হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৭ | 4377 | ٤۳۷۷
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “এবং আমি তোমাকে আমার নিজের জন্য প্রস্তুত করে দিয়েছি”।
সুরা তাহা
ইবন জুবায়র (রাঃ) বলেন, নাবতী ভাষায় طَه এর অর্থ يَارَجُلُ হে ব্যক্তি! যে সকল ব্যক্তি কোন অক্ষর স্পষ্ট উচ্চারণ করতে পারে না অথবা ‘তা’ অথবা ‘ফা’ উচ্চারণে তোতলামি করে, তাকে عقده বলা হয়। أَزْرِيْ আমার পিঠ। فَيَسْحَتَكُمْ সে তোমাদেরকে ধ্বংস করে দেবে। الْمُثْلٰى এটা الْأَمْثَلِ এর স্ত্রীলিঙ্গ। বলা হয়, خُذِ الْمُثْلٰى – خُذِ الْأَمْثَلَ উত্তম পন্থা অবলম্বন কর ثُمَّ ااتوا صَفًّا এরপর তোমরা সারিবদ্ধ হয়ে উপস্থিত হও। বলা হয়, ‘‘তুমি কি আজ সারিতে এসেছ?’’ অর্থাৎ সালাতের নির্ধারিত জায়গায় যেখানে সালাত আদায় করা হয়। فَأَوْجَسَ তিনি অন্তরে গোপন করলেন। خِيْفَةً মূলে خَوْفًا ছিল। অক্ষরটি ‘কাসরার’ কারণে وَاوُ টি يَاء দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছে। فِيْجُذُوْعِ (খেজুর বৃক্ষের) কান্ডের উপরে। خَطْبُكَ তোমার ব্যাপার। مِسَاسَ স্পর্শ করা, শব্দটি مِسَاسًا-مَاسَّهُ এর মাসদার لَنَنْسِفَنَّهُ অবশ্যই আমি তাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ছড়িয়ে দিব। قَاعًا এমন জায়গা যার ওপর দিয়ে পানি চলে যায়। الصَّفْصَفُ সমতল ভূমি। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مِنْزِيْنَةِ الْقَوْمِ অর্থাৎ সে সব অলংকার, যা তারা ফির‘আউনের বংশধর হতে ধার করে এনেছিল। فَقَذَفْتُهَا আমি তা নিক্ষেপ করলাম। أَلْقٰى সে তৈরি করল। فَنَسِيَ অর্থাৎ মূসা (আঃ) ভুলে গিয়েছেন। তারা বলতে লাগল, তিনি রবকে চিনতে ভুল করেছেন। يَرْجِعُإِلَيْهِمْقَوْلًا অর্থাৎ গো বৎস তাদের কথার জওয়াব দিতে পারে না। هَمْسًا পদধ্বনি। حَشَرْتَنِيْأَعْمٰى আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালে আমার প্রমাণাদি থেকে كُنْتُبَصِيْرًا আমার তো দুনিয়ায় চক্ষু ছিল। ইবনু ‘উয়াইনাই বলেন, أَمْثَلُهُمْ (জ্ঞানী ব্যক্তি) অর্থাৎ তাদের মধ্যে ন্যায় বিচারক।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, هَضْمًا এর অর্থ অবিচার করা হবে না যাতে তার পুণ্য বিনষ্ট হয়। عِوَجًا বক্রতা, উপত্যকা أَمْتًا উঁচু ভূমি, টিলা। مِسيرَتَهَا তার অবস্থা। النُّهٰى সংযমী, পরহিজগার। ضَنْعًا দুর্ভাগ্য। هَوَى দুর্ভাগা হওয়া। الْمُقَدَّسِ বারাকাতময় طُوًى একটি উপত্যকার নাম। بِمِلْكِنَا আমাদের নির্দেশে। مَكَانًاسُوًي তাদের মধ্যবর্তী স্থান। يَبَسًا শুষ্ক। عَلٰىقَدَرٍ প্রতিশ্রুতি সময়ে لَاتَنِيَا তোমরা উভয়ে দুর্বল হয়ো না।
