একটা ছোট পরিবার। বাবা, মা এবং ছোট্ট একটি মেয়ে। তারা একদিন সকাল বেলা নাস্তা করছে। ছোট মেয়েটা হঠাৎ ভুল করে চায়ের কাপ ফেলে দেয় বাবার ইস্ত্রি করা শার্টের উপর। বাবা তো রেগে আগুন! মেয়েকে প্রচন্ড একটা ধমক দিলেন, স্ত্রীকে বকাবকি করলেন, কেন সে চায়ের কাপ টেবিলের কিনারে রাখল? বকা খেয়ে আহ্লাদি মেয়েটি জোরে কেঁদে উঠল।
কিছুক্ষণ পর শার্ট পাল্টিয়ে এসে বাবা দেখেন তার মেয়ে তখনও কান্না করছে, খাবার এখনো শেষ করেনি। তিনি আরো ধমকালেন মেয়েকে। মেয়ে আরো বেশি কান্না করতে শুরু করল। ইতিমধ্যে মেয়ের স্কুলের বাসটাও চলে গেল। এখন বাবাকেই স্কুলে পৌঁছে দিতে হবে। এসব ভেবে। বাবার মনে আরো রাগ জমে উঠল।
মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দেবার পথে স্বাভাবিকের চাইতে জোরে গাড়ি চালাতে গিয়ে জরিমানা গুণতে হলো। যে মেয়ে প্রতিদিন বাবাকে বাই না বলে স্কুলে ঢোকে না, সেই মেয়ে আজ বাবাকে বিদায় না জানিয়ে এক দৌড়ে চলে গেল স্কুলে।
তিনি অফিসে পৌঁছালেন ১৫ মিনিট দেরি করে। খেয়াল করে দেখ তাড়াহুড়োয় অফিসের ব্রিফকেস আনতে ভুলে গেছেন। এখন আরো বিপদ অফিসের বস তার উপর চড়া। দিন তীব্র খারাপের দিকে যেতে লাগল। অফিসের কাজও ঠিকমত হলো না। রাত্রে অফিস শেষে বাসায় এসে দেখলেন মেয়ে ঘুমিয়ে গেছে।
অথচ অন্যদিন বাবা আসলেই সবার আগে মেয়ে দৌড়ে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে, জিজ্ঞেস করে বাবা, আমার জন্যে কী এনেছ? আজ সে আসলো না। তার স্ত্রীও আজ অনেকটাই নীরব। তিনি একা একা খাওয়া-দাওয়া করলেন। তারপর ঘুমিয়ে পড়লেন। দিনটা তো খারাপ গেলই, এখন রাতটাও। এভাবে পরিবারের মাঝে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হলো।
অথচ গল্পটা যদি এমন হতো,
ছোট্ট মেয়েটা ভুল করে চায়ের কাপ ফেলে দিল। ফেলে দিয়েই ভয় আর অনুশোচনায় সে কান্না করতে শুরু করলেই বাবা তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন- থাক, সমস্যা নেই। আমিও অনেকবার আমার বাবার গায়ে চা ফেলেছি। তবে হ্যাঁ, এখন থেকে সাবধান, ঠিক আছে?
