হাদীস নং ২৯৮১
হাসান ইবনে রাবী রহ……….যায়েদ ইবনে ওহাব রা. থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ রা. বলেন, সত্যবাদীরূপে স্বীকৃত রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপকরণ নিজ নিজ মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত বীর্য রূপে অবস্থান করে, এরপর তা জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়। অনুরূপভাবে চল্লিশ দিন অবস্থান করে। তারপর তা মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে (আগের ন্যায় চল্লিশ দিন) থাকে। এরপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। আর তাকে চারটি বিষয় নির্দেশ দেওয়া হয়। তাকে (ফেরেশতাকে) লিপিবদ্ধ করতে বলা হয়, তার আমল, তার রিযক, তার জীবনকাল এবং সে কি পাপী হবে না পূণ্যবান হবে। এরপর তার মধ্যে আত্ম ফুঁকে দেওয়া হয়। কাজেই তোমাদের কোন ব্যক্তি আমল করতে করতে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তার এবং জান্নাতের মাঝে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকে। এমন সময় তার আমলনামা তার উপর অগ্রগামী হয়। তখন সে জাহান্নামবাসীর মত আমল করে আর একজন আমল করতে করতে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তার এবং জাহান্নমের মাঝে মাত্র একহাত ব্যবধান থাকে, এমন সময় তার আমলনামা তার উপর অগ্রগামী হয়। ফলে সে জান্নাতবাসীর মত আমল করে।
হাদীস নং ২৯৮২
মুহাম্মদ ইবনে সালাম রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন তিনি জিবরাঈল আ.-কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাহকে ভালবাসেন, অতএব তুমিও তাকে ভালবাস। তখন জিবরাঈল আ.-ও তাকে ভালবাসেন এবং জিবরাঈল আ. আকাশবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালবাসেন। কাজেই তোমরা তাকে ভালবাস। তখন আকাশবাসী তাকে ভালবাসতে থাকে। এরপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণ করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।
হাদীস নং ২৯৮৩
মুহাম্মদ (ইবনে ইয়াহইয়া) রহ…………নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, ফেরেশতাগণ মেঘমালার আড়ালে অবতরণ করেন এবং আকাশে (আল্লাহর) মিমাংসা কৃত বিধান আলোচনা করেন। তখন শয়তানেরা তা চুরি করে শোনার চেষ্টা করে এবং তার কিছু শোনেও ফেলে। এরপর তারা তা গণকের কাছে পৌঁছিয়ে দেয় এবং তারা তার সেই শোনা কথার সাথে নিজেদের পক্ষ থেকে শত মিথ্যা মিলিয়ে (মানুষের কাছে) বলে থাকে।
হাদীস নং ২৯৮৪
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জুমুআর দিন হয় তখন মসজিদের প্রতিটি দরজায় ফেরেশতা এসে দাঁড়িয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি প্রথম মসজিদে প্রবেশ করে, তার নাম লিখে নেয়। তারপর পরবর্তীদের পর্যায়ক্রমে নাম। ইমাম যখন (মিম্বারে) বসে পড়েন তখন তারা এসব লিখিত পুস্তিকা বন্ধ করে দেন এবং তাঁরা মসজিদে এসে যিকর (খুতবা) শুনতে থাকেন।
হাদীস নং ২৯৮৫
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা উমর রা. মসজিদে নববীতে আগমন করেন, তখন হাসসান ইবনে সাবিত রা. কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। (উমর রা. তাকে বাঁধা দিলেন) তখন তিনি বললেন, এখানে আপনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তি (রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপস্থিতিতেও আমি কবিতা আবৃত্তি করতাম। তারপর তিনি আবু হুরায়রা রা.-এর দিকে তাকালেন এবং বললেন, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি; আপনি কি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, তুমি আমার পক্ষ থেকে জবাব দাও। হে আল্লাহ ! আপনি তাকে রুহুল কুদুস (জিবরাঈল আ.) দ্বারা সাহায্য করুন। তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ।
হাদীস নং ২৯৮৬
হাফস ইবনে উমর রহ…………বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসসান রা.-কে বলেছেন, তুমি তাদের (কাফিরদের) কুৎসা বর্ণনা কর অথবা তাদের কুৎসার উত্তর দাও। তোমরা সাথে (সাহায্যার্থে) জিবরাঈল আ. আছেন।
হাদীস নং ২৯৮৭
ইসহাক রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যেন বানু গানমের গলিতে উর্ধ্বে উত্থিত ধূলা স্বয়ং দেখতে পাচ্ছি আর (রাবী) মূসা এতটুকু বাড়িয়ে বলেছেন, জিবরাঈলের বাহনের পদচালনা করান।
হাদীস নং ২৯৮৮
ফারওয়াহ রহ…………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, হারিস ইবনে হিশাম রা. রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার নিকট ওহী কিরূপে আসে? তিনি বললেন, এর সব ধরনের ওহী নিয়ে ফেরেশতা আসেন। কোন কোন সময় ঘন্টার আওয়াজের ন্যায় শব্দ করে (আসে) যখন ওহী আমার নিকট আসা শেষ হয়ে যায়, তখন তিনি যা বলেছেন আমি তা মুখস্থ করে ফেলি। আর এরূপ শব্দ করে ওহী আসাটা আমার নিকট কঠিন মনে হয়। আর কখনও কখনও ফেরেশতা আমার কাছে মানুষের আকৃতিতে আসেন এবং আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই।
হাদীস নং ২৯৮৯
আদম রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু জোড়ায় জোড়ায় দান করবে, তাকে জান্নাতের তত্ত্বাবধায়কগণ ডাকতে থাকবে, হে অমুক ব্যক্তি! এ দিকে আস। তখন আবু বকর রা. বললেন, এমন ব্যক্তি সে তো এমন ব্যক্তি যার কোন ধ্বংস নেই। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি আশা করি, তুমি তাদের একজন হবে।