Site icon BnBoi.Com

পৃথিবীর ইতিহাস – ১ম খণ্ড (প্রাচীন ভারতবর্ষ)

সূচনা (পৃথিবীর ইতিহাস – ১ম খণ্ড)

সঙ্কল্প :
এ পর্য্যন্ত ভারতের কোনও ভাষায় “পৃথিবীর ইতিহাস” প্রকাশিত হয় নাই। আমাদের সঙ্কল্প—আমরা বাঙ্গালা ভাষায় সেই “পৃথিবীর ইতিহাস” প্রকাশ করিব। বহু দিন হইতেই এ কল্পনা আমাদের মনোমধ্যে উদয় হইয়াছিল; বহু দিন হইতেই এতৎ-সম্পর্কে আমাদের সেই অভীষ্ট-সিদ্ধির সুযোগ উপস্থিত। এই “পৃথিবীর ইতিহাস”—এক বিরাট কল্পনা; অন্যূন ত্রিংশ খণ্ডে সম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা। সে হিসাবে, এই গ্রন্থ-খণ্ড—ভূমিকা মাত্র। পৃথিবীর সকল দেশের সর্ব্ববিধ জ্ঞাতব্যতত্ত্ব বাঙ্গালা ভাষার এই “পৃথিবীর ইতিহাসে” সন্নিবিষ্ট করিব,—ইহাই আমাদের অভিলাষ। এ পর্য্যন্ত ইংরেজী প্রভৃতি ভাষায় যে সকল “পৃথিবীর ইতিহাস” প্রকাশিত হইয়াছে; আমাদের আকাঙ্খা—আমরা এই ইতিহাসে তদপেক্ষা অধিক বিষয়ের আলোচনা করিতে প্রয়াস পাইব।

প্রথম ভারতবর্ষ :
ভারতবর্ষেই আমরা সর্ব্ববিষয়ের আদিভূত বলিয়া মনে করি। সুতরাং “পৃথিবীর ইতিহাসে” ভারতবর্ষের প্রসঙ্গই প্রথমে উত্থাপন করিলাম। পূর্ব্বেই বলিয়াছি,—এই গ্রন্থ ভূমিকা মাত্র। প্রকারান্তরে ভারতবর্ষের ইতিহাসেরও ইহা ভূমিকা মাত্র। ভারতবর্ষের ইতিহাস বুঝিতে হইলে, প্রথমে শাস্ত্র-তত্ত্ব বুঝিবার আবশ্যক হয়। শাস্ত্র-গ্রন্থের সহিত ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাস ওতঃপ্রোত বিজড়িত। সুতরাং আমরা এই গ্রন্থে প্রথমে সংক্ষেপে বেদ-পুরাণাদি শাস্ত্র-গ্রন্থের পরিচয় দিবার চেষ্টা করিয়াছি। তার পর, তাহা হইতে ক্রমে ক্রমে পুরাতত্ত্ব উদ্ধারের প্রয়াস পাইয়াছি। অন্যান্য দেশের ইতিহাসের তুলনায় ভারতবর্ষের ইতিহাসের একটু বিশেষত্ব আছে। সে বিশেষত্ব—অন্যান্য দেশের ইতিহাসে প্রকাশ, তত্তদ্দেশ অবনত অবস্থা হইতে দিন দিন উন্নতির পথে অগ্রসর হইতেছে; কিন্তু ভারতবর্ষের পুরাতন আলোচনায় আমরা বুঝিতে পারি, ভারতবর্ষ উন্নত ছিল, যুগ বিবর্ত্তনে এখন অবনতির পথে প্রধাবিত হইয়াছে। সে হিসেবে, অন্যান্য দেশে প্রথমে জাতির অভ্যুদয়, পরে সভ্যতার সহিত তাহাদের ইতিহাসের সৃষ্টি; কিন্তু ভারতবর্ষে প্রথমেই সভ্যতা, প্রথমেই সভ্যতার আদিভূত শাস্ত্র-গ্রন্থের অভ্যুদয়। সেজন্যও আমরা প্রথমে শাস্ত্রাদির পরিচয় প্রদান করিয়া পরিশেষে অন্যান্য বিষয়ের আলোচনায় প্রবৃত্ত হইয়াছি।

Exit mobile version