হাদীস নং ২৫৬৯
মুহাম্মদ রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, সাদ ইবনে উবাদা রা.-এর মা মারা গেলেন এবং তিনি সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। পরে (সাদ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার মা আমার অনুপস্থিতে মারা যান। আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে কিছু সাদকা করি, তাহলে কি তা তাঁর কোন উপকারে আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সাদ রা. বললেন, তাহলে আমি আপনাকে সাক্ষী করছি আমার মিখরাফ নামক বাগানটি তাঁর জন্য সাদকা করলাম।
হাদীস নং ২৫৭০
ইয়াহইয়া ইবনে বুকাইর রহ………কাব ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি আমার তাওবা (কবুলের শুকরিয়া) হিসাবে আমি আমার যাবতীয় মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে সাদকা করে মুক্ত হতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কিছু মাল নিজের জন্য রেখে দাও, তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার খায়বারের অংশটি নিজের জন্য রেখে দিলাম।
হাদীস নং ২৫৭১
আবু নুমান মুহাম্মদ ইবনে ফাযল রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকদের ধারণা, উক্ত আয়াতটি মানসুখ হয়ে গেছে; কিন্তু আল্লাহর কসম ! আয়াতটি মানসুখ হয়নি; বরং লোকেরা এর উপর আমল করতে অনীহা প্রকাশ করছে। আত্মীয় দু’ধরনের- এক. আত্মীয় যারা ওয়ারিস হয়, এবং তারা উপস্থিত কিছু দিবে। দুই. এমন আত্মীয় যারা ওয়ারিস নয়, তারা উপস্থিতদের সঙ্গে সদালাপ করবে এবং বলবে, আমাদের অধিকার কিছু নেই, যা তোমাদের দিতে পারি।
হাদীস নং ২৫৭২
ইসমাঈল রহ………..আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত যে, একজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, আমার মা হঠাৎ মারা যান। আমার ধারণা যে, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন, তাহলে সাদকা করতেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে সাদকা করতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে সাদকা কর।
হাদীস নং ২৫৭৩
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, সাদ ইবনে উবাদা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জানতে চাইলেন যে, আমার মা মারা গেছেন এবং তার উপর মান্নত ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তা পক্ষ থেকে তা আদায় কর।
হাদীস নং ২৫৭৪
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ………ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, বানু সাঈদার নেতা সাদ ইবনে উবাদা রা.-এর মা মারা গেলেন। তারপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার মা আমার অনুপস্থিতে মারা যান। আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে কিছু সাদকা করি, তাহলে কি তা তাঁর কোন উপকারে আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সাদ রা. বললেন, তাহলে আমি আপনাকে সাক্ষী রেখে আমি আমার মিখরাফ নামক বাগানটি তাঁর জন্য সাদকা করলাম।
হাদীস নং ২৫৭৫
আবুল ইয়ামান রহ……….উরওয়া ইবনে যুবাইর রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি আয়িশা রা.-কে জিজ্ঞাসা করেন: “তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিয়ে করবে, যাকে তোমাদের ভাল লাগে”(৪:৩)। আয়াতটির অর্থ কি? আয়িশা রা. বললেন, এখানে সেই ইয়াতীম মেয়েদের উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যে তার অভিভাবকের লালন-পালনে থাকে। এরপর সে অভিভাবক তার রূপ-লাবণ্য ও ধন-সম্পদে আকৃষ্ট হয়ে, তার সমমানে মেয়েদের প্রচলিত মহর থেকে কম দিয়ে তাকে বিয়ে করতে চায়। অতএব যদি মহর পূর্ণ করার ব্যাপারে এদের প্রতি ইনসাফ করতে না পারে তবে ঐ অভিভাবকদেরকে নিষেধ করা হয়েছে এদের বিবাহ করতে এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের ছাড়া অন্য মেয়েদের বিবাহ করতে। আয়িশা রা. বলেন, এরপর লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আল্লাহ তা’আলা এই আয়াত করেন : “এবং লোকে আপনার কাছে মহিলাদের বিষয়ে জানতে চায়। বলুন, আল্লাহ তোমাদের তাদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা জানাচ্ছেন। (৪:১২৭)। আশিয়া রা. বলেন, আল্লাহ তা’আলা এই আয়াতে বর্ণনা করেন যে, ইয়াতীম মেয়েরা সুন্দরী ও সম্পদশালী হলে অভিভাবকরা তাদের বিয়ে করতে আগ্রহী হয়, কিন্তু পূর্ণ মহর প্রদান করে না। আবার ইয়াতীম মেয়েরা গরীব হলে এবং সুশ্রী না হলে তাদের বিয়ে করতে চায় না বরং অন্য মেয়ে তালাশ করে। আয়িশা রা. বলেন যে, আকর্ষণীয় না হলে তারা যেমন ইয়াতীম মেয়েদের পরিত্যাগ করে, তেমনি আকর্ষণীয় মেয়েদেরও তারা বিয়ে করতে পারবে না, যদি তাদের ইনসাফ মাফিক পূর্ণ মহর প্রদান এবং তাদের হক যথাযথভাবে আদায় না করে।
হাদীস নং ২৫৭৬
হারূন রহ………..ইবনে উম রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে উমর রা. নিজের কিছু সম্পত্তি সাদকা করেছিলেন, তা ছিল ছামাগ নামে একটি খেজুর বাগান। উমর রা. বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি একটি সম্পদ পেয়েছি, যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি সেটি সাদকা করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মূল সম্পদটি এ শর্তে সাদকা কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না। এবং কেউ ওয়ারিস হবে না, বরং তার ফল দান করা হবে। তারপর উমর রা. সেটি এভাবেই সাদকা করলেন। তার এ সাদকা ব্যয় হবে আল্লাহর রাস্তায়, দাস মুক্তির ব্যাপারে, মিসকীন, মেহমান, মুসাফির ও আত্মীয়দের জন্য। এর যে মুতাওয়াল্লী হবে তার জন্য তা থেকে সঙ্গত পরিমাণ আহার করলে কিংবা বন্ধু-বান্ধবকে খাওয়ালে কোন দোষ নেই। তবে তা সঞ্চয় করতে পারবে না।