হাদীস নং ২৬৭০
আবদূর আলা ইবনে হাম্মাদ রহ……..আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, একবার মদীনাবাসীগণ ভীত হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু তালহা রা.-এর ধীরগতি সম্পন্ন ঘোড়ার আরোহণ করেন। তিনি (শহরে প্রদক্ষিণ করে) ফিরে এসে বললেন, আমি তোমার সমুদ্র স্রোতের ন্যায় (দ্রুতগতি সম্পন্ন) পেয়েছি। পরবর্তীকালে ঘোড়াটিকে আর কখনো পেছনে ফেলা যেতো না।
হাদীস নং ২৬৭১
কাবীসা রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়ার জন্য হাফয়া থেকে সানিয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত এবং প্রশিক্ষণবিহীন ঘোড়ার জন্য সানিয়্যা থেকে বানূ যুরায়কের মসজিদ পর্যন্ত দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন। ইবনে উমর রা. বলেন, আমি উক্ত প্রতিযোগিতার একজন অংশগ্রহণকারী ছিলাম। সুফিয়ান রহ. বলেন, হাফয়া থেকে সানিয়্যাতুল বিদার দূরত্ব পাঁচ কিংবা ছয় মাইল এবং সানিয়্যা থেকে বানূ যুরায়কের মসজিদের দূরত্ব এক মাইল।
হাদীস নং ২৬৭২
আহমদ ইবনে ইউনুস রহ………আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশিক্ষণবিহীন ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন এবং এই দৌড়ের সীমান ছিল সানিয়্যা থেকে বানূ যুরায়কের মসজিদ পর্যন্ত। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, ‘আমাদান’ এর অর্থ সীমা।
হাদীস নং ২৬৭৩
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা করিয়েছেন। এই প্রতিযোগিতা হাফয়া থেকে শুরু হয়েছে এবং সানিয়্যাতুল বিদায় শেষ হয়েছে। (রাবী আবু ইসহাক রহ. বলেন) আমি মূসা রহ.-কে বললাম, এর দূরত্ব কী পরিমাণ হবে? তিনি বললেন, ছয় বা সাত মাইল। প্রশিক্ষণবিহীন ঘোড়ার প্রতিযোগিতা শুরু হতো সানিয়্যাতুল বিদা থেকে এবং শেষ হতো বানূ যুরাইকের মসজিদে। আমি বললাম, এর মধ্যকার দূরত্ব কত ? তিনি বললেন, এক মাইল বা তার অনুরূপ। ইবনে উমর রা. এতে অংশগ্রহণকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন।
হাদীস নং ২৬৭৪
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………আনাস রহ. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর একটি উষ্ট্রী ছিল যাকে আযবা বলা হত।
হাদীস নং ২৬৭৫
মালিক ইবনে ইসমাঈল রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আযবা নামক একটি উষ্ট্রী ছিল। কোন উষ্ট্রী তার আগে যেতে পারত না। হুমাইদ রহ. বলেন, কোন উষ্ট্রী তার আগে যেতে সক্ষম হতো না। একদিন এক বেদুঈন একটি জাওয়ান উটে চড়ে আসল এবং আযবা এর আগে চলে গেল। এতে মুসলমাগণের মনে কষ্ট হল। এমনকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম- ও তা বুঝতে পারলেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর বিধান এই যে, দুনিয়ার সবকিছুরই উত্থানের পর পতন রয়েছে।
হাদীস নং ২৬৭৬
আমর ইবনে আলী রহ………..আমর ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর (ইন্তিকালের সময়) তাঁর সাদা খচ্চর, কিছু যুদ্ধ সরঞ্জাম ও সামান্য ভূমি ব্যতীত আর কিছুই রেখে যাননি। এগুলোও তিনি সাদকা স্বরূপ ছেড়ে যান।
হাদীস নং ২৬৭৭
মুহাম্মদ ইবনে মুসান্ন রহ……….বারা রা. থেকে বর্ণিত যে, কোন এক ব্যক্তি তাকে বললেন, হে আবু উমারা। আপনারা হুনায়নের যুদ্ধে পলায়ন করেছিলেন? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, না রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো পলায়ন করেননি। বরং অতি উৎসাহী অগ্রবর্তী কিছু লোক হাওয়াযিনদের তীর নিক্ষেপের ফলে পালিয়ে ছিলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাদা খচ্চরটির উপর উপবিষ্ট ছিলেন এবং আবু সুফিয়ান ইবনে হারিস রা. এর লাগাম ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আমি যে নবী তা মিথ্যা নয়, আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশধর।
হাদীস নং ২৬৭৮
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর রহ………উম্মুল মুমিনীন আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে জিহাদের অনুমতি চাইলে তিনি বলেন, তোমাদের জিহাদ হল হজ্জ।
হাদীস নং ২৬৭৯
কাবীসা রহ………উম্মুল মুমিনীন আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে তাঁর সহধর্মিনীগণ জিহাদের অনুমতি চাইলে তিনি বললেন, (মহিলাদের জন্য) উত্তম জিহাদ হল হজ্জ।
হাদীস নং ২৬৮০
আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম মিলহানের কন্যার কাছে গেলেন এবং সেখানে তিনি বিশ্রাম করলেন। তারপর তিনি হেসে উঠলেন। মিলহান রা.-এর কন্যা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি কেন হাসছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে কিছু লোক আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে এই সবুজ সমুদ্রে সফর করবে। তাদের দৃষ্টান্ত সিংহাসনের উপবিষ্ট বাদশাহদের ন্যায়। মিলহান রা.-এর কন্যা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আল্লাহর কাছে আমার জন্য দু’আ করুন, যেন তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভূক্ত করেন। তিনি বললেন, ইয়া আল্লাহ ! আপনি মিলহানের কন্যাকে তাদের অন্তর্ভূক্ত করুন। আবার তিনি বিশ্রাম নিলেন, এরপর হেসে উঠলেন। মিলহান রা.-এর কন্যা তাকে অনুরূপ জিজ্ঞাসা করলেন অথবা বললেন, এ কেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পূর্বের ন্যায় জবাব দিলেন। মিলহান রা.-এর কন্যা বললেন, আমার জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, যেন তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভূক্ত করেন। তিনি বললেন, তুমি তাদের প্রথম দলে আছ। পেছনের দলেন নয়। বর্ণনাকারী বলেন, আনাস রা. বলেছেন, তারপর তিনি উবাদা ইবনে সামিতের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং কারাযার কন্যার সঙ্গে সমুদ্র সফর করেন। তারপর ফেরার সময় নিজের সাওয়ারীতে আরোহণ করলেন, তখন তা থেকে পড়ে গিয়ে ঘাড় মটকে ইন্তিকাল করেন।