• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
শুক্রবার, জুন 6, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

সমাজ ও বিবাহ – অতুলচন্দ্র গুপ্ত

Somaj O Bibah By Atulchandra Gupta

এই খসড়া অনুসারে আইন পাশ হলে তা কার্যকরী হবে ইংরেজি ১৯৪৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে, অর্থাৎ এখন থেকে তিন বছর পরে।* আগামী তিন বছরে ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় অবস্থা-তার শাসনযন্ত্র ও আইন-প্রণয়নের বিধি ব্যবস্থা কেমন দাড়াবে তা অনিশ্চিত। কারণ তা প্রায় সম্পূর্ণ নির্ভর করবে বর্তমান যুদ্ধের গতি ও পরিণতির উপর। কিন্তু এই অনিশ্চয়ের মধ্যেই এই প্ৰস্তাবিত আইনের আলোচনা প্রয়োজন। ভারতবর্ষের ভাবী রাষ্ট্রচেহারা যা-ই হোক এ মহাদেশের হিন্দু জনসাধারণকে তাদের বিবাহ-বিধির নানা পরিবর্তনের প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখতেই হবে। চলতি রাষ্ট্র-ব্যবস্থার বদল ঘটলে সে প্রয়োজন কমবে না, বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বছর তিনেক পূর্বে অলকা’ পত্রিকায় ‘বাঙ্গালী হিন্দু’ নাম দিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম। সে লেখা অনেক লোকে পড়েছেন এমন দুরাশা ও অহংকার মনে রাখি না। সুতরাং সংক্ষেপে বলছি, সে প্রবন্ধে দেখাতে চেষ্টা করেছি যে, বর্তমান হিন্দু-সমাজে ঐক্যের, ও একতায় যে বল আনে সে বলাধানের প্রধান অন্তরায় জাতিভেদের গণ্ডিতে আমাদের শতধা বিভক্ত সমাজ। হিন্দুশাস্ত্ৰ-বৰ্ণিত বৰ্ণভেদের সঙ্গে আধুনিক জাতিভেদের জটিলতা ও অন্ধ কঠোরতার মিল খুব কম, এবং এ জাতিভেদ মরণে দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ জাতি ছাড়া বর্তমান পৃথিবীতে আর কারও কাম্য হতে পারে না। সে প্রবন্ধে আরও বলেছিলাম যে, এ জাতিভেদের ভিত্তি জাতির গণ্ডির বাইরে বিবাহের নিষিদ্ধতায়। এ নিষেধবিধিকে দূর না করলে হিন্দু-সমাজ কোনও দিনই দৃঢ়বদ্ধ এক সমাজ হয়ে গড়ে উঠবে না। এবং দেখাতে চেষ্টা করেছিলাম যে, এই নিষেধের সমর্থনে বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক যুক্তি নাম দিয়ে যা সব বলা হয় সেগুলি যা আছে—তার সমর্থনে মনগড়া কল্পনামাত্র, সত্যে তাদের কোনও ভিত্তি নেই। এই নিষেধকে বহাল রেখেও আমাদের জাতিগত ভেদবুদ্ধিকে এড়িয়ে হিন্দু-সমাজে সংহতি আনার আর যে-সব চেষ্টা-যেমন অ-জলচল জাতির হাতে মাঝে মাঝে সভা করে জল খেয়ে তাদের কৃতাৰ্থ করা, বছরে একবার তাদের সঙ্গে একপঙক্তিতে ভোজন করে তাদের সঙ্গে ভ্ৰাতৃত্ব-স্থাপন—সম্পূর্ণ পণ্ডশ্রম, নিজের মন ও পরের মনকে ফাকি দেওয়া। শুয়ে শুয়ে হাত পা ছুড়ে খুব এগিয়ে যাচ্ছি কল্পনা আত্মপ্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।

প্রস্তাবিত আইনে জাতিভেদের এই নিষিদ্ধ গণ্ডি কতটা দূর হয়েছে এ প্রবন্ধের তাই প্রধান আলোচ্য। প্রসঙ্গত এ খসড়ার অন্য মূল বিষয়গুলির কিঞ্চিৎ আলোচনা করব। আইন করে জাতিভেদ দূর করা যাবে না জানা কথা। কিন্তু হিন্দু-সমাজের ভিতরে যদি এ গণ্ডিকে লঙ্ঘনের বেগ সঞ্চিত হয়ে থাকে। তবে আইন নানা বাধা দূর করে তার গতিৰ পথে সহায় হতে পারে।

