হাদীস নং ২৬৮১
হাজ্জাজ ইবনে মিনহাল রহ……….আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইরে কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করলে তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের মধ্যে কুরআর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন এবং এতে যার নাম আসত তাকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে নিয়ে যেতেন। কোন এক যুদ্ধে এভাবে তিনি আমাদের মধ্যে কুরআর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। তাঁতে আমার নাম আসল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে বের হলাম। এ ছিল পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পরের ঘটনা।
হাদীস নং ২৬৮২
আবু মামার রহ……..আনাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধে সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন আমি দেখলাম আয়িশা বিনতে আবু বকর ও উম্মে সুলাইম রা. তাদের আচল এতটুকু উঠিয়ে নিয়েছেন যে, আমি তাদের উভয় পায়ের অলংকার দেখছিলাম। তারা উভয়েই মশক পিঠে বহন করে সাহাবীগণের মুখে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। আবার ফিরে গিয়ে মশক ভর্তি করে নিয়ে এসে সাহাবীগণের মুখে পানি ঢেলে ঢেলে দিচ্ছিলেন।
হাদীস নং ২৬৮৩
আবদান রহ……….সালাবা ইবনে আবু মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনুল খাত্তাব রা. মদীনায় কিছু সংখ্যক মহিলার মধ্যে কয়েকখানা চাঁদর বণ্টন করেন। তারপর একটি ভাল চাঁদর অবশিষ্ট রয়ে গেল। তাঁর কাছে উপস্থিত একজন তাকে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! এ চাঁদরটি আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নাতিন উম্মে কুলসুম বিনতে আলী রা. যিনি আপনার কাছে আছেন, তাকে দিয়ে দিন। উমর রা. বলেন, উম্মে সালীত রা. এই চাঁদরটির অধিক হকদার । উম্মে সালীত রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাতে বায়আত গ্রহণকারিণী আনসার মহিলাদের একজন। উমর রা. বলেন, কেননা উম্মে সালীত রা. উহুদের যুদ্ধে আমাদের কাছে মশক (ভর্তি পানি) বহন করে নিয়ে আসতেন। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, ‘তাযফিরু’ অর্থ তিনি সেলাই করতেন।
হাদীস নং ২৬৮৪
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ……..রুবাইয়ি বিনতে মুআববিয রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা লোকদের পানি পান করাতাম, আহতদের পরিচর্যা করতাম এবং নিহতদের মদীনায় পাঠাতাম।
হাদীস নং ২৬৮৫
মুসাদ্দাদ রহ………রুবাইয়ি বিনতে মুআববিয রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লোকদের পানি পান করাতাম ও তাদের পরিচর্যা করতাম এবং আহত ও নিহত লোকদের মদীনায় ফেরত পাঠাতাম।
হাদীস নং ২৬৮৬
মুহাম্মদ ইবনে আলা রহ………আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (এক যুদ্ধে) আবু আমিরের হাটুতে তীর বিদ্ধ হলো, আমি তাঁর কাছে গেলাম। আবু আমির রা. বললেন, এই তীরটি বের কর। তখন আমি তীরটি টেনে বের করলাম। ফলে সে স্থান থেকে পানি প্রবাহিত হতে লাগল। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে গেলাম এবং তাকে ঘটনাটি জানালাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইয়া আল্লাহ ! আবু আমির উবাদাকে ক্ষমা করুন।
হাদীস নং ২৬৮৭
ইসমাঈল ইবনে খলীল রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (এক রাতে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম জেগে কাটান। তারপর তিনি যখন মদীনায় এলেন এই আকাঙ্খা প্রকাশ করলেন যে, আমার সাহাবীদের মধ্যে কোন যোগ্য ব্যক্তি যদি রাতে আমার পাহারায় থাকত। এমন সময় আমরা অস্ত্রের শব্দ শুনতে পেলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইনি কে? লোকটি বলল, আমি সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস , আপনার পাহারার জন্য এসেছি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়ে পড়লেন।
হাদীস নং ২৬৮৮
ইয়াহইয়া ইবনে ইউসুফ রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লাঞ্ছিত হোক দীনার ও দিরহামের গোলাম এবং চাঁদর ও শালের গোলাম। তাকে দেয়া হলে সন্তুষ্ট হয়, না দেয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। এই হাদীসটির সনদ ইসরাঈল এবং ইসমাঈল এবং মুহাম্মদ ইবনে জুহাদা, আবু হুসাইনের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছাননি। আর আমর, আবদূর রাহমান ইবনে আবদুল্লাহ……..আবু হুরায়রা রা. থেকে আমাদেরকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লাঞ্ছিত হেক দীনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম এবং শালের গোলাম। তাকে দেওয়া হলে সন্তুষ্ট হয়, না দেয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। এরা লাঞ্ছিত হোক, অপমানিত হোক। (তাদের পায়ে) কাটা বিদ্ধ হলে তা কেউ তুলে দিবে না। ঐ ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যে ঘোড়ার লাগাম ধরে জিহাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, যার মাথার চুল এলামেলো এবং পা ধূলিধূসরিত। তাকে পাহারায় নিয়োজিত করলে পাহারায় থাকে আর (সৈন্য দলের) পেছনে পেছনে রাখলে পেছনেই থাকে। সে কারো সাক্ষাতের অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয় না এবং কোন বিষয়ে সুপারিশ করলে তার সুপারিশ গ্রহণ করা হয় না। ‘ফাতা’সান’ বলা হয় ‘ফাআতআসাহুমূল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ তাদের অপমানিত করুক। ‘তুবা’ অর্থ উত্তম। ‘ফুলা’ এর কাঠামোতে গঠিত। মূলত ‘তুবইয়া’ ছিল। ‘ইয়া’ কে ‘ওয়াও’ দ্বারা পরিবর্তন করা হয়েছে।