হাদীস নং ৩০৪০
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ……..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যাদু করা হয়েছিল। লায়স রহ. বলেন, আমার নিকট হিশাম পত্র লিখেন, তাঁতে লেখা ছিল যে, তিনি তাঁর পিতার সূত্রে আয়িশা রা. থেকে হাদীস শুনেছেন এবং তা ভাল করে মুখস্থ করেছন। আয়িশা রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যাদু করা হয়। এমনকি যাদুর প্রভাবে তাঁর খেয়াল হত যে, তিনি স্ত্রীগণের বিষয়ে কোন কাজ করে ফেলেছেন অথচ তিনি তা করেননি। শেষ পর্যন্ত একদিন তিনি রোগ আরোগ্যর জন্য বারবার দু’আ করলেন, এরপর তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি জান? আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন, যাতে আমার রোগের আরোগ্য নিহিত আছে? আমার একজন অপরজনকে জিজ্ঞাসা করল, এ ব্যক্তির রোগটা কি? জিজ্ঞাসিত লোকটি জবাব দিল, তাকে যাদু করা হয়েছে। প্রথম লোকটি বলল, তাকে যাদু কে করল? সে বলল, লবীদ ইবনে আসাম। প্রথম ব্যক্তি বলল, কিসের দ্বারা (যাদু করল) ? দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, তাকে যাদু করা হয়েছে চিরুনি, সুতার তাগা এবং খেজুরের খোসায়। প্রথম ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, এগুলো কোথায় আছে? দ্বিতীয় ব্যক্তি জবাব দিল, যারওয়ার কূপে। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গেলেন এবং ফিরে আসলেন, এরপর তিনি আয়িশা রা.-কে বললেন, কূপের কাছের খেজুর গাছগুলো যেন এক একটা শয়তানের মুক্ত। তখন আমি (আয়িশা) জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি সেই যাদু করা জিনিসগুলো বের করতে পেরেছেন? তিনি বলেন, না। তবে আল্লাহ আমাকে আরোগ্য দিয়েছেন। আমার আশংকা হয়েছিল এসব জিনিস বের করলে মানুষের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি হতে পারে। এরপর সেই কূপটি বন্ধ করে দেয়া হল।
হাদীস নং ৩০৪১
ইসমাঈল ইবনে আবী উআইস রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন নিদ্রা যায় তখন শয়তান তার মাথার শেষাংশে তিনটি করে গিরা দিয়ে দেয়। প্রত্যেক গিরার সময় এ কথা বলে কুমন্ত্রণা দেয় যে, এখনো অধিক রাত রয়ে গেছে, অতএব শুয়ে থাক। এরপর সে লোক যদি জেগে উঠে এবং আল্লাহকে স্মরণ করে তখন একটি খুলে যায়। (অলসতা দূর হয়) তারপর যদি সে উযু করে তবে দ্বিতীয় গিরাও খুলে যায় (এটা অপবিত্রতার গিরা)। আর যদি সে সালাত আদায় করে তবে সব কয়টি গিরাই খুলে যায়। আর এ ব্যক্তি খুশীর সাথে পবিত্র মনে ভোর উদযাপন করবে, অন্যথায় সে অপবিত্র মনে অলসতার সাথে ভোর উদযাপন করবে।
হাদীস নং ৩০৪২
উসমান ইবনে আবু শাইবা রহ………..আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এমন এক ব্যক্তির সম্পর্কে উল্লেখ করা হল, যে সারা রাত এমনকি ভোর পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিল। তখন তিনি বললেন, সে এমন এক ব্যক্তি যার উভয় কানে অথবা তিনি বললেন, তার কানে শয়তান পেশাব করেছে।
হাদীস নং ৩০৪৩
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ………….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দেখ, তোমাদের কেউ যখন তার স্ত্রীর নিকট আসে, আর তখন বলে, বিসমিল্লাহ। হে আল্লাহ ! আমাদেরকে শয়তানের প্রভাব হতে দূরে রাখ। আর আমাদেরকে যে সন্তান দান করবে তাকেও শয়তানের প্রভাব হতে বাঁচিয়ে রাখ। এরপর তাদেরকে যে সন্তান দান করা হবে তাকে শয়তান কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
হাদীস নং ৩০৪৪
মুহাম্মদ (ইবনে সালাম) রহ………….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সূর্যের এক কিনারা উদিত হয়, তখন তা পরিষ্কারভাবে উদিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা সালাত আদায় বন্ধ রাখ। আবার যখন সূর্যের এক কিনারা অস্ত যাবে তখন তা সম্পূর্ণ অস্ত না যাওয়া পর্যন্ত তোমরা সালাত আদায় করা বন্ধ রাখ। কেননা তা শয়তানের দু’শিং-এর মাঝখানে দিয়ে উদিত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, হিশাম রহ. কি শয়তান বলেছেন না আশ-শয়তান বলেছেন তা আমি জানি না।
হাদীস নং ৩০৪৫
আবু মামার রহ…………..আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায়ের সময় তোমাদের কারো মুখ দিয়ে যখন কেউ চলাচল করবে তখন সে তাকে অবশ্যই বাঁধা দিবে। সে যদি অমান্য করে তাবে আবারো তাকে বাধা দিবে। এরপরও যদি সে অমান্য করে তবে অবশ্যই তার সাথে লড়াই করবে। কেননা সে শয়তান। উসমান ইবনে হাইসাম রহ………আবু হুয়রারা রা. থেকে বর্ণিত, বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমযানের যাকাত (সাদকায়ে ফিতরের) হেফাজতের দায়িত্ব প্রদান করলেন। এরপর আমার নিকট এক আগন্তুক আসল। সে তার দুহাতের কোষ ভরে খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে লাগল। তখন আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি অবশ্যই তোমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিয়ে যাব। তখন সে একটি হাদীস উল্লেখ করল এবং বলল, যখন তুমি বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়তুল কুরসী পড়বে । তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন হেফাজতকারী থাকবে এবং ভোর হওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,সে তোমাকে সত্য বলেছে, অথচ সে মিথ্যাবাদী এবং শয়তান ছিল।