২

এই খসড়ায় দুই রকমের বৈধ হিন্দু-বিবাহ স্বীকৃত হয়েছে –শাস্ত্রীয় বিবাহ ও লৌকিক বিবাহ। শাস্ত্রীয় বিবাহে অসবর্ণ, সপিণ্ড, একগোত্র ও সমান প্রবর বীরকন্যার মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ। হোমাগ্নি-সাক্ষাতে মস্ত্ৰোচ্চারণ ও সপ্তপদীগমন এ বিবাহ-সিদ্ধির প্রয়োজনীয় অনুষ্ঠান। তবে কোনও দেশাচার বা জাতি ও উপজাতি প্রভৃতির মধ্যে প্রচলিত রীতি ও আচার অনুযায়ী বিবাহও বৈধ শাস্ত্রীয় বিবাহ বলে গণ্য হবে। লৌকিক বিবাহে বর্ণ-পিণ্ড-গোত্র-প্রবারের বাধা নেই। বরবধু এই আইনের নির্দিষ্ট কোনও সম্পর্কে সম্পর্কিত না হলেই তাদের মধ্যে বৈধ বিবাহ সিদ্ধ হতে পারবে। এই আইন-নিষিদ্ধ সম্পর্কগুলি হচ্ছে একের সঙ্গে অন্যের সন্তান সম্পর্ক, ভ্রাতা-ভগ্নী সম্পর্ক, পিতৃব্য-ভ্ৰাতৃকন্যা কি মাতুল-ভগিনীকন্যা সম্পর্ক ও পিতৃম্বসা-ভ্রাতুষ্পপুত্ৰ কি মাতৃম্বসা-ভগিনীপুত্র সম্পর্ক। প্রাদেশিক গভর্নমেন্টের নিযুক্ত জনৈক কর্মচারী ও তিনজন সাক্ষীর সমক্ষে বরবধুর পরস্পরককে স্বামী-স্ত্রী রূপে গ্রহণের অঙ্গীকার এ বিবাহের প্রযোজনীয় অনুষ্ঠান। শাস্ত্রীয় ও লৌকিক এ দু’রকম বিবাহেরই ব্যাবহারিক ফল সমান। উভয় প্রকারে বিবাহিত স্বামী-স্ত্রী ও তাদের সন্তান-সন্ততিরা এক হিন্দু-দায়াধিকার আইনে শাসিত হবে। লৌকিক বিবাহের ফলে কেউ তার পরিবার থেকে বিচুত হবে না বা দেবোত্তর প্রভৃতির সেবায়েতি বা অধ্যক্ষতা থেকে ৰঞ্চিত হবে না। দত্তক গ্রহণের ক্ষমতা লোপ হবে না, এবং লৌকিক বিবাহকারী পুত্রকে মৃত গণ্যে তার পিতার দত্তক গ্রহণের ক্ষমতা হবে না।

