হাদীস নং ২৮৪৩
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ……..হুযাইফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের মধ্যে যারা ইসলামের কালেমা উচ্চারণ করেছে, তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে আমাকে দাও। হুযাইফা রা. বলেন, তখন আমরা একহাজার পাঁচশ লোকের নাম তালিকাভুক্ত করে তাঁর নিকট পেশ করি। তখন আমরা বলতে লাগলাম, আমরা একহাজার পাঁচশত লোক, এক্ষণে আমাদের ভয় কিসের? (রাবী) হুযাইফা রা. বলেন, পরবর্তীকালে আমরা দেখেছি যে, আমরা এমনভাবে ফিতনায় পতিত হয়েছি যাতে লোকেরা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় একা একা সালাত আদায় করছে।
হাদীস নং ২৮৪৪
আবদান রহ………আমাশ রহ. থেকে এ বর্ণনা করেছেন, তাঁতে উল্লেখ হয়েছে, আমরা তাদের পাঁচশ পেয়েছি। আবু মুয়াবিয়ার বর্ণনায় উল্লেখিত হয়েছে ছয়শ ছয়শ হতে সাতশ এর মাঝামাঝি।
হাদীস নং ২৮৪৫
আবু নুআইম রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে আর আমার স্ত্রী হজ্জ আদায়ের সংকল্প করেছে। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ফিরে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ্জ করে নাও।
হাদীস নং ২৮৪৬
আবুল ইয়ামান ও মাহমুদ রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এক যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবীদার এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেন, এ ব্যক্তি জাহান্নামী অথচ যখন যুদ্ধ শুরু হল, তখন সে লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল এবং আহত হল। তখন বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যে লোকটি সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন, সে লোকটি জাহান্নামী। আজ সে ভীষণ যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে জাহান্নামে গেছে। রাবী বলেন, এ কথার উপর কারো কারো অন্তরে এ বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির উপক্রম হয় এবং তাঁরা এ সম্পর্কিত কথাবার্তায় রয়েছেন, এ সময় সংবাদ এল যে, লোকটি মরে যায়নি বরং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যখন রাত্রি হল, সে আঘাতের কষ্টে ধৈর্যধারণ করতে পারল না এবং আত্মহত্যা করল। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছানো হল, তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহু আকবার! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি অবশ্যই আল্লাহর তা’আলার বান্দা এবং তাঁর রাসূল। এরপর রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল রা.-কে আদেশ করলেন, তখন তিনি লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, মুসলমান ব্যতীত কেউ বেহেশতে প্রবেশ করবে না। আর আল্লাহ তা’আলা (কখনো কখনো) এই দীনকে মন্দ লোকের দ্বারা সাহায্য করেন।
হাদীস নং ২৮৪৭
ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিতে গিয়ে বললেন, (মোতার যুদ্ধে) যায়েদ (ইবনে সাবিত রা.) পতাকা ধারণ করেছেন এবং শাহাদাত বরণ করেছেন, এরপর জাফর (ইবনে আবু তালিব রা.) পতাকা ধারণ করেছেন এবং শাহাদাত বরণ করেছেন। তারপর আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা. পতাকা ধারণ করেছেন এবং শাহাদাত বরণ করেছেন। এরপর খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রা. মনোনয়ন ছাড়াই পতাকা ধারণ করেছেন , আল্লাহ তা’আলা তাঁর মাধ্যমে বিজয় দান করেছেন আর বললেন, এ আমার নিকট পছন্দনীয় নয় অথবা রাবী বলেন, তাদের কাছে পছন্দনীয় নয় যে, তারা দুনিয়ায় আমার নিকট অবস্থান করত। রাবী বলেন, (রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন) আর তাঁর চক্ষু যুগল হতে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল।
হাদীস নং ২৮৪৮
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট রিল, যাকওয়ান, উসাইয়া ও বানু লাহইয়ান গোত্রের কিছু লোক এসে বলল, আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি। এবং তারা তাঁর নিকট তাদের সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় সাহায্য প্রার্থনা করল। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্তর জন আনসার পাঠিয়ে তাদের সাহায্য করলেন। আনাস রা. বলেন, আমরা তাদের ক্বারী নামে আখ্যায়িত করতাম। তাঁরা দিনের বেলায় লাকড়ী সংগ্রহ করতেন, আর রাত্রিকালে সালাতে মগ্ন থাকতেন। তারা তাদের নিযে রওয়ানা হয়ে গেল। যখন তাঁরা বীরে মাউনা নামক স্থানে পৌঁছল, তখন তারা বিশ্বাসঘাতকতা করল এবং তাদের হত্যা করে ফেলল। এ সংবাদ শোনার পর রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিল, যাকওয়ান ও বানু লাহইয়ান গোত্রের বিরুদ্ধে দু’আ করে একমাস যাবত কুনূতে নাযিলা পাঠ করেন। কাতাদা রহ. বলেন, আনাস রা. আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা তাদের সম্পর্কে কিছুকাল যাবৎ কুরআনের এ আয়াতটি পড়তে থাকেন: “আমাদের সংবাদ আমাদের কাওমের নিকট পৌঁছিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের প্রতিপালকের সাক্ষাত পেয়েছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তিনি আমাদের সন্তুষ্ট করেছেন”। এরপর এ আয়াত পাঠ করা বন্ধ করে দেওয়া হয় অর্থাৎ মানসূখ হয়ে যায়।
হাদীস নং ২৮৪৯
মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম রহ……….আবু তালহা রা. সূত্রে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সম্প্রদায়ের উপর বিজয় লাভ করতেন, তখন তিনি তাদের বহিরাঙ্গনে তিন রাত অবস্থান করতেন। মুআয ও আবদুল আ’লা আবু তালহা রা. সূত্রে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনায় রাওহা ইবনে উবাদা রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।