হাদীস নং ২৫২৮
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার পিতার মৃত্যু হল, আর তার কিছু ঋণ ছিল। আমি তাঁর ঋণের বিনিময়ে পাওনাদারদের খেজুর নেওয়ার প্রস্তাব দিলাম। তাঁতে ঋণ পরিশোধ হবে না বলে তারা তা নিতে অস্বীকার করল। আমি তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে এ বিষয়ে তাঁর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, খেজুর পেড়ে মাচায় রেখে রাসূলুল্লাহকে খবর দিও। (যথা সময়ে) তিনি এলেন এবং তাঁর সঙ্গে আবু বকর ও উমর রা.-ও ছিলেন। তিনি খেজুর স্তুপের পার্শ্বে বসলেন এবং বরকতের দুআ করলেন। পরে বললেন, তোমার পাওনাদারদের ডাক এবং তাদের প্রাপ্য পরিশোধ করে দাও। তারপর আমার পিতার পাওনাদারদের কেউ এমন ছিল না যার ঋণ পরিশোধ করিনি। এরপরও (আমার কাছে) তের ওয়াসক খেজুর রয়ে গেল। সাত ওয়াসক মিশ্র খেজুর আর ছয় ওয়াসক নিম্নমানের খেজুর কিংবা ছয় ওয়াসক মিশ্র ও সাত ওয়াসক নিম্নমানের খেজুর । তারপর আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মাগরিবের সালাত আদায় করলাম এবং তাকে তা বললাম। তিনি হাসলেন এবং বললেন, আবু বকর ও উমরের কাছে গিয়ে তা বল। তাঁরা বললেন, আমরা আগেই জানতাম যে, যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা করার তা করেছেন, তখন অবশ্য এ রূপই হবে। হিশাম রহ. ওয়াহাব রহ-এর মাধ্যমে জাবির রা. থেকে আসরের সালাতের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি আবু বকর রা. এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাসার কথা উল্লেখ করেননি। তিনি বর্ণনা করেছেন, (জাবির রা. বলেছেন) আমার পিতা তাঁর জিম্মায় ত্রিশ ওয়াসক ঋণ রেখে মারা গিয়েছেন। ইবনে ইসহাক রহ. ওয়াহাব রহ.-এর মাধ্যমে জাবির রা. থেকে যুহরের সালাতের কথা উল্লেখ করেছেন।
হাদীস নং ২৫২৯
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……..কাব ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যামানায় একবার তিনি ইবনে আবু হাদরাদের কাছে মসজিদের পাওনা ঋণের তাগাদা করলেন। এতে উভয়ের আওয়াজ চড়ে গেল। এমনকি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘর থেকেই আওয়াজ শুনতে পেলেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজরার পর্দা সরিয়ে তাদের কাছে এলেন আর কাব ইবনে মালিক রা.-কে ডাকলেন এবং বললেন, হে কাব ! কাব রা. বললেন, আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ ! রাবী বলেন, তিনি হাতে ইশারা করলেন, অর্ধেক মওকুফ করে দাও। কাব রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি তাই করলাম। তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ইবনে আবু হাদরাদেকে) বললেন, যাও, তার ঋণ পরিশোধ করে দাও।
শর্তাবলী অধ্যায় (২৫৩০-২৫৫০)
হাদীস নং ২৫৩০
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………মারওয়ান ও মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ থেকে বর্ণনা করেন, (সুলহে হুদায়বিয়ার দিন) সেদিন সুহাইল ইবনে আমর যখন সন্ধিপত্র লিখলেন তখন সুহাইল ইবনে আমর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি এরূপ শর্তারোপ করলে যে, আমাদের কেউ আপনার কাছে আসলে সে আপনার দীন গ্রহণ করা সত্ত্বেও আপনি তাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিবেন। আর আমাদের ও তার মধ্যে হস্তক্ষেপ করবেন না। মুমিনরা এটা অপছন্দ করলেন এবং এতে ক্রুদ্ধ হলেন। সুহাইল এটা ছাড়া সন্ধি করতে অস্বীকার করল। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে শর্ত মেনেই সন্ধিপত্র লেখালেন। সেদিন তিনি আবু জামদান রা.-কে তার পিতা সুহাইল ইবনে আমরের কাছে ফেরত দিলেন। মুমিন মহিলাগণও হিজরত করে আসলেন। সে সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা ইবনে আবু মুয়ায়ত রা. ছিলেন। তিনি ছিলেন যুবতী। তাঁর পরিজন একা তাকে তাদের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে দাবী জানালো। কিন্তু তাকে তিনি তাদের কাছে ফেরত দিলেন না। কেননা, সেই মহিলাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা আয়াত নাযিল করেছিলেন : মুমিন মহিলাগণ হিজরত করে তোমাদের কাছে আসলে তাদের তোমরা পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মুমিন তবে তাদেরকে কাফিরদের নিকট ফেরত পাঠাবে না (৬০ : ১০)। উরওয়া রা. বলেন, আয়িশা রা. আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতের ভিত্তিতেই তাদের পরীক্ষা করে দেখতেন। উরওয়া রা. বলেন, আয়িশা রা. বলেছেন, তাদরে মধ্যে যারা এই শর্তে সম্মত হত তাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু একথা বলতেন, আমি তোমাকে বায়আত করলাম। আল্লাহর কসম ! বায়আত গ্রহণে তাঁর হাত কখনো কোন মহিলার হাত স্পর্শ করেনি। তিনি তাদের শুধু (মুখের) কথার মাধ্যমে বায়আত করেছেন।
হাদীস নং ২৫৩১
আবু নুআঈম রহ…..যিয়াদ ইবনে ইলাকা রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জারীর রা.-কে বলতে শুনেছি যে, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বায়আত গ্রহণ করলাম। তিনি আমাকে প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি কল্যাণ কামনার শর্তারোপ করলেন।