হাদীস নং ২৮০২
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা সে সকল লোকের উপর সন্তুষ্ট হন, যারা শৃঙ্খলে আবদ্ধ অবস্থায় জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হাদীস নং ২৮০৩
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………..আবু মূসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন প্রকারের ব্যক্তিকে দ্বিগুণ সাওয়াব দান করা হবে। যে ব্যক্তির একটি বাঁদী আছে, সে তাকে শিক্ষা দান করে, শিষ্টাচার শিক্ষা এবং তাকে উত্তমরূপে শিষ্টাচার শিক্ষা দান করে। তারপর তাকে আযাদ করে দিয়ে তাকে বিয়ে করে। সে ব্যক্তির জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব রয়েছে। আর আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে মু’মিন ব্যক্তি যে তার নবীর প্রতি ঈমান এনেছিল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ঈমান এনেছে। তার জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব রয়েছে। যে গোলাম আল্লাহর হক যথাযথভাবে আদায় করে এবং স্বীয় মনীবের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, (তার জন্যও দ্বিগুণ সাওয়াব রয়েছে) শাবী রহ. এ হাদীসটি বর্ণনা করে সালেহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি তোমাকে এ হাদীসটি কোন বিনিময় ছাড়াই শুনিয়েছি। অথচ এর চেয়ে সহজ হাদীস শোনার জন্য লোকেরা মদীনা পর্যন্ত সফর করতেন।
হাদীস নং ২৮০৪
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………..সাব ইবনে জাসসামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবওয়া অথবা ওয়াদ্দান নামক স্থানে আমার কাছে দিয়ে পথ অতিক্রম করেন। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, যে মুশরিকদের সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছে, যদি রাত্রিকালীন আক্রমণে তাদের মহিলা ও শিশুগণ নিহত হয়, তবে কি হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারাও তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। আর আমি তাকে আরো বলতে শুনেছি যে, সংরক্ষিত চারণভূমি আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত আর কারো জন্য হতে পারে না।
হাদীস নং ২৮০৫
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ……….আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক যুদ্ধে জনৈক মহিলাকে নিহত পাওয়া যায়, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলা ও শিশুদের হত্যা করা সম্পর্কে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
হাদীস নং ২৮০৬
ইসহাক ইবনে ইবরাহীম রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন এক যুদ্ধে জনৈক মহিলাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলা ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করেন।
হাদীস নং ২৮০৭
কুতাইবা ইবনে সাঈদ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে কোন এক অভিযানে প্রেরণ করেন এবং বলেন, তোমরা যদি অমুক ও অমুক ব্যক্তিকে পাও, তবে তাদের উভয়কে আগুনে জ্বালিয়ে দিবে। তারপর আমরা যখন বের হতে চাইলাম, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কিন্তু আগুন দ্বারা শাস্তি দেওয়া আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কারও জন্য সমীচীন নয়। কাজেই তোমরা যদি তাদের উভয়কে পেয়ে যাও, তবে তাদেরকে হত্যা কর।
হাদীস নং ২৮০৮
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….ইকরামা রা. থেকে বর্ণিত, আলী রা. এক সম্প্রদায়কে আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। এ সংবাদ আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর নিকট পৌঁছলে তিনি বলেন, যদি আমি হতাম, তবে আমি তাদেরকে জ্বালিয়ে ফেলতাম না। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আল্লাহ নির্ধারিত শাস্তি দ্বারা কাউকে শাস্তি দিবে না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার দীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা করে ফেল।
হাদীস নং ২৮০৯
মুআল্লা ইবনে আসাদ রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, উকল নামক গোত্রের আট ব্যক্তির একটি দল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এল। মদীনার আবহাওয়া তারা উপযোগী মনে করেনি। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জন্য দুগ্ধবতী উটনীর ব্যবস্থা করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা বরং সাদকার উটের পালের কাছে যাও। তখন তারা সেখানে গিয়ে সেগুলোর পেশাব ও দুধ পান করে সুস্থ এবং মোটাতাজা হয়ে গেল। তারপর তারা উটের রাখালকে হত্যা করে উটের পাল হাঁকিয়ে নিয়ে গেল এবং মুসলামান হওয়ার পর তার মুরতাদ হয়ে গেল। তখন জনৈক সংবাদদাতা রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশ্বারোহীদের কে তাদের সন্ধানে পাঠালেন। তখন পর্যন্ত দিনের আলো পূর্ণতা লাভ করেনি। ইতোমধ্যেই তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের হাত পা কেটে ফেললেন। তারপর তাঁর নির্দেশে লৌহশলাকা উত্তপ্ত করে তাদের চোখে প্রবেশ করানো হয় এবং তাদেরকে প্রস্তরময় উত্তপ্ত ভূমিতে ফেলে রাখা হয়। তারা পানি চেয়েছিল। কিন্তু তাদেরকে পানি দেওয়া হয়নি। অবশেষে তারা মারা যায়। আবু কিলাব রা. বলেন, (তাদেরকে এরূপ শাস্তি এ জন্য দেয়া হয়েছে যে,) তারা হত্যা করেছে, চুরি করেছে, আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে (ধর্ম ত্যাগী হয়ে) যুদ্ধ করেছে এবং পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা ছড়াতে চেষ্টা করেছে।