হাদীস নং ২৫৪৮
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বারীরা তার কিতাবতের ব্যাপারে তাঁর কাছে সাহায্যের আবেদন নিয়ে এল। তিনি বললেন, তুমি চাইলে আমি তোমার মালিককে দিয়ে দিতে পারি এবং ওয়ালার অধিকার হবে আমার । তারপর যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন, তিনি তাঁর কাছে বিষয়টি উল্লেখ করেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাকে কিনে আযাদ করে দাও। কেননা ওয়ালার অধিকার তারই, যে আযাদ করে। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে দাঁড়িয়ে বললেন, লোকদের কি হয়েছে যে, তারা এমন সব শর্তারোপ করে যা আল্লাহর কিতাবে নেই। যে এমন শর্তারোপ করে যা আল্লাহর কিতাবে নেই, সে তার অধিকারী হবে না যদিও শত শর্তারোপ করে।
হাদীস নং ২৫৪৯
আবুল ইয়ামান রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহর নিরানব্বই অর্থাৎ এক কম একশটি নাম রয়েছে, যে ব্যক্তি তা স্মরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হাদীস নং ২৫৫০
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনে খাত্তাব রা. খায়বারে কিছু জমি লাভ করেন। তিনি এ জমির ব্যাপারে পরামর্শের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি খায়বারে এমন উৎকৃষ্ট জমি লাভ করেছি যা ইতিপূর্বে আর কখনো পাইনি। আপনি আমাকে এ ব্যাপারে কি আদেশ দেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে জমির মূল সত্ত্ব ওয়াকফে আবদ্ধ করতে এবং উৎপন্ন বস্তু সাদকা করতে পার। ইবনে উমর রা. বলেন, উমর রা. এ শর্তে তা সাদকা করেন যে, তা বিক্রি করা যাবে না, তা দান করা যাবে না এবং কেউ এর উত্তরাধিকারী হবে না। তিনি সাদকা করে দেন এর উৎপন্ন বস্তু অভাবগ্রস্ত, আত্মীয়-স্বজন, দাসমুক্তি, আল্লাহর রাস্তায়, মুসাফির ও মেহমানদের জন্য। (বারী আরোও বলেন) যে এর মুতাওয়াল্লী হবে তার জন্য সম্পদ সঞ্চয় না করে যথাবিহিত খাওয়া ও খাওয়ানোতে কোন দোষ নেই। তারপর আমি ইবনে সীরীন রহ.-এর নিকট হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনি বলেন, অর্থাৎ মাল জমা না করে।
অসীয়াত অধ্যায় (২৫৫১-২৫৯০)
হাদীস নং ২৫৫১
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কোন মুসলিম ব্যক্তির উচিত নয় যে, তার অসীয়াতযোগ্য কিছু রয়েছে, সে দু’রাত কাটাবে অথচ তার কাছে তার অসীয়াত লিখিত থাকবে না। মুহাম্মদ ইবনে মুসলিম রহ. এ হাদীস বর্ণনায় মালিক রহ.-এর অনুসরণ করেছেন। এ সনদে আমর রহ. ইবনে উমর রা.-এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ২৫৫২
ইবরাহীম ইবনে হারিস রহ………. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শ্যালক অর্থাৎ উম্মুল মুমিনীন জুয়াইরিয়া বিনতে হারিসের ভাই ইবনুল হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ইনতিকাল সময় তাঁর সাদা খচ্চরটা, তাঁর হাতিয়ার এবং সে জমি যা তিনি সাদকা করেছিলেন, তাছাড়া কোন স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা, কোন দাস-দাসী কিংবা কোন জিনিস রেখে যাননি।
হাদীস নং ২৫৫৩
খাল্লাদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ……..তালহা ইবনে মুসাররিফ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে আদী আওফা রা.-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি অসীয়াত করেছিলেন ? তিনি বলেন, না। আমি বললাম, তাহলে কিভাবে লোকদের উপর অসীয়াত ফরয করা হল, কিংবা অসীয়াতের নির্দেশ দেয়া হল? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কিতাবের (অনুযায়ী আমল করার) অসীয়াত করেছেন।
হাদীস নং ২৫৫৪
আমর ইবনে যুরারা রহ……..আসওয়াদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবীগণ আয়িশা রা.-এর কাছে আলোচনা করলেন যে, আলী রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওয়াসী ছিলেন। আয়িশা রা. বলেন, তিনি কখন তাঁর প্রতি অসীয়াত করলেন ? অথচ আমি তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার বুকে অথবা বলেছেন আমার কোলে হেলান দিয়ে রেখেছিলাম। তখন তিনি পানির তস্তুরি চাইলেন, তারপর আমার কোলে ঝুঁকে পড়লেন। আমি বুঝতেই পারিনি যে, তিনি ইন্তিকাল করেছেন। অতএব তাঁর প্রতি কখন অসীয়াত করলেন।
হাদীস নং ২৫৫৫
আবু নুআইম রহ………সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাকে রোগাক্রান্ত অবস্থায় দেখতে আসেন। সে সময় আমি মক্কায় ছিলাম। কোন ব্যক্তি যে স্থান থেকে হিজরত করে, সেখানে মৃত্যুবরণ করাকে তিনি অপছন্দ করতেন। এজন্য তিনি বলতেন, আল্লাহর রহম করুক ইবনে আফরা-র উপর। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি কি আমার সমুদয় মালের ব্যবহারের অসীয়াত করে যাব? তিনি বললেন, না । আমি আরয করলাম, তবে অর্ধেক ? তিনি ইরশাদ করলেন, না। আমি আরয করলাম, তবে এক তৃতীয়াংশ ? তিনি ইরশাদ করলেন, (হ্যাঁ) এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশও অনেক। ওয়ারিসগণকে দরিদ্র পরমুখাপেক্ষী করে রেখে যাওয়ার চেয়ে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া শ্রেয়। তুমি যখনই কোন খরচ করবে, তা সাদকারূপে গণ্য হবে। এমনকি সে লোকমাও যা তোমার স্ত্র্রীর মুখে তুলে দিবে। হয়ত আল্লাহ পাক তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং লোকেরা তোমার দ্বারা উপকৃত হবেন, আবার কিছু লোক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সে সময় তার একটি মাত্র কন্যা ছাড়া কেউ ছিল না।