হাদীস নং ২৬৬৩
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা র……… আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঘোড়া তিন শ্রেণীর লোকের জন্য। একজনের জন্য পুরস্কার ;একজনের জন্য আবরণ এবং একজনের জন্য (পাপের) বোঝা। আর যার জন্য পুরস্কার সে হলো , ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদের জন্য) ঘোড়া বেঁধে রাখে এবং রশি কোন চারণভূমি বা বাগানে লম্বা করে দেয়, আর ঘোড়াটি যদি রশি ছিড়ে এক বা দুটি টিলা অতিক্রম করে তাহলেও তার গোবর ও পদক্ষেপ সমূহের বিনিময়ে তার জন্য নেকী রয়েছে। এমনকি ঐ ঘোড়া যদি কোন নহরে গিয়ে তা থেকে পানি পান করে, অথচ তার মালিক পানি পান করানোর ইচ্ছা করেনি, তবে এর ফলেও তার জন্য নেকী রয়েছে। আর যে ব্যক্তি অহংকার, লৌকিকতা প্রদর্শন এবং মুসলমানদের সাথে শত্রুতা করার জন্য ঘোড়া বেঁধে রাখে তবে তার জন্য তা বোঝা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে আমার উপর আর কিছু অবতীর্ণ হয়নি, ব্যাপক অর্থবোধক এই একটি আয়াত ছাড়া। (আল্লাহর বাণী) কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখবে। (৯৯:৭-৮)
হাদীস নং ২৬৬৪
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………আবুল মুতাওয়াককিল নাজী রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনম আমি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী রা.-এর নিকট গিয়ে তাকে বললাম, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে যা শুনেছেন, তা থেকে আমার কাছে কিছু বর্ণনা করুন। তখন জাবির রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কোন এক সফরে তার সঙ্গে ছিলাম। আবু আকীল বললেন, সেটি কি জিহাদের সফর না উমরা পালনের তোমাদের মধ্যে যারা পরিজনদের কাছে তাড়াতাড়ি যেতে আগ্রহী, তারা তাড়াতাড়ি যাও। জাবির রা. বলেন, তারপর আমি একটি উটের পিঠে চড়ে বেরিয়ে পড়লাম, সেটির দেহে কোন দাগ ছিল না এবং বর্ণ ছিল লাল-কালো মিশ্রিত। লোকেরা আমার পেছনে পেছনে চলছিল। পথিমধ্যে আমার উটটি ক্লান্ত হয়ে থেমে পড়লে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে জারিব ! তুমি থাম। তারপর তিনি চাবুক দিয়ে উটটিকে একটি আঘাত করলেন, আর উটটি অকস্মাৎ দ্রুত চলতে লাগল। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি উটটি বিক্রি করবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর মদীনায় পৌঁছলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের একদল সহ মসজিদে প্রবেশ করলেন। আমি আমার উটটিকে মসজিদের বালাত -এর পার্শ্বে বেঁধে রেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এগিয়ে গেলাম এবং বললাম, এই আপনার উট। তখন তিনি বেরিয়ে এসে উটটি ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন, হ্যাঁ, উটটিতো আমারই। তারপর তিনি কয়েক উকিয়া স্বর্ণসহ এই বলে পাঠালেন যে, এগুলো জাবিরকে দাও। তারপর তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি উটের পুরা মূল্য পেয়েছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, মূল্য এবং উট তোমারই।
হাদীস নং ২৬৬৫
আহমদ ইবনে মুহাম্মদ রহ………কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনে মালিক রা.-কে বলতে শুনেছি যে, এক সময় মদীনাতে ভীতি দেখা দিলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু তালহার মানদূব নামক ঘোড়াটি চেয়ে নিলেন এবং এর উপর আরোহণ করলেন আর বললেন, আমি কোন ভীতি দেখিনি। কিন্তু ঘোড়াটি সমুদ্রের স্রোতের ন্যায় পেয়েছি।
হাদীস নং ২৬৬৬
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমতের মাল থেকে ঘোড়ার জন্য দু’অংশ এবং আরোহীর জন্য এক অংশ করে দিয়েছিলেন।
হাদীস নং ২৬৬৭
কুতাইবা রহ………আবু ইসহাক রহ. থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি বারা ইবনে আযিব রা.কে বলল, আপনার কি হুনায়নের যুদ্ধ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ময়দানে রেখে পলায়ন করেছিলেন। বারা ইবনে আযিব রা. বলেন, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম পলায়ন করেননি। হাওয়াযিনরা ছিল সুদক্ষ তীরন্দাজ। আমরা সামনা-সামনি যুদ্ধে তাদের পরাস্ত করলে তারা পালিয়ে যেতে লাগল। এমতাবস্থায় মুসলমানরা তাদের পিছু ধাওয়া না করে গনীমতের মাল সংগ্রহে মনোনিবেশ করল। এই সুযোগ শত্রুরা তীর বর্ষণের মাধ্যমে আমাদের আক্রমণ করে বসল। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থান ত্যাগ করেননি। আমি তাকে তাঁর বাহনের লাগাম ধরে টানছেন; আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন, আমি নবী তা মিথ্যা নয়, আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশধর।
হাদীস নং ২৬৬৮
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ার হয়ে পা-দানীতে কদম মুবারক রাখার পর উটটি দাঁড়িয়ে গেলে যুল-হুলাইফা মসজিদের নিকট তিনি ইহরাম বেঁধে নিতেন।
হাদীস নং ২৬৬৯
আমর ইবনে আওন রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আইলাইহি ওয়াসাল্লাম গদিবিহীন ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে লোকদের সম্মুখে উপস্থিত হলেন, তাঁর কাঁধে ছিল ঝুলন্ত তলোয়ার।