হাদীস নং ২৫৭৭
উবাইদ ইবনে ইসমাঈল রহ………আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (আল্লাহ তাআলার বাণী) যে বিত্তবান সে যেন বিরত থাকে আর যে বিত্তহীন সে যেন সংগত পরিমাণ ভোগ করে (৪:৬) আয়াতটি ইয়াতীমের অভিভাবক সম্বন্ধে নাযিল হয়েছে। অভিভাবক যদি অভাবগ্রস্ত হয়, তাহলে বিধি মোতাবেক ইয়াতীমের সম্পত্তি থেকে প্রয়োজন পরিমাণ খেতে পারবে।
হাদীস নং ২৫৭৮
আবদুল আযীয ইবনে আবদুল্লাহ রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাতটি ধ্বংসকারী বিষয় থেকে তোমরা বিরত থাকবে। সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সেগুলো কি? তিনি বললেন, ১. আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা ২. যাদু ৩. আল্লাহ তা’আলা যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন, শরীয়ত সম্মত ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করা ৪. সুদ খাওয়া ৫. ইয়াতীমের মাল গ্রাস করা ৬. রণক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং ৭. সরল প্রকৃতির সতী মুমিন নারীদের অপবাদ দেওয়া।
হাদীস নং ২৫৭৯
ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম রহ………….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় এলেন, তখন তাঁর কোন খাদিম ছিল না। আবু তালহা রা. আমার হাত ধরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আমাকে নিয়ে গেলেন এবং বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আনাস একজন বুদ্ধিমান ছেলে। সে আপনার খেদমত করবে। এরপর প্রবাসে ও আবাসে আমি তাঁর খেদমত করেছি। আমার কৃত কোন কাজ সম্পর্কে তিনি কখনো বলেননি, তুমি এরূপ কেন করলে? কোন কাজ না করলে তিনি বলেননি, তুমি এটি এরূপ কেন করলে না?
হাদীস নং ২৫৮০
আবদুল্লাহ ইবনে মাসলামা রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, মদীনায় আনসারদের মধ্যে আবু তালহার খেজুর বাগান-সম্পদ সবচাইতে বেশী ছিল। আর সকল সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে সবচাইতে প্রিয় সম্পদ ছিল মসজিদের সামনে অবস্থিত বায়রুহা বাগানটি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে বাগানে যেতেন এবং এর সুস্বাদু পানি পান করতেন। আনাস রা. বলেন, যখন নাযিল হল: “তোমরা যা ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা নেকী হাসিল করতে পারবে না। আবু তালহা রা. দাঁড়িয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আল্লাহ বলেছেন: তোমরা যা ভালবাস, তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো নেকী হাসিল করতে পারবে না। আমার কাছে সবচাইতে প্রিয় সম্পদ হল বায়রুহা । সেটি আল্লাহর নামে সাদকা। আমি আল্লাহর কাছে এর সওয়াব ও কিয়ামতের সঞ্চয়ের আশা করি। আল্লাহর মর্জি অনুযায়ী আপনি তা ব্যয় করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বেশ ! এটি লাভজনক সম্পদ অথবা (বলেন) অস্থায়ী সম্পদ। ইবনে মাসলামা সন্দেহ পোষণ করেন। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন) তুমি যা বলেছ, আমি তা শুনেছি। আমার মতে তুমি তা তোমার আত্মীয়দের মধ্যে বন্টন করে দাও। আবু তালহা রা. বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি তা-ই করব। তারপর তিনি তা তার আত্মীয় ও চাচাতো ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। ইসমাঈল,আবদুল্লাহ, ইবনে ইউসুফ, ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া রা. মালিক রহ-এর (সন্দেহ ছাড়াই (অস্থায়ী) বর্ণনা করেছেন।
হাদীস নং ২৫৮১
মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রহীম রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, এক সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলেন এবং তার মা মারা গেছেন। তার পক্ষ থেকে যদি আমি সাদকা করি তাহলে তা কি তার উপকারে আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সাহাবী বললেন, আমার একটি বাগান আছে, আপনাকে সাক্ষী রেখে আমি তার পক্ষ থেকে সাদকা করলাম।
হাদীস নং ২৫৮২
মুসাদ্দাদ রহ………….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ তৈরীর নির্দেশ দিলেন। তারপর বললেন, হে বানু নাজ্জার তোমরা এই বাগানটির মূল্য নির্ধারণ করে আমার কাছে বিক্রি কর। তারা বলল, এরূপ নয়। আল্লাহর কসম ! আমরা একমাত্র আল্লাহর কাছেই এর মূল্যের আশা রাখি।
হাদীস নং ২৫৮৩
মুসাদ্দাদ রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর রা. খায়বারে কিছু জমি লাভ করেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, আমি এমন ভাল একটি জমি পেয়েছি, যা ইতিপূর্বে পাইনি। আপনি এ সম্পর্কে আমাকে কি নির্দেশ দেন? তিনি বলেন, তুমি ইচ্ছা করলে আসল জমিটি ওয়াকফ করে তার উৎপন্ন সাদকা করতে পার। উমর রা. এটি গরীব, আত্মীয়-স্বজন, গোলাম আযাদ, আল্লাহর পথে, মেহমান ও মুসাফিরদের জন্য এ শর্তে সাদকা করলেন যে, আসল জমি বিক্রি করা যাবে না, কাউকে দান করা যাবে না, কেউ এর উত্তরাধিকারী হবে না। তবে যে এর মুতাওয়াল্লী হবে তার জন্য তা থেকে সংগত পরিমাণ খেতে বা বন্ধু-বান্ধবকে খাওয়াতে কোন দোষ নেই। তবে এ থেকে সঞ্চয় করবে না।
হাদীস নং ২৫৮৪
আবু আসিম রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, উমর রা. খায়বারে কিছু সম্পদ লাভ করেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে তাকে অবহিত করেন। তিনি বললেন, তুমি ইচ্ছা করলে সেটি সাদকা করতে পার। তারপর তিনি সেটি অভাবগ্রস্ত, মিসকীন, আত্মীয়-স্বজন ও মেহমানদের মধ্যে সাদকা করে দেন।