অভিজ্ঞ ব্যক্তিমাত্রই বুঝবেন যে, এই নতুন আইনের হিন্দু-বিবাহবিধি বর্তমান কালে হিন্দুর বৈধ বিবাহের, অর্থাৎ হিন্দুর যে বিবাহ ইংরেজের আদালতে বৈধ বলে স্বীকৃত হয়, তারই ঈষৎ পরিবর্তিত সংস্করণ। শাস্ত্রীয় বিবাহে প্রচলিত হিন্দু-বিবাহের সমস্ত বিধিনিষেধ বহাল আছে। কেবল বরকন্যার সপিণ্ডত্ব নির্ণয়ে পিতৃপক্ষে সাত ও মাতৃপক্ষে পাঁচ পুরুষ গণনার একটা নিয়ম বেঁধে দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রকম প্রচলিত গণনারীতির একটা সমন্বয় করা হয়েছে। এবং অসবর্ণ-বিবাহের নিষেধে বলা হয়েছে যে, ব্ৰাহ্মণ, ক্ষত্ৰিয়,বৈশ্য, শূদ্র, —এই চার মূল বর্ণের গণ্ডি ভেঙে বিবাহ নিষিদ্ধ, কিন্তু প্রতি বর্ণের মধ্যে যে সব জাতি ও উপজাতি আছে তাদের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ নয়। এ রকম বিবাহের বৈধত্ব ইংরেজের আদালতে অনেক দিন থেকে স্বীকৃত হয়ে আসছে। যদিও সকল স্থানে এ নিয়মের প্রয়োগ সহজ নয়, এবং অনেক স্থানে সন্দেহহীন প্রয়োগ অসম্ভব। কারণ বর্তমান হিন্দু-সমাজ বহু বিচিত্র জাতিতে বিভক্ত, তার অনেক জাতি কোন মূল বর্ণের অন্তর্গত তার নির্ণয় দুরূহ। এ সব জাতির উৎপত্তির শাস্ত্রীয় ইতিহাস হচ্ছে যে, এরা চারবর্ণের মিশ্র-বিবাহের ফলে উৎপন্ন সংকর জাতি, বা ওই সংকরজাতিগুলির মধ্যে মিশ্র-বিবাহের ফলে উৎপন্ন অতিসংকর বা প্রকীর্ণসংকর জাতি বা ওই প্রকীর্ণজাতিগুলির মধ্যে মিশ্র বিবাহের ফলে উৎপন্ন প্রকীর্ণসংকরজাতি। শাস্ত্ৰে সংকর ও প্রকীর্ণসংকরজাতির অনেকগুলির নাম আছে, কিন্তু যেমন মিতাক্ষরাকার বলেছেন সেগুলি দৃষ্টান্তমাত্র-প্রদর্শনাৰ্থমুক্তং, কারণ ‘সংকীর্ণ সংকরজাতনামানস্তাদ্বক্তৃমশক্যত্বাৎ’-সংকীর্ণসংকরজাতিগুলির সংখ্যা অনন্ত জন্য নিঃশেষে তাদের নাম বলা যায় না। এই সংকর ও সংকীর্ণসংকরজাতিগুলি কোনটি কোন বর্ণের অন্তর্গত তার নির্ণয়ের নিয়ম কি? যে জাতিগুলি অনুলোম, অর্থাৎ উচ্চ বৰ্ণ-জাতি পুরুষের সঙ্গে নিম্ন বর্ণ-জাতি স্ত্রীর বিবাহের ফল। —তাদের সম্বন্ধে একটা নিয়ম পাওয়া যায় যে, সস্তানের বর্ণ হবে মাতার বর্ণ। যেমন শঙ্খ বলেছেন, ‘ব্রাহ্মণেন ক্ষত্রিয়ায়ামুৎপাদিতঃ ক্ষত্ৰিয় এবং ভবতি, ক্ষত্ৰিয়েণ বৈশ্যায়াং বৈশ্য এবং ভবতি’ ইত্যাদি, যদিও শঙ্খবচনের যথার্থ অর্থ অর্থাৎ বিবক্ষা নিয়ে বিবাদ আছে। কিন্তু প্রতিলোম অর্থাৎ নিম্ন বর্ণ-জাতি পুরুষের সঙ্গে উচ্চ বর্ণ-জাতি স্ত্রীর বিবাহের ফলে যে সব সংকর জাতির উৎপত্তি তাঁরা কোন বর্ণের অন্তর্গত? অর্বাচীন অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত আধুনিক স্মৃতি যা এখন প্রচলিত, তাতে প্রতিলোম বিবাহ অতি নিন্দিত। শাস্ত্ৰমতে সূত-বৈদেহিক-চাণ্ডাল-মাগধ প্রভৃতি জাতি প্রতিলোম বিবাহে উৎপন্ন। শাস্ত্ৰে স্পষ্ট নির্দেশ না থাকলেও মোটের উপর বলা যায় যে, এরা সকলেই শূদ্রবর্ণের অন্তর্গত। কিন্তু সংকর জাতির বর্ণনির্ণয়ের জটিলতার এখানেই শেষ নয়। যদি ধরেই নেওয়া যায় যে, বর্তমানে কোনও জাতির নাম যদি শাস্ত্ৰবৰ্ণিত কোনও সংকর জাতির নাম হয় তবে নামসাদৃশ্যে সে জাতিকে শাস্ত্রোক্ত সংকরজাতি বলে গণ্য করতে হবে, তা হলেও অনেক জাতি এখন রয়েছে