৪৩৩৭। উবায়দ ইবনু ইসমাইল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। তিনি বললেন, বলতো সেটা কোন বৃক্ষ, যা কোন মুসলিম ব্যাক্তির মতো যার পাতা ঝরেনা, এরুপ নয়, এরুপ নয় এবং এরূপও নয় যা সর্বদা খাদ্য প্রদান করে। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, আমার মনে হল এটা খেজুর বৃক্ষ। কিন্তু আমি দেখলাম আবূ বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ) কোন কথা বলছেন না। তাই আমি এ ব্যাপারে কিছু বলা পছন্দ করিনি। অবশেষে যখন কেউ কিছু বললেন না তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সেটা খেজুর গাছ। পরে যখন আমরা উঠে গেলাম, তখন আমি ওমর (রাঃ) কে বললাম, হে আব্বা! আল্লাহর কসম! আমার মনেও হয়েছিল খেজুর বৃক্ষ। উমর (রাঃ) বললেন, একথা বলতে তোমার কিসে বাধা দিল? বললাম, আমি আপনাদের বলতে দেখিনি, তাই আমি কিছু বলতে এবং আমার মত ব্যক্ত করতে পছন্দ করিনি। উমর (রাঃ) বললেন, অবশ্য যদি তুমি বলতে তবে তা আমার নিকট এত এত থেকে বেশি প্রিয় হত।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৩৮ | 4338 | ٤۳۳۸
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণী, يثبت الله الذين آمنوا بالقول الثابت “যারা শাশ্বত বাণীতে বিশ্বাসী , তাদের আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন”।
৪৩৩৮। আবূ ওয়ালিদ (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কবরে মুসলমান ব্যাক্তিকে যখন প্রশ্ন করা হবে তখন সে সাক্ষ্য দিবে, “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ” আল্লাহর বাণীতে এর প্রতই ইংগিত করা হয়েছে। বানীটি হল এইঃ يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৩৯ | 4339 | ٤۳۳۹
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ ألم تر إلى الذين بدلوا نعمة الله كفرا “আপনি কি তাদের লক্ষ্য করেন না যারা আল্লাহর অনুগ্রহের বদলে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ألم تر আপনি কি জানেন না ألم تعلم এর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন ألم تر كيف অথবা ألم تر إلى الذين خرجوا আয়াতে এ অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে। البوار ধ্বংস । এটা بار يبور بورا থেকে গঠিত । قوما بورا অর্থ ধ্বংসশীল সম্প্রদায় ।
৪৩৩৯। আলি ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ بَدَّلُوا نِعْمَةَ اللَّهِ كُفْرًا এ আয়াত দ্বারা মক্কার কাফেরদেরকে বোঝানো হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৪০ | 4340 | ٤۳٤۰
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বানী, إلا من استرق السمع فأتبعه شهاب مبين “আর কেউ চুপিসারে সংবাদ শুনতে চাইলে তার পশ্চাৎ ধাবন করে প্রদীপ্ত শিখা”।
সুরা হিজ্র
মুজাহিদ (রহ.) বলেন, صِرَاطٌ عَلَيَّ مُسْتَقِيْمٌ সঠিক পথ যা আল্লাহ্ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এবং তাঁর দিকে রয়েছে এ রাস্তা। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, لَعَمْرُكَ তোমার জীবনের কসম। قَوْمٌ مُنْكَرُوْنَ এমন সম্প্রদায়, যাদের লূত (আঃ) চিনেননি। অন্যেরা বলেন, كِتَابٌ مَعْلُوْمٌ নির্দিষ্ট সময়। لَوْ مَا تَأْتِيْنَا কেন আমার কাছে আসে না। شِيَعٌ বহু সম্প্রদায়। বন্ধুবর্গকেও شِيَعٌ বলা হয়। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, يُهْرَعُوْنَ তারা দ্রুতগতিতে ছুটে চলছে। لِلْمُتَوَسِّمِيْنَ প্রত্যক্ষকারীদেরকে জন্য سُكِّرَتْ ঢেকে দেয়া হয়েছে। চন্দ্র-সূর্যের মনযিল। بُرُوْجًا অর্থাৎ (ভার-গর্ভ মেঘমালা), এটার একবচন مُلْقَحَةً حَمَإٍ جَمَاعَةُ এর বহুবচন পচা কাদামাটি। وَالْمَسْنُوْنُ ঢেলে দেয়া হয়েছে। تَوْجَلْ ভীত হও। دَابِرَ অর্থ-শেষাংশ। الْإِمَامُ যার তুমি অনুসরণ করেছ, এবং যার দ্বারা সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছ। الصَّيْحَةُ ধ্বংস।
৪৩৪০। আলি ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, যখন আল্লাহ তা’আলা আকাশের কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন ফেরেশতারা তার কথা শোনার জন্য অতি বিনয়ের সাথে নিজ নিজ পালক ঝাড়তে থাকে মসৃণ পাথরের উপর জিঞ্জীরের শব্দের মত। আলি (রাঃ) বলেন, صَفْوَانٍ এর মধ্যে فا সাকিন যুক্ত এবং অন্যরা বলেন, فا ফাতাহ যুক্ত। এভাবে আল্লাহ তা’আলা তার বাণী ফেরেশতাদের পৌঁছান। যখন ফেরেশতাদের অন্তর থেকে ভয় দূরীভূত হয় তখন তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রভু কি বলেছেন? তখন তারা বলে, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন এবং তিনি সর্বোচ্চ, মহান। চুরি করে কান লাগিয়ে (শয়তানরা) তা শুনে নেয়। শোনার জন্য শয়তানগুলো একের ওপর এক এভাবে থাকে। সুফিয়ান ডান হাতের আঙ্গুল এর উপর অন্য আঙ্গুল রেখে হাতের ইশারায় ব্যপারটা প্রকাশ করলেন। তারপর কখনো আগুনের ফুলকি শ্রবণকারীকে তার সাথীর কাছে এ কথাটি পৌঁছানর আগেই আঘাত করে এবং তাকে জ্বালিয়ে দেয়। আবার কখনও সে ফুলকি প্রথম শ্রবণকারী শয়তান পর্যন্ত পোঁছার পূর্বেই সে তার নিচের সাথীকে খবরটি জানিয়ে দেয়। এমনি করে এ কথা পৃথিবী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। কখনও সুফিয়ান বলেছেন, এমনি করে পৃথিবী পর্যন্ত পোঁছে যায়। তারপর তা জাদুকরের মুখে ঢেলে দেওয়া হয় এবং সে তার সাথে শত মিথ্যা মিলিয়ে প্রচার করে। তাই তার কথা সত্য হয়ে যায়। তখন লোকেরা বলতে থাকে যে, দেখ এ জাদুকর আমাদের কাছে অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কথা বলেছিল, আমরা তা সঠিক পেয়েছি। বস্তুত আসমান থেকে শোনা কথার কারনেই তা সত্যে পরিনত হয়েছে।