হাদীস নং ২৫৬৫
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু তালহা রা.-কে বলেন, মত হল, তোমার বাগানটি তোমার আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে দাও। আবু তালহা রা. বলেন, আমি তাই করব ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তাই আবু তালহা রা. তার বাগানটি তার আত্মীয়-স্বজন ও চাচাত ভাইয়ের মধ্যে ভাগ করে দেন। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যখন এই আয়াতটি নাযিল হল : (হে মুহাম্মদ) আপনার নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দেন (২৬ : ২১৪)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোত্রদের ডেকে বললেন, হে বানু ফিহর, হে বানু আদী, তোমরা সতর্ক হও। আবু হুরায়রা রা. বলেনে যে, যখন কুরআনের এই আয়াত নাযিল হল: (হে মুহাম্মদ) আপনার নিকট আত্মীয় বর্গকে সতর্ক করে দেন (২৬ : ২১৪)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়।
হাদীস নং ২৫৫৭
মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম রহ……….আমির ইবনে সাদ রা.-এর পিতা সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি (একবার) অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, তিনি যেন আমাকে পেছন দিকে ফিরিয়ে না নেন। তিনি বললেন, আশা করি আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার দ্বারা লোকদের উপকৃত করবেন। আমি বললাম, আমি অসীয়াত করতে চাই। আমার তো একটি মাত্র কন্যা রয়েছে। আমি আরো বললাম, আমি অর্ধেক অসীয়াত করতে চাই। তিনি বললেন, অর্ধেক অনেক বেশী। আমি বললাম, এক তৃতীয়াংশ। তিনি বললেন, আচ্ছা এক তৃতীয়াংশ এবং এক তৃতীয়াংশ বেশ বা তিনি বলেছেন বিরাট। সাদ রা. বলেন, এরপর লোকেরা এক তৃতীয়াংশ অসীয়াত করতে লাগল। আর তা-ই বৈধ হল।
হাদীস নং ২৫৫৮
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ……… রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উতবা ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা. তাঁর ভাই সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা.-কে এই বলে অসীয়াত করেন যে, যামআর দাসীর ছেলেটি আমার ঔরসজাত। তাকে তুমি তোমার অধিকারে আনবে। মক্কা বিজয়ের বছর সাদ রা. তাকে নিয়ে নেন এবং বলেন, সে আমার ভাতিজা আমাকে এর ব্যাপারে অসীয়াত করে গেছেন। আবদ ইবনে যামআ রা. দাঁড়িয়ে বললেন, সে আমার ভাই এবং আমার পিতার দাসীর পুত্র। আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম হয়েছে। তারা উভয়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসেন। সাদ রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সে আমার ভাইয়ের পুত্র এবং তিনি আমাকে তা সম্পর্কে অসীয়াত করে গেছেন। আবদ ইবনে যামআ রা. বললেন, সে আমার ভাই এবং আমার পিতার দাসীর পুত্র। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবদ ইবনে যামআ সে তোমারই প্রাপ্য। কেননা যার বিছানায় সন্তান জন্মেছে, সেই সন্তানের অধিকারী। ব্যভিচারীর জন্য রয়েছে পাথর। তারপর তিনি সাওদা বিনতে যামআ রা.-কে বললেন, তুমি এই ছেলেটি থেকে পর্দা কর। কেননা তিনি ছেলেটির সঙ্গে উতবা-র সাদৃশ্য দেখতে পান। ছেলেটির আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়া পর্যন্ত সে কখনো সাওদা রা.-কে দেখেনি।
হাদীস নং ২৫৫৯
হাসসান ইবনে আবু আব্বাদ রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত, এক ইয়াহুদী একটি মেয়ের মাথা দুইটি পাথরের মাঝে মাঝে রেখে তা তেথলে ফেলে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কে তোমাকে এমন করেছে ? কি অমুক, না অমুক ব্যক্তি ? অবশেষে যখন সেই ইয়াহুদীর নাম নেওয়া হল তখন মেয়েটি মাথা দিয়ে ইশারা করল, হ্যাঁ। তারপর সেই ইয়াহুদীকে নিয়ে আসা হল এবং তাকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে সে স্বীকার করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন। সে মতে পাথর দিয়ে তার মাথা তেথরিয়ে দেয়া হল।
হাদীস নং ২৫৬০
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্পদ পেত সন্তান আর পিতা-মাতার জন্য ছিল অসীয়াত । এরপর আল্লাহ তা’আলা তাঁর পছন্দ মোতাবেক এ বিধান রহিত করে ছেলের অংশ মেয়ের দ্বিগুণ, পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য এক ষষ্ঠমাংশ, স্ত্রীর জন্য (যদি সন্তান থাকে) এক অষ্টমাংশ, (না থাকলে) এক চতুর্থাংশ, স্বামীর জন্য (সন্তান না থাকলে) অর্ধেক, (থাকলে) এক চতুর্থাংশ নির্ধারণ করেন।
হাদীস নং ২৫৬১
মুহাম্মদ ইবনে আলা রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! উত্তম সাদকা কোনটি ? তিনি বলেন, সুস্থ এবং সম্পদের প্রতি অনুরাগ থাকা অবস্থায় দান খায়রাত করা, যখন তোমরা ধনী হওয়ার আকাঙ্খা থাকে এবং তুমি দারিদ্র্যের আশংকা রাখ, আর তুমি এভাবে অপেক্ষায় থাকবে না যে, যখন তোমার প্রাণ কণ্ঠাগত হয়ে আসে, তখন তুমি বলবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু অথচ তা অমুকের জন্য হয়েই গেছে।
হাদীস নং ২৫৬২
সুলাইমান ইবনে দাউদ আবু রাবী রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি : যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, আমানত রাখলে তা খেয়ানত করে এবং প্রতিশ্রুতি দিলে তা ভঙ্গ করে।