৪৩৭৭। সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আদম (আলাইহিস সালাম) ও মূসা (আলাইহিস সালাম) মিলিত হলেন। মূসা (আলাইহিস সালাম) আদম (আলাইহিস সালাম) কে বললেন, আপনি তো সে ব্যাক্তি মানব জাতিকে কষ্টের মধ্যে ফেলেছেন এবং তাদের জান্নাত থেকে বহিষ্কার করিয়েছেন? আদম (আলাইহিস সালাম) তাকে বললেন, আপনি তো সে ব্যাক্তি আপনাকে আল্লাহ তা’আলা তাঁর রিসালাত এর জন্য মনোনীত করে নিয়েছেন, এবং বাছাই করেছেন আপনাকে নিজের জন্য এবং আপনার উপর তাওরাত নাযিল করেছেন? মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, হ্যাঁ। আদম (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনি তাতে অবশ্যই পেয়েছেন যে, আমার সৃষ্টির আগেই আল্লাহ তা’আলা তা আমার জন্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এভাবে আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর জয়ী হলেন। الْيَمُّ সমুদ্র।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৮ | 4378 | ٤۳۷۸
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “আমি অবশ্যই মুসার প্রতি ওহী নাযিল করেচ্ছিলেম এ মর্মে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রজনীতে বের হও এবং তাদের জন্য সমুদ্রের মধ্য দিয়ে এক শুকনো পথ বের করে নাও। পশ্চাৎ থেকে এসে তোমাকে ধরে ফেলা হবে এ আশংকা করোনা। এবং ভয় করোনা। তারপর ফিরাউন তাঁর সেনাবাহিনী সহ তাদের পিছনে ধাওয়া করল। আর সমুদ্র তাদের সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত করল। আর ফিরাউন তাঁর সম্প্রদায়কে পথভ্রষ্ট করেছিল এবং সৎপথ দেখায়নি”।
৪৩৭৮। ইয়াকুব ইবনু ইব্রাহিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় এলেন, তখন ইহুদিরা আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করত। তিনি তাদের (সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এর কারন) জিজ্ঞেস করলেন। তারা বলল, এ দিনে মূসা (আলাইহিস সালাম) ফিরাউনের উপর জয় লাভ করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমরাই তো তাদের চাইতে মূসা (আলাইহিস সালাম) এর নিকটবর্তী। এরপর মুসলিমদের নির্দেশ দিলেন, তোমরা এ দিন সিয়াম পালন কর।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৯ | 4379 | ٤۳۷۹
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ فلا يخرجنكما من الجنة فتشقى “সে যেন কিছুতেই তোমাদের জান্নাত থেকে বের করে না দেয়, যাতে তোমরা কষ্টে পতিত হও”।
৪৩৭৯। কুতায়বা ইবনু সাইদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মূসা (আলাইহিস সালাম) আদম (আলাইহিস সালাম) এর সঙ্গে যুক্তি উত্থাপন করে বললেন, আপনি তো সে ব্যাক্তি, আপনার গুনাহ দ্বারা মানব জাতিকে জান্নাত থেকে বের করেছেন এবং তাদের দুঃখ কষ্টে ফেলেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আদম (আলাইহিস সালাম) বলেন, হে মূসা! আপনি তো সে ব্যাক্তি, আল্লাহ পাক আপনাকে রিসালাতএর দায়িত্ব অর্পণ করার জন্য এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য মনোনীত করেছেন। তবুও কি আপনি আমাকে এমন বিষয়ের জন্য ভর্ৎসনা করবেন, যা আল্লাহ আমার সৃষ্টির আগেই আমার সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, অথবা বললেন, আমার সৃষ্টির পূর্বেই তা আমার সম্পর্কে নির্ধারণ করে রেখেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ (যুক্তির মাধ্যমে) আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর জয়ী হলেন।