হাদীস নং ২৯২৮
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ…………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে রাস্তায় চলছিলাম। তখন তিনি মোটা পাড়ের নাজরানে প্রস্তুত চাদর পরিহিত ছিলেন। এক বেদুঈন তাকে পেয়ে খুব জোরে টেনে ধরল। অবশেষে আমি লক্ষ্য করলাম, তার জোরে টানার কারণে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। তারপর বেদুঈন বলল, আল্লাহর যে সম্পদ আপনার কাছে রয়েছে তা থেকে আমাকে কিছু দেওয়ার নির্দেশ দিন। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রতি তাকিয়ে একটি মুচকি হাসি দিলেন, আর তাকে কিছু দেওয়ার নির্দেশ দিলেন।
হাদীস নং ২৯২৯
উসমান ইবনে আবু শাইবা রহ……….আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনাইনের দিনে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন লোককে বণ্টনে অন্যদের উপর প্রাধান্য দেন। তিনি আকরা ইবনে হাবিছকে একশ উট দিলেন। উয়াইনাকেও এ পরিমাণ দেন। সম্ভ্রান্ত আরব ব্যক্তিদের দিলেন এবং বণ্টনে তাদের অতিরিক্ত দিলেন। এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! এখানে সুবিচার করা হয়নি। অতবা সে বলল, এতে আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়নি। (রাবী বলেন) তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবশ্যই জানিয়ে দিব। তখন আমি তাঁর কাছে এলাম এবং তাকে একথা জানিয়ে দিলাম। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ সুবিচার না করেন, তবে কে সুবিচার করবে? আল্লাহ তা’আলা মূসা আ.-এর প্রতি রহমত করুন, তাকে এর চাইতেও অধিক কষ্ট দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি সবর করেছেন।
হাদীস নং ২৯৩০
মাহমুদ ইবনে গায়লান রহ……….আসমা বিনতে আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নিজ মাথায় করে সে জমীন থেকে খেজুর দানা বহন করে আনতাম, যা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবাইর রা.-কে দান করেছিলেন। যে জমীনটি আমার ঘর থেকে এক ফারসাখের দু’তৃতীয়াংশ ব্যবধানে অবস্থিত ছিল। আর আবু যামরাহ রহ……….হিশামের পিতা উরওয়া রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবাইর রা.-কে বানূ নাযীর গোত্রের সম্পত্তি থেকে একখণ্ড জমি দিয়েছিলেন।
হাদীস নং ২৯৩১
আহমদ ইবনে মিকদাম রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনে খাত্তাব রা. ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদেরকে হিজায ভূখণ্ড থেকে নির্বাসিত করেন। আর রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খায়বার জয় করেন, তখন তিনিও ইয়াহুদীদের সেখান থেকে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। আর সে জমীন বিজিত হওয়ার পর তা আল্লাহ, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমগণের অধিকারে এসে গিয়েছিল। তখন ইয়াহুদীরা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আবেদন করল, যেন তিনি তাদের এখানে এ শর্তে থাকার অনুমতি দেন যে, তারা কৃষি কাজ করবে এবং তাদের জন্য অর্ধেক ফসল থাকবে। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, যতদিন আমরা চাই তোমাদের এ শর্তে থাকার অনুমতি দিচ্ছি। তারা এভাবে রয়ে গেল। অবশেষে উমর রা. তাঁর শাসনামলে তাদের তায়মা আরীহা নামক স্থানের দিকে নির্বাসিত করেন।
হাদীস নং ২৯৩২
আবুল ওয়ালীদ রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খায়বারের দুর্গ অবরোধ করেছিলাম। কোন এক ব্যক্তি একটি থলে দিল; তাঁতে ছিল চর্বি। আমি তা নেয়ার জন্য উদ্যত হলাম। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে আছেন। তখন আমি তা নেয়ার ব্যাপারে লজ্জিত হয়ে পড়লাম।
হাদীস নং ২৯৩৩
মুসাদ্দাদ রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধকালে মধু ও আঙ্গুর পেতাম। আমরা তা খেয়ে নিতাম এবং জমা রাখতাম না।
হাদীস নং ২৯৩৪
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……….(আদুল্লাহ) ইবনে আবু আওফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খায়বারের যুদ্ধের সময় আমরা ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছিলাম। খায়বার বিজয়ের দিন আমরা পালিত গাধার দিকে এগিয়ে গেলাম এবং তা যবেহ করলাম। যখন তা হাঁড়িতে বলক আসছিল তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ঘোষণা দানকারী ঘোষণা দিল : তোমরা হাঁড়িগুলো উপুর করে ফেল। গাধার গোশত থেকে তোমরা কিছুই খাবে না। আবদুল্লাহ (ইবনে আবু আওফা) রা. বলেন, আমরা (কেউ কেউ) বললাম, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এজন্য নিষেধ করেছেন, যেহেতু তা থেকে খুমুস বের করা হয়নি। (রাবী বলেন) আর অন্যরা বললেন, বরং তিনি এটাকে নিশ্চিতভাবে হারাম করেছেন। (শাইবানী বলেন) আমি এ ব্যাপারে সাঈদ ইবনে যুবাইর রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, নিশ্চিতভাবে তিনি তা হারাম করেছেন।
হাদীস নং ২৯৩৫ থেকে হাদীস নং ২৯৬৩ Missing
সৃষ্টির সূচনা অধ্যায় (২৯৬৪-৩০৯০)
হাদীস নং ২৯৬৪
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ………ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বানু তামীমের একদল লোক রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে এল, তখন তিনি তাদের বললেন, হে তামীম সম্প্রদায়! সুসংবাদ গ্রহণ কর। তখন তারা বলল, আপনি তো সুসংবাদ জানিয়েছেন, এবার আমাদের দান করুন। এতে তাঁর মুখমণ্ডল বিবর্ণ হয়ে গেল। এ সময় তাঁর কাছে ইয়ামানের লোকজন আসল। তখন তিনি বললেন, হে ইয়ামানবাসী! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেনা তামীম সম্প্রদায়ের লোকেরা তা গ্রহণ করেনি। তারা বলল, আমরা গ্রহণ করলাম। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৃষ্টির সূচনা এবং আরশ সম্পর্কে বর্ণনা করেন। এর মধ্যে একজন লোক এসে বলল, হে ইমরান! তোমার উটনীটি পালিয়ে গেছে। হায়! আমি যদি উঠে না চলে যেতাম।