২৫৩৬। অনুরূপ আয়াত [ ১০:৩] এবং ব্যাখ্যার জন্য দেখুন টিকা ১৩৮৬। যেখানে , সিংহাসনে কথাটির ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। আমাদের সীমিত বিচার বুদ্ধিতে যদি কোনও কিছুকে অন্যায় অবিচার মনে হয় , তবে আল্লাহ্কে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ্ তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকে পরিব্যপ্ত করে দয়া ও করুণার সিংহাসনে সমাসীন আছেন। তিনিই সব কিছুর নির্দ্দেশ দান করেন এবং আমাদের এই বিশ্বাস মনে রাখতে হবে যে আমাদের সকল বিপদ আপদ বাঁধা তাঁর করুণায় কল্যাণে রূপান্তরিত হবে। আল্লাহ্র কর্তৃত্ব পৃথিবীর কর্তৃত্বের মত নয়। পৃথিবীর কর্তৃত্বকে প্রশ্ন করা যায়, অস্বীকার করা চলে , প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আহ্বান করা যায় বা তা চিরজীবন স্থায়ী হবে না। কিন্তু আল্লাহ্র কর্তৃত্ব চিরস্থায়ী , অবিনশ্বর, অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বিশ্ব-ভূবনে ,দ্যুলোকে-ভূলোকে প্রকৃতির যে, আইন তা আল্লাহ্র কর্তৃত্বের প্রকাশ মাত্র। এই আইন অমোঘ, অবিনশ্বর ও চিরস্থায়ী ।
আয়াতঃ 020.006
নভোমন্ডলে, ভুমন্ডলে, এতদুভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে এবং সিক্ত ভূগর্ভে যা আছে, তা তাঁরই।
To Him belongs all that is in the heavens and all that is on the earth, and all that is between them, and all that is under the soil.
لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمَا تَحْتَ الثَّرَى
Lahu ma fee alssamawati wama fee al-ardi wama baynahuma wama tahta alththara
YUSUFALI: To Him belongs what is in the heavens and on earth, and all between them, and all beneath the soil.
PICKTHAL: Unto Him belongeth whatsoever is in the heavens and whatsoever is in the earth, and whatsoever is between them, and whatsoever is beneath the sod.
SHAKIR: His is what is in the heavens and what is in the earth and what is between them two and what is beneath the ground.
KHALIFA: To Him belongs everything in the heavens, and the earth, and everything between them, and everything beneath the ground.
০৬। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীতে এবং এই দুই এর মধ্যে যা আছে এবং মাটির অভ্যন্তরে যা থাকে সব তাঁর অধিকারে ২৫৩৭।
২৫৩৭। আল্লাহ্র কর্তৃত্বের ধারণাকে স্বচ্ছ করার জন্য এই আয়াতটির বিবরণ অত্যন্ত স্পষ্ট ও গভীরতা পূর্ণ। আকাশমন্ডলী অর্থাৎ নভোঃমন্ডল যা গ্রহ নক্ষত্র ও গ্যালাক্সী ধারণ করে, পৃথিবী এবং নভোঃমন্ডলের মধ্যবর্তী স্থান, পৃথিবীতে এবং ভূগর্ভে সর্বত্র আল্লাহ্র কর্তৃত্ব বর্তমান।
আয়াতঃ 020.007
যদি তুমি উচ্চকন্ঠেও কথা বল, তিনি তো গুপ্ত ও তদপেক্ষাও গুপ্ত বিষয়বস্তু জানেন।
And if you (O Muhammad SAW) speak (the invocation) aloud, then verily, He knows the secret and that which is yet more hidden.
وَإِن تَجْهَرْ بِالْقَوْلِ فَإِنَّهُ يَعْلَمُ السِّرَّ وَأَخْفَى
Wa-in tajhar bialqawli fa-innahu yaAAlamu alssirra waakhfa
YUSUFALI: If thou pronounce the word aloud, (it is no matter): for verily He knoweth what is secret and what is yet more hidden.
PICKTHAL: And if thou speakest aloud, then lo! He knoweth the secret (thought) and (that which is yet) more hidden.
SHAKIR: And if you utter the saying aloud, then surely He knows the secret, and what is yet more hidden.
KHALIFA: Whether you declare your convictions (or not) He knows the secret, and what is even more hidden.
০৭। তুমি যদি উচ্চস্বরে শব্দ উচ্চারণ কর [ তাতে কিছু যায় আসে না ]। কারণ তিনি তো গুপ্ত ও অব্যক্ত সকলই জানেন ২৫৩৮।
২৫৩৮। এই আয়াতটির তিন রকম ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। ১) প্রকাশ্যে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করা বা সশব্দে , সজোরে বলার মাধ্যমে কোনও তথ্য বা সংবাদ আল্লাহ্র কাছে পৌঁছায় না। কারণ তিনি মনের গুপ্ত, ব্যক্ত ও অব্যক্ত সকল চিন্তা ভাবনার খবর রাখেন। বাইরে সজোরে যাই প্রকাশ করা হোক না কেন অন্তরের গোপন ইচ্ছা, ভাবনা-চিন্তা সবই সেই সর্বশক্তিমানের নিকট দিবালোকের ন্যায় স্বচ্ছ। সুতারাং আল্লাহ্কে কিছু জানানোর জন্য সশব্দ হওয়ার প্রয়োজন নাই। ২) মনে এক ও মুখে অন্য কথা এরূপ মিথ্যা ভান ও অবিশ্বস্ততা কোনও মঙ্গল বয়ে আনবে না। কারণ আল্লাহ্ এসব বাহ্যিক কথাবার্তার প্রকৃত উদ্দেশ্য অবগত আছেন। আল্লাহ্র কাছে যা মূল্যবান তা হচ্ছে আত্মার স্বচ্ছতা, পবিত্রতা ও বিশ্বস্ততা। সুতারাং অবিশ্বস্ত কথা , প্রতিজ্ঞা , প্রার্থনা কোনও কিছুই আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ৩) সজোরে কোরাণ আবৃত্তি করা বা উচ্চস্বরে প্রার্থনা করা আল্লাহ্র কাছে খুর জরুরী নয়। কারণ এবাদতের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আল্লাহ্ বাইরের শব্দচয়ন বা উচ্চস্বরের দ্বারা বিচার করবেন না। তাঁর বিচারের মানদণ্ড হবে পাঠকের বা প্রার্থনায় নিবেদিতের আত্মিক অবস্থা। অন্তরের একাগ্রতা, ও স্রষ্টার কাছে বিনয়ে একান্ত নিবেদনই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ প্রার্থনা। কে আকুলভাবে স্রষ্টার সান্নিধ্য কামনা করে , আর কে করে না তা আল্লাহ্ খোলা বই এর মত, প্রখর দিবালোকের মত পাঠ করতে পারেন।