যাদের নাম কোনও প্রামাণিক শাস্ত্রগ্রন্থে নেই। এ সব জাতির বর্ণ নির্ণয় করতে হলে জানতে হবে তাদের উৎপত্তির ইতিহাস। বহুস্থলেই এ ইতিহাসের কোনও মালমশলা নেই। এ রকম জাতির উৎপত্তির ইতিহাস নামে যা চলে তার লক্ষ্য সত্য-নির্ণয় নয়, তার উদ্দেশ্য জাতির সিঁড়িতে নিজের জাতিকে দু-এক ধাপ টেনে তোলা, বা পাশের জাতিকে দু-এক ধাপ নীচে ঠেলা। বাংলাদেশ থেকে পরিচিত দৃষ্টান্ত নেওয়া যাক। বাংলার বৈদ্যারা অনেক দিন থেকে দাবি করে আসছিলেন যে তাঁরা শাস্ত্রোক্ত ‘অম্বষ্ঠ’ জাতি, অর্থাৎ ব্রাহ্মণের বৈশ্য স্ত্রীর সন্তানেরা তাদের আদি পুরুষ। ‘বিপ্ৰান্মুধাবসিক্তো হি ক্ষত্রিয়ায়াং বিশঃ স্ক্রিয়াম অম্বষ্ঠঃ’ (যাজ্ঞবল্ক্য)। সুতরাং শঙ্খস্মৃতির বচন অনুসারে তাঁরা বৰ্ণে বৈশ্য ও দ্বিজ। বাংলার হিন্দু-সমাজে এ দাবি মোটের উপর গ্রাহ্য হয়েছিল। সম্প্রতি অনেক বাঙালি বৈদ্য বলছেন যে প্রকৃতপক্ষে তাঁরা বর্ণে ব্ৰাহ্মণ। বৈদ্যরা যে ‘অম্বষ্ঠ’ সুতরাং বৰ্ণে বৈশ্য, তার প্রধান প্রমাণ ছিল যে, অম্বষ্ঠের শাস্ত্ৰবিহিত বৃত্তি হচ্ছে চিকিৎসা‘সূতানামশ্ব-সারথমম্বষ্ঠানাং-চিকিৎসনম (মনু); এবং ইংরেজের আগমনে বৃত্তিতন্ত্র ভঙ্গের পূর্বে বৈদ্যদের জাতিগত বৃত্তি ছিল চিকিৎসা ও মোটের উপর তাঁরা দ্বিজের আচার পালন করতেন। বৈদ্যরা ব্ৰাহ্মণ, এর সমর্থনে এ রকম প্রমাণের অভাব হওয়ার কথা নয়। সত্য যেখানে অজ্ঞাত, কল্পনা সেখানে অবারিত। বাংলার কায়স্থেরা নিজেদের শূদ্র বলেই স্বীকার করে আসছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের এক নজির আছে যে কায়স্থের ছেলের সঙ্গে তাতির মেয়ের বিবাহ সিদ্ধ, কারণ দুজনেই শূদ্রবর্ণের অন্তর্গত। সকলেই জানেন অনেক বাঙালি কায়স্থ দাবি করছেন যে প্রকৃতপক্ষে কায়স্থেরা ক্ষত্ৰিয়বৰ্ণ, এবং তাঁরা দ্বিজোচিত আচারও পালন করছেন। যে প্রমাণে বাংলার বৈদ্যারা নিজেদের বৈশ্য কি ব্ৰাহ্মণ বলেন বাঙালি কায়স্থের ক্ষত্ৰিয়ত্বের পোষকে সে রকম প্রমাণ উপস্থিত করা কিছু কঠিন নয়। আদালতে এ রকম সব দাবি উপস্থিত হলে কোন প্রমাণে তার বিচার হবে? কোন শাস্ত্ৰ, ইতিহাস কি প্রত্নতত্ত্ব প্রমাণ বলে গ্রাহ্য হবে? অথবা অনতিকাল পূর্বের দেশাচারই হবে সবচেয়ে গ্রাহ্য প্রমাণ? সুতরাং প্রস্তাবিত আইনের অসবর্ণ-বিবাহের বিধি-নিষেধ শুনতে যত সরল, তার ব্যাবহারিক প্রয়োগ তত সহজ নয়। অধিকন্তু এর মূলেই আছে বড় গলদ। সংকর জাতিগুলির উৎপত্তির যে শাস্ত্ৰেতিহাস, হিন্দুর অনেক জাতিকে তার কাঠামে কিছুতেই ফেলা যায় না। কারণ স্বীকার না করে উপায় নেই যে অনেক জনসমষ্টি চারবর্ণের বাইরে থেকে এসে একটা জাতির নাম নিয়ে হিন্দুসমাজে মিশে গেছে। সে সব জাতির বর্ণনির্ণয়ে তাদের উৎপত্তির সত্য ইতিহাস অবাস্তর। কাল্পনিক ইতিহাস সৃষ্টি করলেই তবে তাদের বর্ণ-নিরূপণ সম্ভব হয়।

Page 16 of 19
Prev1...151617...19Next
Previous Post

তিতাস একটি নদীর নাম – অদ্বৈত মল্লবর্মণ

Next Post

শিক্ষা ও সভ্যতা – অতুলচন্দ্র গুপ্ত

Next Post

শিক্ষা ও সভ্যতা - অতুলচন্দ্র গুপ্ত

প্রবন্ধাবলী - অতুলচন্দ্র গুপ্ত

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In