হাদীস নং ২৯১০
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উসমান রা. বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। কেননা, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ছিলেন তাঁর সহধর্মিণী আর তিনি ছিলেন পীড়িত। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব ও (গনীমতের) অংশ তুমি পাবে।
হাদীস নং ২৯১১
সাঈদ উফাইর রহ…………..উরওয়া রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাকে মারওয়ান ইবনে হাকাম ও মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রা. বর্ণনা করেছেন যে, যখন হাওয়াযিন গোত্রের প্রতিনিধি দল মুসলমান হয়ে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল যে, তাদের মাল ও বন্দী উভয়ই ফেরত দেওয়া হোক। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন, আমার নিটক সত্য কথা অধিক প্রিয়। তোমরা দুয়ের মধ্যে যে কোন একটি গ্রহণ কর। হয় বন্দী, নয় মাল। আর আমি তো তাদের (হাওয়াযিন গোত্রের) প্রতীক্ষা করেছিলাম আর তায়েফ থেকে ফেরার সময় রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ দিন থেকে বেশী সময় তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। অবশেষে যখন তাদের কাছে স্পষ্ট হল যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দুটোর মধ্যে যে কোন একটিই ফেরত দিবেন, তখন তারা বলল, আমরা আমাদের বন্দীদের ফেরত লাভই পছন্দ করি। তারপর রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের সামনে দাঁড়ালেন। প্রথমে তিনি আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, তোমাদের এ সকল ভাই তাওবা করে আমার নিকট এসেছে। আর আমি সমীচীন মনে করছি যে, তাদের বন্দীদের ফেরত দিব। যে ব্যক্তি সন্তুষ্টচিত্তে তা করতে চায়, সে যেন তা করে আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি চায় যে, তার অংশ বহাল থাকুক সে যেন অপেক্ষা করে (কিংবা) আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে প্রথম যে গনীমতের মাল দান করবেন, আমি তাকে তা দিয়ে দিব, তাও করতে পারে। সমবেত লোকেরা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা সন্তুষ্টচিত্তে সেটি গ্রহণ করলাম। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সঠিক জানতে পারিনি, তোমাদের মধ্যে কে এতে সম্মতি দিয়েছে, আর কে দেয়নি। কাজেই তোমরা ফিরে যাও এবং নিজ নিজ প্রতিনিধির মাধ্যমে আমাকে তোমাদের সিদ্ধান্ত জানাও। লোকেরা চলে গেল। আর তাদের প্রতিনিধিরা নিজেদের লোকের সঙ্গে আলোচনা করে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ফেরত এল এবং তাকে জানাল যে, তারা সন্তুষ্টচিত্তে (বন্দী ফেরত দানের ব্যাপারে) সম্মতি দিয়েছে। (ইবনে শিহাব বলেন) হাওয়াযিনের বন্দীগণ সম্পর্কিত বিবরণ আমাদের নিকট এরূপই পৌঁছেছে।
হাদীস নং ২৯১২
আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব রহ……….যাহদাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা রা.-এর কাছে ছিলাম, এ সময় মুরগীর (গোশত) সম্বন্ধে আলোচনা উঠল। তথায় তাইমুল্লাহ গোত্রের এমন লাল বর্ণের এক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিল, যেন সে মাওয়ালী (রোমক ক্রীতদাস)-দের একজন। তাকে খাওয়ার জন্য ডাকলেন। তখন সে বলে উঠল, আমি মুরগীকে এমন বস্তু খেতে দেখেছি যাতে আমার ঘৃণা জন্মেছে। তাই আমি শপথ করেছি যে, তা খাব না। আবু মূসা রা. বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে হাদীস শুনাচ্ছি। আমি কয়েকজন আশআরী ব্যক্তির পক্ষে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সাওয়ারী চাইতে যাই। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের সাওয়ারী দিব না এবং আমার কাছে তোমাদের দেয়ার মত কোন সাওয়ারীও নেই। এ সময় রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গনীমতের কয়েকটি উট আনা হল। তখন তিনি আমাদের খোঁজ নিলেন এবং বললেন, সেই আশআরী লোকেরা কোথায়? তারপর রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঁচু সাদা চুলওয়ালা পাঁচটি উট আমাদের দিতে বললেন। যখন আমরা উট নিয়ে রওয়ানা হলাম বললাম, আমরা আপনার নিকট সাওয়ারীর জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন আপনি শপথ করে বলেছিলেন, আমাদের সাওয়ারী দিবেন না। আপনি কি তা ভুলে গিয়েছেন? রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের সাওয়ারী দেইনি বরং আল্লাহ তা’আলা তোমাদের সাওয়ারী দান করেছেন। আর আল্লাহর কসম, আমার অবস্থা এই যে, ইনশাআল্লাহ কোন বিষয়ে আমি কসম করি এবং তার বিপরীতটি মঙ্গলজনক মনে করি, তখন সেই মঙ্গলজনকটি আমি করি এবং কাফফারা দিয়ে কসম থেকে মুক্ত হই।
হাদীস নং ২৯১৩
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজদের দিকে একটি সেনাদল পাঠালেন, যাদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবন উমর রা.ও ছিলেন। এ যুদ্ধে গনীমত স্বরূপ তাঁরা বহুসংখ্যক উট লাভ করেন। তাদের প্রত্যেকের ভাগে এগারোটি কিংবা বারটি কের উট পড়েছিল এবং তাদেরকে পুরস্কারস্বরূপ আরো একটি করে উট দেয়া হয়।
হাদীস নং ২৯১৪
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক প্রেরিত কোন কোন সেনাদলে কোন কোন ব্যক্তিকে সাধারণ সেনাদের প্রাপ্য অংশের অতিরিক্ত দান করতেন।