হাদীস নং ২৬৮৯
মুহাম্মদ ইবনে আরআরা রহ…….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (কোন এক) সফরে আমি জারীর ইবনে আবদুল্লাহ রা. এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি আমার খেদমত করতেন। অথচ তিনি আনাস রা. এর চাইতে বয়সে বড় ছিলেন। জারীর রা. বলেন, আমি আনসারদের এমন কিছু কাজ দেখেছি, যার ফলে তাদের কাউকে পেলেই সম্মান করি।
হাদীস নং ২৬৯০
আবদুল আযীয ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে খায়বার যুদ্ধে গিয়েছিলাম আর আমি তাঁর খেদমত করছিলাম। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে ফিরলেন এবং উহুদ পাহাড় তাঁর দৃষ্টিগোচর হল, তিনি বললেন, এই পাহাড় আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। তারপর তিনি হাত দ্বারা মদীনার দিকে ইঙ্গিত করলেন, ইয়া আল্লাহ! ইবরাহীম আ. যেমন মক্কাকে হারাম বানিয়েছিলেন, তেমনি আমিও এ দুই কংকরময় ময়দানের মধ্যবর্তী স্থান (মদীনা)-কে হারাম বরে ঘোষণা করছি। ইয়া আল্লাহ ! আপনি আমাদের সা’ ও মুদে বরকত দান করুন।
হাদীস নং ২৬৯১
সুলাইমান ইবনে দাউদ আবু রাবী রহ……..আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (কোন এক সফরে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে ছিলাম। আমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তির ছায়াই ছিল সর্বাধিক যে তার চাঁদর দ্বারা ছায়া গ্রহণ করছিল। তাই যারা সিয়াম পালন করছিল তারা কোন কাজই করতে পারছিল না। যারা সিয়াম রত ছিল না, তারা উটের তত্ত্বাবধান করছিল, খেদমতের দায়িত্ব পালন করছিল এবং পরিশ্রমের কাজ করছিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যারা সাওম পালন করেনি তারাই আজ অধিক সাওয়াব হাসিল করল।
হাদীস নং ২৬৯২
ইসহাক ইবনে নাসর রহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শরীরের প্রতিটি জোড়ার উপর প্রতিদিন একটি করে সাদকা রয়েছে। কোন লোককে তার সাওয়ারীর উপর উঠার ব্যাপারে সাহায্য করা, অথবা তার মাল-সরাঞ্জাম তুলে দেওয়া সাদকা। উত্তম কথা বলা ও সালাতের উদ্দেশ্যে গমনের প্রতিটি পদক্ষেপ সাদকা এবং রাস্তা বাতলিয়ে দেওয়া সাদকা।
হাদীস নং ২৬৯৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুনীর রহ………সাহল ইবনে সাদ সাঈদী রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর পথে একদিন সীমান্ত পাহারা দেওয়া দুনিয়া ও এর উপর যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম। জান্নাতে তোমাদের কারো চিবুক পরিমাণ জায়গা দুনিয়া এবং ভূপৃষ্ঠের সমস্ত কিছুর চাইতে উত্তম। আল্লাহর পথে বান্দার একটি সকাল বা বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া এবং ভূপৃষ্ঠের সব কিছুর চাইতে উত্তম।
হাদীস নং ২৬৯৪
কুতাইবা রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু তালহাকে বলেন, তোমাদের ছেলেদের মধ্য থেকে একটি ছেলে খুজে আন, যে আমার খেদমত করতে পারে। এমনকি তাকে আমি খায়বারেও নিয়ে যেতে পারি। তারপর আবু তালহা রা. আমাকে তার সাওয়ারীর পেছনে বসিয়ে নিয়ে চললেন। আমি তখন প্রায় সাবালক। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমত করতে লাগলাম। তিনি যখন অবতরণ করতেন, তখন প্রায়ই তাকে এই দু’আ পড়তে শুনতাম: ইয়া আল্লাহ! আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি থেকে, অক্ষমতা ও অসলতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাচ্ছি। পরে আমরা খায়বারে গিয়ে উপস্থিত হলাম। তারপর যখন আল্লাহ তা’আলা তাকে দুর্গের উপর বিজয়ী করলেন, তখন তার কাছে সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই ইবনে আখতাবের সৌন্দর্যের কথা উল্লেখ করা হল, তিনি ছিলেন সদ্য বিবাহিতা; তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিজের জন্য মনোনীত করলেন। তারপর তাকে নিয়ে রওয়ানা দিলেন। আমরা যখন সাদ্দুস সাহবা নামক স্থানে পৌঁছলাম তখন সাফিয়্যা রা. হায়েয থেকে পবিত্র হন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে তার সাথে বাসর যাপন করেন। এরপর তিনি চামড়ার ছোট দস্তরখানে হায়সা (এক প্রকার খাদ্য) প্রস্তুত করে আমাকে আশেপাশের লোকজনকে ডাকার নির্দেশ দিলেন। এই ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সাফিয়্যার বিয়ের ওয়ালিমা । তারপর আমরা মদীনার দিকে রওয়ানা দিলাম। আনাস রা. বলেন, আমি দেখতে পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উটের কাছে হাটু বাড়িয়ে বসতেন, আর সাফিয়্যা রা. তাঁর উপর পা রেখে উটে সাওয়ার হতেন। এভাবে আমরা মদীনার নিকটবর্তী হলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের দিকে তাকিয়ে বললেন, এটি এমন এক পাহাড় যা আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। তারপর মদীনার দিকে তাকিয়ে বললেন, ইয়া আল্লাহ ! এই কংকরময় দুটি ময়দানের মধ্যবর্তী স্থানকে হারাম বলে ঘোষণা করছি, যেমন ইবরাহীম আ. মক্কাকে হারাম ঘোষাণা করেছিলেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি তাদের মুদ এবং সা’ তে বরকত দান করুন।