | ٤۳۵٤
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ وآتينا داود زبورا আর আমি দাউদকে যাবুর দান করেছি”।
৪৩৫৪। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দাউদ (আলাইহিস সালাম) এর উপর (যাবুর) পড়া এত সহজ করে দেওয়া হয়েছিল যে, তিনি তার সওয়ারির উপর জ্বীন বাঁধার জন্য নির্দেশ দিতেন, জ্বীন বাঁধা শেষ হওয়ার আগেই তিনি পড়ে ফেলতেন তার উপর অবতীর্ণ কিতাব।