হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭২ | 4372 | ٤۳۷۲
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “আমরা আপনার প্রতিপালকের আদেশ ব্যতীত অবতরণ করবনা (যা রয়েছে আমাদের সম্মুখে ও পেছনে)”।
৪৩৭২। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার জিবরীলকে বললেন, আপনি আমার সঙ্গে যতবার সাক্ষাত করেন, তার চাইতে বেশি সাক্ষাত করতে আপনাকে কিসে বাধা দেয়? [১] তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল “আমরা আপনার প্রতিপালকের আদেশ ব্যতীত অবতরণ করবনা (যা রয়েছে আমাদের সম্মুখে ও পেছনে)”।
১। কিছু কালের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ওহী বন্ধ ছিল। এতে রাসুল খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে জিবরীল উপস্থিত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিলম্বের কারন জিজ্ঞেস করেন। এ হাদিসখানা সাওরি (রহঃ) আ’মাশ থেকে বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৩ | 4373 | ٤۳۷۳
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তুমি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে, আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেওয়া হবেই”।
৪৩৭৩। হুমায়দি (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি খাব্বাব (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি (খাব্বাব) বলেন, আমি আস ইবনু ওয়ায়েল সাহমির নিকট গেলাম। তার কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল, তা আদায় করার জন্য। আস ইবনু ওয়ায়েল বলল, আমি তোমার প্রাপ্য তোমাকে দিব না যতক্ষন তুমি মুহাম্মদের প্রতি অবিশ্বাস না করো। [১] তখন আমি বললাম, না, এমনকি তুমি মরে গিয়ে আবার জীবিত হয়ে আসলেও তা হওয়ার নয়। আস ইবনু ওয়ায়েল বলল, আমি কি মরে যাবার পর আবার জীবিত হব? আমি বললাম, হ্যাঁ। আস ইবনু ওয়ায়েল বলল, নিশ্চয়ই তথায়ও আমার ধন সম্পদ এবং সন্তান সন্ততি থাকবে, তা থেকে আমি তোমার ঋণ পরিশোধ করব। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “তুমি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে, আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেওয়া হবেই”।
এ হাদিসখানা সাওরী … আ’মাশ থেকে বর্ণনা করেন।
১। অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নাবী হিসেবে অস্বীকার করা।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৪ | 4374 | ٤۳۷٤
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ ‘সেকি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে? عهد অর্থ দৃঢ় প্রতিশ্রুতি।
৪৩৭৪। মুহাম্মদ ইবনু কাসির (রহঃ) … খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মক্কায় থাকাকালে কর্মকারের কাজ করতাম। এ সময় আস ইবনু ওয়ায়েল কে একখানা তরবারি বানিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর একদিন আমার সে (তরবারির) পাওনার তাগাদায় তার নিকট আসলাম। সে বলল, মুহাম্মদ কে অস্বীকার না করা পর্যন্ত তোমার পাওনা দেবনা। আমি বললাম, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অস্বীকার করব না। এমনকি আল্লাহ তোমাকে মৃত্যু দিবার পর তোমাকে পুনরায় জীবিত করা পর্যন্ত। সে বলল, আল্লাহ যখন আমাকে মৃত্যুর পরে আবার জীবিত করবেন, তখন আমার ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততিও থাকবে। (সেখানে তোমার পাওনা দিয়ে দিব)। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেনঃ “তুমি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে, আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেওয়া হবেই। সেকি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে’? রাবি বলেন, عهد এর অর্থ দৃঢ় প্রতিশ্রুতি। আশজায়ি (রহঃ) সুফিয়ান থেকে বর্ণনার মধ্যে سَيْفًا (তরবারি) শব্দ এবং مَوْثِقًا (প্রতিশ্রুতি) শব্দ উল্লেখ করেন নি।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৫ | 4375 | ٤۳۷۵
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “ কখনওই নয়, তারা যা বলে, আমি তা অনতিবলম্বে লিখে রাখব এবং তাদের শাস্তি বৃদ্ধি করতে থাকব”।
৪৩৭৫। বিশর ইবনু খলিদ (রহঃ) … খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাহিলিয়াতের যুগে কর্মকার ছিলাম। সে সময় আস ইবনু ওয়ায়েলের কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল। আমি পাওনা তাগাদা করতে তার কাছে আসলে সে বলল, আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করবনা। যতক্ষণ না তুমি মুহাম্মদকে অস্বীকার করো। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম। আমি অস্বীকার করবনা। এমনকি আল্লাহ তোমাকে মেরে ফেলার পর আবার তোমাকে জীবিত করার পরও নয়। বলল, তাহলে তুমি আমাকে ছেড়ে দাও আমি মরে আবার জীবিত হয়ে উঠা পর্যন্ত। তখন তো আমাকে সম্পদ সন্তান দেওয়া হবে। তখন তোমাকে পরিশোধ করে দিব। এ প্রসঙ্গে আ আয়াত নাযিল হয়। “তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে, আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেওয়া হবেই”।
হাদিস নম্বরঃ ৪৩৭৬ | 4376 | ٤۳۷٦
পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ সে যে বিষয়ের কথা বলে তা থাকবে আমার অধিকারে এবং সে আমার নিকট আসবে একা। ইবন আব্বাস (রা) বলেন, الجبال هدا এর অর্থ পাহাড় গুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।
৪৩৭৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একজন কর্মকার ছিলাম। এবং আস ইবনু ওয়ায়েল এর নিকট আমার কিছু পাওনা ছিল। আমি পাওনা তাগাদা করতে তার কাছে আসলে সে বলল, আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করবনা। যতক্ষণ না তুমি মুহাম্মদকে অস্বীকার করো। তখন তিনি বললেন, আমি কখনও তাকে অস্বীকার করবনা। এমনকি তুমি মরার মর জীবিত হওয়া পর্যন্তও না। আস বলল, আমি যখন মৃত্যুর পর আবার জীবিত হব তখন অবলম্বনে আমি সম্পদ ও সন্তানের দিকে প্রত্যাবর্তন করব এবং তোমাকে পরিশোধ করে দিব। এ সময় আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন। “তুমি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে, আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেওয়া হবেই। ‘সেকি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে? কখনওই নয়, তারা যা বলে, আমি তা অনতিবলম্বে লিখে রাখব এবং তাদের শাস্তি বৃদ্ধি করতে থাকব। সে যে বিষয়ের কথা বলে তা থাকবে আমার অধিকারে এবং সে আমার নিকট আসবে একা”।