হাদীস নং ২৮৩২
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ………আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা বন্দীকে মুক্ত কর, ক্ষুধার্তকে আহার দান কর এবং রোগীর সেবা-শুশ্রূষা কর।
হাদীস নং ২৮৩৩
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ………..আবু জুহাইফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আলী রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কুরআনে যা কিছু আছে তা ছাড়া আপনাদের নিকট ওহীর কোন কিছু আছে কি? তিনি বললেন, না, সে আল্লাহ তা’আলার কসম! যিনি শস্যদানাকে বিদীর্ণ করেন এবং প্রাণী সৃষ্টি করেন। আল্লাহর কুরআন সম্পর্কে মানুষকে যে জ্ঞান দান করেছেন এবং সহীফার মধ্যে যা রয়েছে, এ ছাড়া আমি আর কিছু জানি না। আমি বললাম, এ সহীফাটিতে কি আছে? তিনি বললেন, দীয়াতের বিধান, বন্দী মুক্ত করণ এবং কোন মুসলিমকে যেন কোন কাফিরের পরিবর্তে হত্যা করা না হয় (এ সম্পর্কিত নির্দেশ)।
হাদীস নং ২৮৩৪
ইসমাঈল ইবনে আবু উয়াইস রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, আনসারীগণের কয়েকজন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চেয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি যদি আমাদের অনুমতি দান করেন, তবে আমরা আমাদের ভাগ্নে আব্বাসের মুক্তিপণ ছেড়ে দিতে পারি। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, একটি দিরহাও ছেড়ে দিবে না। ইবরাহীম রহ……..আনাস রা. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাহরাইন থেকে অর্থ-সম্পদ আনা হয়। তখন তাঁর নিকট আব্বাস রা. এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে কিছু দিন। আমি আমার নিজের মুক্তিপণ আদায় করেছি এবং আকীলেরও মুক্তিপণ আদায় করেছি। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিয়ে নিন এবং তাঁর কাপড়ে দিয়ে দিলেন।
হাদীস নং ২৮৩৫
মাহমুদ রহ……….জুবাইর (ইবনে মুতয়িম) রা. থেকে বর্ণিত, আর তিনি (কাফির থাকা অবস্থায়) বদর যুদ্ধে বন্দীদের মুক্ত করার জন্য (রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট) এসেছিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মাগরিবের সালাতে সূরায়ে তূর পড়তে শুনেছি।
হাদীস নং ২৮৩৬
আবু নুআঈম রহ……….সালামা ইবনে আকওয়া রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন এক সফরে মুশরিকদের একদল গুপ্তচর তাঁর নিকট এল এবং তাঁর সাহাবীগণের সঙ্গে বসে কথাবার্তা বলতে লাগল ও কিছুক্ষণ পরে চলে গেল। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে খুঁজে আন এবং হত্যা কর। রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মালপত্র হত্যাকারীকে দিয়ে দিলেন।
হাদীস নং ২৮৩৭
মূসা ইবনে ইসমাঈল রহ……..উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (আমার পর যিনি খলীফা হবেন) আমি তাকে এ অসীয়াত করছি যে, আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পক্ষ থেকে কাফিরদের সাথে কৃত অঙ্গীকার যেন যথাযথভাবে পূরণ করা হয়, তাদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে যুদ্ধ করা হয়, তাদের সামর্থ্যের বাইরে তাদের উপর যেন জিযিয়া (নিরাপত্তা কর) ধার্য করা না হয়।
হাদীস নং ২৮৩৮
কাবীসা রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি (কোন এক সময়) বললেন, বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! এরপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর অশ্রুতে (যমিনের) কংকর গুলো সিক্ত হয়ে গেল। আর তিনি বলতে লাগলেন? বৃহস্পতিবারে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রোগ যাতনা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার জন্য লিখার কোন জিনিস নিয়ে এসো, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখিয়ে দিব। যাতে এরপর তোমরা কখনও পথভ্রষ্ট না হও। এতে সাহাবীগণ পরস্পরে মতপার্থক্য করেন। অথচ নবীর সম্মুখে মতপার্থক্য সমীচীন নয়। তাদের কেউ কেউ বললেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া ত্যাগ করছেন? তিনি বললেন, আচ্ছা, আমাকে আমার অবস্থায় থাকতে দাও। তোমরা আমাকে যে অবস্থার দিকে আহবান করছ তার চেয়ে আমি যে অবস্থায় আছি তা উত্তম। অবশেষে তিনি ইন্তিকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। ১. মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত কর, ২. প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও অনুরূপ দিও (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, ইবনে মুহাম্মদ রহ. ও ইয়াকুব রহ. বলেন, আমি মগীরা ইবনে আবদুর রহমানকে জাযীরাতুল আরব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন, তা হল মক্কা, মদীনা ইয়ামামা ও ইয়ামান। ইয়াকুব রহ. বলেন, তিহমা আরম্ভ হল আরজ থেকে।
হাদীস নং ২৮৩৯
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ……..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর রা. একজোড়া রেশমী কাপড় বাজারে বিক্রি হতে দেখতে পেলেন। তিনি তা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট প্রতিনিধিদল আগমন উপলক্ষে এর দ্বারা আপনি সুসজ্জিত হবেন। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ লেবাস তো তার (আখিরাতে) যার কোন অংশ নেই। অথবা (বলেন, রাবীর সন্দেহ) এরূপ লেবাস সে-ই পরিধান করে (আখিরাতে) যার কোন অংশ নাই। এ অবস্থায় উমর রা. কিছুদিন অবস্থান করেন, যে পরিমাণ সময় আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছে ছিল। এরপর রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি রেশমী জুব্বা উমর রা.-এর নিকট পাঠিয়ে দেন। তিনি তা নিয়ে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এস আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! আপনি বলেছিলেন যে, এ তো তারই লেবাস (আখিরাতে) যার কোন অংশ নাই, কিংবা (রাবীর সন্দেহ) এ লেবাস তো সে-ই পরিধান করে, যার (আখিরাতে) কোন অংশ নাই। এরপরও আপনি তা আমার জন্য প্রেরণ করলেন। তখন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (এজন্য প্রেরণ করেছি যে,) তুমি তা বিক্রয় করে ফেলবে অথবা (রাবীর সন্দেহ) বলেছেন, (এজন্য প্রেরণ করেছি যে) তুমি তা তোমার কোন কাজে লাগবে।