হাদীস নং ২৫৬৩
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ………হাকীম ইবনে হিযাম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আমি সওয়াল করলাম, তিনি আমাকে দান করলেন। আবার সওয়াল করলাম, তিনি আমাকে দান করলেন। তারপর তিনি আমাকে বললেন, হে হাকীম ! এই ধন সম্পদ সবুজ-শ্যামল, মধুর। যে ব্যক্তি দানশীলতার মনোভাব নিয়ে তা গ্রহণ করবে, তাঁতে তার বরকত হবে। আর যে ব্যক্তি প্রতীক্ষা কাতর অন্তরে তা গ্রহণ করবে, তাঁতে তার বরকত হবে না। সে ঐ ব্যক্তির মত যে খায়, কিন্তু তৃপ্ত হয় না। উপরের (দাতার) হাত নীচের (গ্রহীতার) হাতের চাইতে উত্তম। হাকীম রা. বলেন, তারপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আপনার পরে আমি দুনিয়া থেকে বিদায়ের আগে আর কারো কিছু চাইব না। (কোন কিছু নেব না) এরপর আবু বকর রা. কিছু দান করার জন্য হাকীমকে আহবান করেন, কিন্তু হাকীম রা. তাঁর কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তারপর উমর রা.-ও কিছু দান করার জন্য ডেকে পাঠান, কিন্তু তাঁর কাছে থেকেও কিছু গ্রহণ করতে তিনি অস্বীকার করেন। তখন উমর রা. বলেন, হে মুসলিম সমাজ ! আমি আল্লাহ প্রদত্ত গনীমতের মাল থেকে প্রাপ্য তাঁর অংশ তাঁর সামনে পেশ করেছি, কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকার করেছেন, হাকীম রা. তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে আর কারো নিকট কিছু চাননি।
হাদীস নং ২৫৬৪
বিশর ইবনে মুহাম্মদ রহ………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্ববান এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। তাই শাসক হলেন দায়িত্ববান, তার দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্ববান এবং তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর ঘরের দায়িত্ববান, তার দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। গোলাম তার মালিকের ধন-সম্পদের দায়িত্ববান, তার দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। রাবী বলেন, আমার মনে হয় তিনি এও বলেছেন যে, পুত্র তার পিতার সম্পদের দায়িত্ববান।
হাদীস নং ২৫৬৫
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ……….আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু তালহা রা.-কে বলেন, মত হল, তোমার বাগানটি তোমার আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে দাও। আবু তালহা রা. বলেন, আমি তাই করব ইয়া রাসূলাল্লাহ ! তাই আবু তালহা রা. তার বাগানটি তার আত্মীয়-স্বজন ও চাচাত ভাইয়ের মধ্যে ভাগ করে দেন। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যখন এই আয়াতটি নাযিল হল : (হে মুহাম্মদ) আপনার নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দেন (২৬ : ২১৪)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোত্রদের ডেকে বললেন, হে বানু ফিহর, হে বানু আদী, তোমরা সতর্ক হও। আবু হুরায়রা রা. বলেনে যে, যখন কুরআনের এই আয়াত নাযিল হল: (হে মুহাম্মদ) আপনার নিকট আত্মীয় বর্গকে সতর্ক করে দেন (২৬ : ২১৪)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়।
হাদীস নং ২৫৬৬
আবুল ইয়ামান রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন আল্লাহ তা’আলা কুরআনের এই আয়াতটি নাযিল করলেন, (হে মুহাম্মদ) আপনার নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দেন (২৬ : ২১৪)। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়। কিংবা অনুরূপ শব্দ বললেন, তোমরা (আল্লাহর আযাব থেকে) আত্মরক্ষা কর। আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে বানু আবদ মানাফ ! আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব ! আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে সাফিয়্যা ! রাসূলুল্লাহর ফুফু, আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। হে ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ ! আমার ধন-সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমাদের কোন উপকার করতে পারব না। আসবাগ রহ. ইবনে ওয়াহব রহ……….আবু হুরায়রা রা. থেকে হাদীস বর্ণনায় আবুল ইয়ামান রহ.-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদীস নং ২৫৬৭
কুতাইবা রহ………আনাস রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন দেখতে পেলেন যে, এক ব্যক্তি কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে বললেন, এর উপর সওয়ার হও। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এটি তো কুরবানীর উট। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তৃতীয়বার বা চতুর্থবার তাকে বললেন, তার উপর সওয়ার হয়ে যাও, দুর্ভোগ তোমার জন্য কিংবা বললেন, তোমার প্রতি আফসোস।
হাদীস নং ২৫৬৮
ইসমাঈল রহ………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন যে, সে একটি কুরবানীর উট হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে বললেন, এর উপর সওয়ার হও। সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এটি তো কুরবানীর উট। তিনি দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার তাকে বললেন, এর উপর সওয়ার হয়ে যাও, দুর্ভোগ তোমার জন্য।