হাদীস নং ২৯৬৫
উমর ইবনে হাফস ইবনে গিয়াস রহ……….ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার উটনীটি দরজার সাথে বেঁধে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমত উপস্থিত হলাম। তখন তাঁর কাছে তারা বলল, আপনি তো আমাদের সুসংবাদ দিয়েছেন, এবার আমাদের কিছু দান করুন। একথা দু’বার বলল। এরপর তাঁর কাছে ইয়ামানের কিছু লোক আসল। তিনি তাদের বললেন, ইয়া ইয়ামানবাসী ! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কারণ বানু তামীমগণ তা গ্রহণ করে নাই। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তা গ্রহণ করলাম। তারা আরো বলল, আমরা দীন সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করার জন্য আপনার খেদমতে এসেছিলাম। তখন তিনি বললেন, একমাত্র আল্লাহই ছিলেন, আর তিনি ব্যতীত আর কোন কিছুই ছিলনা। তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে। এরপর তিনি লাওহে মাহফুজে সবকিছু লিপিবদ্ধ করলেন এবং আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। এ সময় জনৈক ঘোষণাকারী ঘোষণা করল, হে ইবনে হুসাইন! আপনার উটনী পালিয়ে গেছে। তখন আমি এর তালাশে চলে গেলাম। দেখলাম তা এত দূরে চলে গেছে যে, তার এবং আমার মধ্যে মরীচিকাময় ময়দান ব্যবধান হয়ে পড়েছে। আল্লাহর কসম! আমি তখন উটনীটিকে একেবারে ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা করলাম। ঈসা রহ………..তারিক ইবনে শিহাব রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উমর রা. -কে বলতে শুনেছি, একদা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে দাঁড়ালেন। এরপর তিনি আমাদের সৃষ্টির সূচনা সম্পর্কে অবহিত করলেন। অবশেষে তিনি জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসী তাদের নিজ নিজ নির্ধারিত স্থানে প্রবেশ করার কথাও উল্লেখ করলেন। যে ব্যক্তি এ কথাটি স্মরণ রাখতে পেরেছে, সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে।
হাদীস নং ২৯৬৬
আবদুল্লাহ ইবনে আবু শাইবা রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন, আদম সন্তান আমাকে গালমন্দ করে অথচ আমাকে গালমন্দ করা তার উচিত নয়। আর সে আমাকে অস্বীকার করে অথচ তার তা উচিত নয়। আমাকে গালমন্দ করা হচ্ছে, তার এ উক্তি যে, আমার সন্তান আছে। আর তা অস্বীকার করা হচ্ছে, তার এ উক্তি, যেভাবে আল্লাহ আমাকে প্রথমে সৃষ্টি করেছেন, সেভাবে কখনও তিনি আমাকে পুন: সৃষ্টি করবেন না।
হাদীস নং ২৯৬৭
কুতাইবা রহ………..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ যখন সৃষ্টি কার্য সমাধা করলেন, তখন তিনি তাঁর কিতাব লাওহে মাহফুজে লিখেন, যা আরশের উপর তাঁর কাছে বিদ্যমান। নিশ্চয়ই আমার করুণা আমার ক্রোধের চেয়ে প্রবল।
হাদীস নং ২৯৬৮
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ…………আবু সালামা ইবনে আবদুর রাহমান রা. থেকে বর্ণিত , (তিনি বলেন) কয়েকজন লোকের সাথে একটি জমি নিয়ে তাঁর বিবাদ ছিল। আয়িশা রা.-এর কাছে এসে তা ব্যক্ত করল। তিনি বললেন, হে আবু সালমা! জমা-জমির ঝামেলা থেকে দূরে থাক। কেননা, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ অন্যের জমি জুলুম করে আত্মসাৎ করেছে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের হার তার গলায় পরানো হবে।
হাদীস নং ২৯৬৯
বিশর ইবনে মুহাম্মদ রহ……….সালিম রা.-এর পিতা (ইবনে উমর রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো জমির সামান্যতম অংশও আত্মসাৎ করে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের নীচে তাকে ধ্বসে দেওয়া হবে।
হাদীস নং ২৯৭০
মুহাম্মদ ইবনে মুসান্না রহ……….আবু বাকরা রা. থেকে বর্ণিত, তিন বলেন, আল্লাহ যে দিন আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, সে দিন থেকে সময় যেরূপে আবর্তিত হচ্ছিল আজও তা সেরূপে আবর্তিত হচ্ছে। বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত । যুল-কাদাহ, যুল-হিজ্জাহ ও মুহাররাম। তিনটি মাস পরপর রয়েছে। আর এক মাস হল রজব ই-মুযার যা জুমাদা ও শাবান মাসের মধ্যে অবস্থিত।
হাদীস নং ২৯৭১
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ………..সাঈদ ইবনে যায়েদ ইবনে আমর ইবনে নুফাইল রা. থেকে বর্ণিত, ‘আরওয়া’ নামক জনৈক মহিলা এক সাহাবীর বিরুদ্ধে মারওয়ানের নিকট (জমি সংক্রান্ত বিষয়ে) তার ঐ পাওনা সম্পর্কে মামলা দায়ের করল, যা তার (মহিলাটির) ধারণায় তিনি (সাঈদ) নষ্ট করেছেন। ব্যপার শুনে সাঈদ রা. বললেন, আমি কি তার (মহিলাটির) সামান্য হকও নষ্ট করতে পারি? আমি তো সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুলুম করে অন্যের এক বিঘত যমীনও আত্মসাৎ করে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের শৃংখল তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। ইবনে আবুয যিনাদ রহ. হিশাম রহ. থেকে তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, তিনি (হিশামের পিতা উরওয়া) রা. বলেন, সাঈদ ইবনে যায়েদ রা. আমাকে বলেছেন, আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হলাম (তখন তিনি এ হাদীস বর্ণনা করেন)।
হাদীস নং ২৯৭২
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ………..আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আবু যার রা.-কে বললেন, তুমি কি জান, সূর্য কোথায়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তা যেতে যেতে আরশের নীচে গিয়ে সিজদায় পড়ে যায়। এরপর সে পুন: উদিত হওয়ার অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেয়া হয়। আর অচিরেই এমন সময় আসবে যে, সিজদা করবে কিন্তু তা কবুল হবে না এবং সে অনুমতি চাইবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না। তাকে বলা হবে, যে পথে এসেছ সে পথে ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক হতে উদিত হবে। এটাই মর্ম হল মহান আল্লাহর বাণী: আর সূর্য গমন করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে, এটাই পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ।(৩৬:৩৮)