হাদীস নং ২৮৭৬
আবু নুমান রহ………..ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লহ! আমরা রাবীআ গোত্রের একটি উপদল। আপনার ও আমাদের মাঝে মুযার (কাফির) গোত্রের বসবাস। তাই আমরা আপনার নিকট নিষিদ্ধ মাসসমূহ ব্যতীত অন্য সময় আসাতে পারি না। কাজেই আপনি আমাদের এমন কাজের আদেশ করুন, যার উপর আমরা আমল করব এবং আমাদের পশ্চাতে যারা রয়ে গেছে, তাদেরকেও তা আমল করতে আহবান জানাব। তিনি (রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি কাজের আদেশ করছি এবং চারটি কাজ থেকে নিষেধ করছি। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের আঙ্গুলীতে তা গণনা করে বলেন, আল্লাহ তা’আলার প্রতি ঈমান আন। আর তা হচ্ছে এ সাক্ষ্য দান করা যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই আর সালাত প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত দান করা, রমযান মাসে সিয়াম পালন করা এবং আল্লাহর জন্য গনীমত লব্ধ সম্পদের এক পঞ্চমাংশ আদায় করা। আর আমি তোমাদের শুস্ক লাউয়ের খোলে তৈরী পাত্র, খেজুর গাছের মূল দ্বারা তৈরী পাত্র, সবুজ মটকা, আলকাতরা প্রলিপ্ত মটকা ব্যবহার করতে নিষেধ করছি।
হাদীস নং ২৮৭৭
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আমার ওফাতের পর) আমার উত্তরাধিকারীগণ একটি দীনারও ভাগ বণ্টন করে নিবে না। আমি যা রেখে যাব, তা থেকে আমার সহধর্মিণীগণের ব্যয়ভার ও আমার কর্মচারীদের ব্যয় নির্বাহের পর অবশিষ্ট যা থাকবে, তা সাদকারূপে গণ্য হবে।
হাদীস নং ২৮৭৮
আবদুল্লাহ ইবনে আবু শায়বা রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাত হল, তখন আমার ঘরে এমন কোন বস্তু ছিলনা, যা খেয়ে কোন প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে। শুধুমাত্র তাকের উপর আধা ওয়াসাক আটা পড়ে রয়েছিল। আমি তা থেকে খেতে থাকলাম এবং বেশ কিছুদিন কেটে গেল। এরপর আমি তা মেপে দেখালাম, ফলে তা নিঃশেষ হয়ে গেল।
হাদীস নং ২৮৭৯
মুসাদ্দাদ রহ………আমর ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর যুদ্ধাস্ত্র, সাদা খচ্চর ও কিছু যমীন ব্যতীত কিছুই রেখে যান নি এবং তাও তিনি সাদকারূপে রেখে গেছেন।
হাদীস নং ২৮৮০
হিব্বান ইবনে মূসা ও মুহাম্মদ রহ……….উবাইদুল্লাহ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়িশা রা. বলেছেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রেগ যখন অত্যাধিক বেড়ে গেল তখন তিনি আমার ঘরে অবস্থান করে রোগের পরিচর্যা বিষয়ে তাঁর অপর সহধর্মিণীগণের নিকট অনুমতি চান। তাঁরা তাকে অনুমতি প্রদান করেন।
হাদীস নং ২৮৮১
ইবনে আবু মারইয়াম রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার ঘরে আমার পালার দিন আমার কণ্ঠ ও বুকের মধ্য বরাবর মাথা রাখা অবস্থায় রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাত হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা (মৃত্যুকালেও) তাঁর ও আমার মুখের লালাকে একত্রিত করেছেন। তিনি বলেন, আবদুর রাহমান রা. একটি মিসওয়াক নিয়ে প্রবেশ করে। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা চিবুতে অপরাগ হন। তখন আমি সে মিসওয়াকটি নিয়ে নিজে চিবিয়ে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাঁত মেজে দেই।
হাদীস নং ২৮৮২
সাঈদ ইবনে উফাইর রহ……..আলী ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী সাফিয়্যা রা. তাকে জানিয়েছেন যে, তিনি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য আসেন। তখন তিনি রমযানের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ রত ছিলেন। এরপর যখন তিনি ফিরে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ান, তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অপর সহধর্মিণী উম্মে সালামা রা.-এর দরজার নিকটবর্তী মসজিদের দরজার নিকট পৌঁছলেন তখন দুজন আনসার তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, একটু থাম, (এ মহিলা আমার স্ত্রী) তারা বলল, সুবহানাল্লাহ! ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এরূপ বলাটা তাদের নিকট কষ্টদায়ক মনে হল। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শয়তান মানুষের রক্ত কণিকার ন্যায় সর্বত্র বিচরণ করে। আমার আশংকা হয়েছিল, না জানি সে তোমাদের মনে কোন সন্দেহের উদ্রেক করে দেয়।
হাদীস নং ২৮৮৩
ইবরাহীম ইবনে মুনযির রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি (আমার বোন) হাফসা রা.-এর ঘরের উপর (ছাদে) আরোহণ করি। তখন আমি দেখতে পেলাম, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলাকে পিছনে রেখে শাম মুখী হয়ে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে নিচ্ছেন।
হাদীস নং ২৮৮৪