হাদীস নং ২৬১৩
মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম রহ………বারা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লৌহবর্মে আবৃত এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যুদ্ধে শরীক হব, না ইসলাম গ্রহণ করব? তিনি বললেন, ইসলাম গ্রহণ কর, তারপর যুদ্ধে যাও। তারপর সে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে যুদ্ধে গেল এবং শাহাদাত বরণ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে অল্প আমল করে বেশী পুরস্কার পেল।
হাদীস নং ২৬১৪
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ রহ………আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, উম্মে রুবায়্যি বিনতে বারা, যিনি হারিসা ইবনে সুরাকার মা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলেন, ইয়া নবীয়াল্লাহ ! আপনি হারিসা রা. সম্পর্কে আমাকে কিছু বলবেন কি? হারিসা রা. বদরের যুদ্ধে অজ্ঞাত তীরের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেন। সে যদি জান্নাতবাসী হয়ে থাকে তবে আমি সবর করব, তা না হলে আম তার জন্য অবিরত কাঁদতে থাকব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে হারিসার মা! জান্নাতে অসংখ্য বাগান আছে, আর তোমার ছেলে সর্বোচচ জান্নাতুল ফেরদাউস লাভ করেছে।
হাদীস নং ২৬১৫
সুলাইমান ইবনে হারব রহ………আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, এক ব্যক্তি গনীমতের জন্য, এক ব্যক্তি প্রসিদ্ধির জন্য এবং এক ব্যক্তি বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য জিহাদে শরীক হল। তাদের মধ্যে কে আল্লাহর পথে জিহাদ করল, তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমা বুলন্দ থাকার জন্য যুদ্ধ করল, সে-ই আল্লাহর পথে জিহাদ করল।
হাদীস নং ২৬১৬
ইসহাক রহ………আবদুর রাহমান ইবনে জাবর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর পথে যে বান্দার দু’পা ধূলিধূসরিত হয়, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে এরূপ হয় না।
হাদীস নং ২৬১৭
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ………ইকরিমা রহ. বর্ণনা করেন যে, ইবনে আব্বাস রা. তাকে ও আলী ইবনে আবদুল্লাহকে বলেছিলেন যে, তোমরা আবু সাঈদ রা.-এর কাছে যাও এবং তার কিছু বর্ণনা শোনা । তারপর আমরা তার কাছে গেলাম। সে সময় তিনি ও তার ভাই বাগানে পানি সেচের কাজে ছিলেন। আমাদের দেখে তিনি আসলেন এবং দু’হাটু বুকের সাথে লাগিয়ে বসে বললেন, মসজিদে নববীর জন্য আমরা এক একটি করে ইট বহন করছিলাম। আর আম্মার রা. দু’দুটি করে বহন করছিল। সে সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পাশ দিয়ে গেলেন এবং তার মাথা থেকে ধুলাবালি মুছে ফেললেন এবং বললেন, আম্মারের জন্য বড় দুঃখ হয়, বিদ্রোহী দল তাকে হত্যা করবে। সে তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবান করবে এবং তারা আম্মারকে জান্নামের পথে ডাকবে।
হাদীস নং ২৬১৮
মুহাম্মদ ইবনে সালাম রহ………..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, খন্দকের যুদ্ধ থেকে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এসে অস্ত্র রাখলেন এবং গোসল করলেন ,তখন জিবরীল আ.তাঁর কাছে এলেন, আর তাঁর মাথায় পট্রির ন্যায় ধূলি জমেছিল। তিনি বললেন, আপনি অস্ত্র রেখে দিলেন অথচ আল্লাহর কসম, আমি এখনো অস্ত্র রাখিনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোথায় যেতে হবে? তনি বানূ কুরায়যার প্রতি ইঙ্গিত করে বললেন, এদিকে। আয়িশা রা. বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দিকে বেরিয়ে গেলেন।
হাদীস নং ২৬১৯
ইসমাঈল ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যারা বীরে মাউনায় শরীক সাহাবীদেরকে শহীদ করেছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই রিল ও যাকওয়ানের বিরুদ্ধে ত্রিশ দিন পর্যন্ত ফজরে দু’আ করেছিলেন এবং উসাইয়্যা গোত্রের বিরুদ্ধেও যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করেছিল। আনাস রা. বলেন , বীরে মাউনার কাছে শহীদ সাহাবীদের সম্পর্কে কুরআনের আয়াত নাযিল হয়েছিল, যা আমরা পাঠ করেছি। পরে তা, মানসুখ হয়ে যায়। আয়াতটি হল: “তোমরা আমাদের কওমের কাছে এ সংবাদ পৌঁছিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের রবের সাক্ষাত লাভ করেছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং আমরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট”।
হাদীস নং ২৬২০
আলী ইবনে আবদুল্লাহ রহ………জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধের দিন কিছু সংখ্যক সাহাবী সকাল বেলায় শরাব পান করেন, এরপর যুদ্ধে তারা শাহাদাত বরণ করেন। সুফিয়ান রহ.-কে প্রশ্ন করা হল: সেই দিনের শেষ বেলায়? তিনি বললেন, এ কথাটি তাঁতে নেই।
হাদীস নং ২৬২১
সাদাকা ইবনে ফাযল রহ……….জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধ শেষে আমার পিতাকে (তার লাশ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অংগ-প্রত্যঙ্গ কাটা অবস্থায় আনা হল এবং তাঁর সামনে রাখা হল। আমি তাঁর চেহারা খুলতে চাইলাম, আমার গোত্রের লোকেরা আমাকে নিষেধ করল। এমন সময় তিনি কোন বিলাপকারিণীর বিলাপ ধ্বনি শুনতে পেলেন। বলা হল: সে আমার কন্যা বা ভগ্নি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে কাঁদছে কেন? অথবা বলেছিলেন, সে যেন না কাঁদে। ফেরেশতারা তাকে ডানা দ্বারা ছায়া দান করছেন। আমি (ইমাম বুখারী রহ. বলেন) সাদকা রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এও কি বর্ণিত আছে যে, তাকে উঠিয়ে নেয়া পর্যন্ত ? তিনি বললেন, (জাবির রা.) কখনো তাও বলেছেন।