হাদীস নং ২৯১৫
মুহাম্মদ ইবনে আলা রহ……….আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা ইয়ামানে থাকতেই আমাদের নিকট রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিজরত করার সংবাদ পৌঁছে। তখন আমরাও তাঁর নিকট হিজরত করার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। আমি এবং আমার আরো দুই ভাই এর মধ্যে ছিলাম। আমি ছিলাম সর্বকনিষ্ঠ। তাদের একজন হলেন আবু বুরদাহ, অপরজন আবু রুহম। রাবী হয়ত বলেছেন, আমার গোত্রের আরোও কতিপয় লোকের মধ্যে; কিংবা বলেছেন, আমার গোত্রের তিপ্পান্ন বা বায়ান্ন জন লোকের মধ্যে। তারপর আমরা একটি নৌযানে আরোহণ করলাম। ঘটনাক্রমের আমাদেরকে নৌযানটি হাবশার নাজ্জাশী বাদশাহর দিকে নিয়ে যায়। সেখানে আমরা জাফর ইবেন আবু তালিব রা. ও তাঁর সঙ্গীদের সাথে মিলিত হই। জাফর রা. বললেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন এবং এখানে অবস্থান করার নির্দেশে দিয়েছেন। তাই আপনারাও আমাদের সঙ্গে এখানে অবস্থান করুন। তখন আমরা তাঁর সঙ্গে থেকে গেলাম। অবশেষে আমরা সকলে একত্রে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম। এমন সময় আমরা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জন্য অংশ নির্ধারণ করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন) কিংবা তিনি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরও তা থেকে দিয়েছেন। আমাদের ব্যতীত খায়বার বিজয়ে অনুপস্থিত কাউকেই তা থেকে অংশ দেননি, জাফর রা. ও তাঁর সঙ্গীগণের সাথে আমাদের এ নৌযানে আরোহীদের মধ্যে বণ্টন করেছেন।
হাদীস নং ২৯১৬
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………..জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আমার নিকট বাহরাইনের মাল আসে, তবে আমি তোমাকে (দুই হাত মিলিয়ে) এ পরিমাণ ও এ পরিমাণ দান করব। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকাল অবধি তা এলো না। তারপর যখন বাহরাইনের মাল এল, তখন আবু বকর রা. ঘোষণা দানকারীকে এ ঘোষণা দেয়ার আদেশ করলেন যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যার কোন ঋণ বা প্রতিশ্রুতি রয়েছে, সে যেন আমার নিকট আসে। এরপর আমি তাঁর নিকট গিয়ে বললাম, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এত এত ও এত দেয়ার কথা বলেছেন। তখন আবু বকর রা. তিনবার অঞ্জলী ভরে দান করেন। সুফিয়ান রা. তাঁর দুই হাত একত্র করে অঞ্জলী করে আমাদের বললেন, ইবনে মুনকাদির এরূপই বলেছেন। জাবির রা. বলেন, তারপর আমি আবু বকর রা.-এর নিকট এলাম এবং তাঁর কাছে চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন না। আবার আমি তাঁর কাছে এলাম। তখনও তিনি আমাকে দিলেন না। আবার আমি তাঁর কাছে তৃতীয়বার এসে বললাম, আমি আমি আপনার নিকট চেয়েছি, আপনি আমাকে দেননি। আবার আমি তাঁর কাছে চেয়েছি, তখনও আপনি আমাকে দেননি। পুনরায় আমি আপনার নিকট চেয়েছি, আপনি আমাকে দেননি। এখন আমাকে আপনি দেবেন, না হয় আমার সঙ্গে কার্পণ্য করবেন। আবু বকর রা. বললেন, তুমি আমাকে বলছ, কার্পণ্য করবেন? আমি যতবারই তোমাকে দিতে অস্বীকার করি না কেন, আমার ইচ্ছা যে, আমি তোমাকে দেই। সুফিয়ান রহ. বলেন, আমর রহ. মুহাম্মদ ইবনে আলী রহ. সুত্রে জাবির রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, (তিনি বলেন) আবু বকর রা. আমকে এক অঞ্জলী দিয়ে বললেন, এটা গুণে নাও। আমি গণনা করে দেখলাম, পাঁচশত। তখন তিনি বললেন, এরূপ আরও দুবার নিয়ে নাও। আর ইবনুল মুনকাদিরের বর্ণনায় আছে যে, (আবু বকর রা.) কার্পণ্য অপেক্ষা বড় রোগ কী হতে পারে?
হাদীস নং ২৯১৭
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিয়রানা নামক স্থানে গনীমতের মাল বণ্টন করছিলেন, তখন এক ব্যক্তি বলল, (বণ্টন) ইনসাফ করুন। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি যদি ইনসাফ না করি, তবে তুমি হবে হতভাগ্য।
হাদীস নং ২৯১৮
ইসহাক ইবনে মানসুর রহ………..যুবাইর ইবনে মুতয়িম রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরের যুদ্ধ বন্দীদের প্রসঙ্গে বলেন, যদি মুতয়িম ইবনে আদী রা. জীবিত থাকতেন আর নিকট এ সকল নোংরা লোকের ব্যাপারে সুপারিশ করতেন, তবে আমি তাঁর খাতিরে এদের ছেড়ে দিতাম।
হাদীস নং ২৯১৯
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….যুবাইর ইবনে মুতয়িম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং উসমান ইবনে আফফান রা. রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বানু মুত্তালিবকে দিয়েছেন, আমাদের বাদ দিয়েছেন। অথচ আমরা এবং তারা আপনার সাথে একই পর্যায়ে সম্পর্কিত। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বানু মুত্তালিব ও বানু হাশিম একই পর্যায়ের। লায়স রহ. বলেন, ইউনুস রহ. আমাকে এ হাদীসটিতে অতিরিক্ত বলেছেন যে, যুবাইর রা. বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানু আবদ শামস ও বানু নাওফলকে অংশ দেননি। ইবনে ইসহাক রহ. বলেন, আবদ শামস, হাশিম ও মুত্তালিব একই মায়ের গর্ভজাত সহোদর ভাই। তাদের মা আতিকা বিনতে মুররা আর নাওফল তাদের বৈমাত্রেয় ভাই ছিলেন।