মেয়েটা একটু হেসে বলল- আচ্ছা বাবা, আর হবে না। মেয়ে তখন স্কুলে গেল। বাবা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে সুন্দর করে ৫ মিনিট আগেই অফিসে পৌঁছালেন। অফিসের বস তার কাজের প্রশংসা করলেন। সারাদিন অফিসে কাজ করে রাতে বাসায় আসতেই মেয়েটা দৌড়ে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরল, বাবার আনা চকলেটগুলো একটা একটা করে খেতে লাগল। পুরো পরিবার হাসি আর আনন্দের সাথে ডিনার করল। একটি সুখী ও সুন্দর পরিবার দেখা গেল।
দিনটা অনেক সুন্দর গেল, তাই না? প্রথম গল্প আর শেষ গল্পের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। প্রথম গল্পে বাবার মেজাজের কারণে পুরো দিনটাই খারাপ গেল পরিবারের সবার জন্য। আর পরের গল্পটা খুব সহজেই সুন্দর সমাপ্তিতে পৌঁছালো শুধুমাত্র বাবা তার মেজাজ ঠিক রেখেছেন বলে। স্টিফেন কভে বলেন, প্রথম ঘটনাটি পুরোটাই বাবার দোষ। কারণ, চায়ের কাপ পড়ে যাবার মতো আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর মধ্যে ১০% এমন ঘটনা থাকে যেগুলোর উপরে আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কিন্তু ওই ১০% অনিচ্ছাকৃত ঘটনার উপর আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, সেটার উপর নির্ভর করে বাকি ৯০% ঘটনা ঠিকভাবে যাওয়া না যাওয়া।
প্রথম গল্পে বাবা ১০% সেই ঘটনাটি নিয়েই ভেবেছেন, নেতিবাচকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ফলাফল? একটি বাজে দিন। দ্বিতীয় গল্পে বাবা সেই ১০% ঘটনাটিকেই অনিয়ন্ত্রিত ভেবে ধরে নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ফলাফল? একটি ভালো দিনের সমাপ্তি।
আমাদের জীবনে অনেক সময় এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যেগুলোতে আমাদের কোনো হাত না থাকলেও তাতে অনেক সমস্যা হয়। ধরো, স্যুটেড বুটেড হয়ে প্রেজেন্টেশন দিতে যাচ্ছ, হঠাৎ উপর থেকে একটা কাক তোমার কালো স্যুটে প্রাকৃতিক কর্ম সেরে দিল। এখন তুমি তো আর কাককে আক্রমণ করতে পারবে না, বিষয়টি মেনে নিয়ে তোমাকে স্যুট পরিষ্কার করার উপায় খুঁজতে হবে। তাহলেই দিনটা খারাপ না হয়ে ভালোর দিকে যাবে।
এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যায়। আসল কথা হলো, তোমার সুখ, তোমার সাফল্য সবই নিজের কাছে। তুমি চাইলেই পার এসব বদলাতে। তোমার ইচ্ছাশক্তিই আসলে নিয়ন্ত্রণ করবে তোমার জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য।
.
হয়ে ওঠো পাওয়ার পয়েন্টের জাদুকর
পাওয়ার পয়েন্ট নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভাসে সেই অতি পরিচিত, সফটওয়্যারটি, প্রেজেন্টেশন বানানোর ক্ষেত্রে যার বিকল্প নেই বললেই চলে। দারুণ দরকারি এই সফটওয়্যারটির কাজের ক্ষেত্র কিন্তু শুধমাত্র প্রেজেন্টেশনেই সীমাবদ্ধ নেই! বরং বলতে গেলে প্রেজেন্টেশনের স্লাইড বানানো পাওয়ার পয়েন্টের অনেকগুলো কাজের একটা মাত্র। মজাদার এই পাওয়ার পয়েন্ট দিয়ে দারুণ সব কাজ করে ফেলা যায়, যেগুলো তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে তোমাকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে অন্যদের থেকে। তাহলে চলো দেখে আসা যাক পাওয়ার পয়েন্টের জাদু!
১. খুব সহজে ভিডিও বানানো
পাওয়ার পয়েন্ট দিয়ে যে ভিডিও বানানো যায়, ব্যাপারটা শুনে অবাক হলে বুঝি? আসলেই পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার করে দারুণ সব ভিডিও তৈরি করা সম্ভব। দরকার শুধু সঠিক ব্যবহারটা জানা। আমরা অনেকেই কিন্তু দেখেছি পাওয়ার পয়েন্টের সাহায্যে এনিমেশন করা। একটা লেখা বা ছবি অন্য দিকে চলে যায়, উড়তে থাকে- এমন কত কী। এগুলোকে যদি সেভ করার সময় mp4 এ কনভার্ট করা যায়, তাহলেই দারুণ মজাদার এবং কাজের সব ভিডিও বানানো খুবই সম্ভব!