- বইয়ের নামঃ কমিউনিকেশন হ্যাকস
- লেখকের নামঃ আয়মান সাদিক
- বিভাগসমূহঃ শিক্ষামূলক বই
১. কমিউনিকেশন হ্যাকস কী?
কমিউনিকেশন হ্যাকস
আয়মান সাদিক ও সাদমান সাদিক
দয়া করে বইটি পড়বেন না
যদি…
…কেবল নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য কমিউনিকেশন শিখতে চান। কারণ, আপনি এই বইতে শক্তিশালী কিছু কৌশল শিখতে যাচ্ছেন যেগুলো অন্যদের উপর আপনার একটা বাড়তি সুবিধা দিবে বাকি সারাটা জীবনের জন্য। কিন্তু, আমরা চাই আপনি এই ক্ষমতাকে ভালো কাজে ব্যবহার করেন। কমিউনিকেশন তখনই আসলে সফল হয় যখন উভয় পাশেরই লাভ হয়। একপাশের লাভ আর অন্য পাশের ক্ষতিকে সোজা বাংলায় প্রতারণা বলে। তাই, এই বইতে আপনি যা কিছুই শিখবেন, দয়া করে পৃথিবীতে আরও বেশি বোঝাঁপড়া তৈরিতে ব্যবহার করবেন। যদি অন্য উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে আমরা অনুরোধ করবো যেন আপনি এই বইটি অন্য কাউকে দিয়ে দেন, অথবা বইটি না কিনে ওই টাকা দিয়ে নিজের পছন্দের কিছু একটা খেয়ে ফেলেন।
তো আশা করি, আপনি যদি পরের পৃষ্ঠায় যেতে চান তাহলে আমাদের শর্ত মানছেন। আমরা ভরসা করতে চাই যে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই ভালো এবং তারা ভালো করতে চায়। আর ভালো কমিউনিকেশন দিয়ে পৃথিবী পাল্টে ফেলা যায়। সেই আশা নিয়ে চলুন, শুরু করা যাক কমিউনিকেশন হ্যাকস!
কমিউনিকেশন হ্যাকস –কাদের জীবনে লাগবে?
তুমি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকো
স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই যদি তুমি কমিউনিকেশনে এক্সপার্ট হয়ে যাও, তাহলে তোমার সামনে গিয়ে নেটওয়ার্ক অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে কারিজম্যাটিক স্টুডেন্টটাকে খেয়াল করলে দেখবে, তার মূল কারিজমা হচ্ছে তার কমিউনিকেশন স্কিল। তুমি অন্য সব কিছুতে ডাব্বা মারলেও, এই এক কমিউনিকেশন স্কিল দিয়ে বহুদূরে এগিয়ে যেতে পারবা।
যদি পেশাগত জীবনে আরও ভালো করতে চান
বর্তমান সময়ে পেশাগত জীবনে সফট স্কিলস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সফট স্কিলস-এর লিস্টে একদম উপরে থাকে ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন স্কিলস। লিডারশিপের জন্য আপনি যেই জায়গাতেই যান না কেন, কমিউনিকেশন স্কিলস লাগবেই। তাই, কর্পোরেট ক্যারিয়ারে যদি আপনি নিজেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে নিতে চান, তাহলে এই বইটি আপনার জন্য। সাইকোলজি, সেলস এবং কমিউনিকেশন স্কিলস একসাথে মিলিয়ে কীভাবে আপনি আপনার সেরাটা দিতে পারবেন, সেটা এই বইতে চ্যাপটার বাই চ্যাপটার আমরা এক এক করে শিখবো।
যদি নিজেকে কমিউনিকেশন এক্সপার্ট করতে চান
পৃথিবীর অনেকগুলো সেরা কমিউনিকেশন, সেলস এবং সাইকোলজি বিষয়ক বইগুলো রিসার্চ করে লোকাল উদাহরণ দিয়ে এই বইটি লিখা হয়েছে। তাই, আপনি একদম নিজের ক্ষেত্রে নিজের ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার করার জন্য এমন অনেক টিপস এবং ট্রিক্স পাবেন, যেগুলো আজকে থেকেই প্রয়োগ করতে পারবেন এবং ফলাফল পাবেন।
আপনি যদি ডিজিটাল জগতে কাজ করেন
কমিউনিকেশন নিয়ে যত কিছু শেখানো হয় এবং যত কন্টেন্ট আছে, অধিকাংশই অ্যানালগ যুগের। ডিজিটাল যুগের সাথে কমিউনিকেশনে। যে ইনোভেশনগুলো এসেছে, সেগুলোর কথা মাথায় রেখে এই বইতে চ্যাপটারগুলো লিখা হয়েছে। আপনি কমিউনিকেশনের যেই হ্যাকগুলো শিখবেন, সেগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারবেন তো বটেই, তার উপর ডিজিটাল মাধ্যমগুলোতেও পেশাদার কাজে বেশ ভালো ফলাফল দিবে।
কমিউনিকেশন হ্যাকস কী?
এই পৃষ্ঠাটি তাদের জন্য যারা কমিউনিকেশন হ্যাকস জীবনে প্রথমবারের মত শুনছেন। কমিউনিকেশন হ্যাকস নিয়ে প্রাথমিক ধারণা থাকলে আপনি এখনই সরাসরি বইয়ের কন্টেন্টে ঝাঁপিয়ে পড়ন। এই বইটি সিরিয়ালি পড়ার কোনে বাধ্যমাধকতা নেই। যেকোনো পৃষ্ঠা থেকে পড়লেও আপনি নতুন কিছু না কিছু শিখবেন।
কখনও বড় কর্মকর্তা বা নেতাদের স্কিল সেট পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন কি? দেখে না। থাকলে এখন একটু চিন্তা করে দেখেন। যে জিনিসটি সবার আগে আপনার চোখের। সামনে কিংবা মনে ভেসে উঠবে, সেটা হল সেই নেতার বা কর্মকর্তার কমিউনিকেশন স্কিল। তার হয়তো চার বছরের ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রি আছে, হয়তোবা সে প্লেন চালাতেও। ওস্তাদ, কিন্তু দিনশেষে তার দৈনন্দিন কাজে যেই জিনিসটি সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। সেটা হল তার কমিউনিকেশন স্কিল।
এখন টেক্সটবুকের ভাষায়, কমিউনিকেশন হ্যাকস হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তার মধ্যে ব্যবহৃত কিছু কৌশল যা আপনার বাচনভঙ্গি এবং সর্বোপরি ইমেজকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। ফিউচার অফ স্কিলসগুলোর মধ্যে সবার জীবনে কার্যকরী। ভুমিকা রাখা স্কিলটি হল কমিউনিউকেশন।
জীবনের শুরুতে আমাদেরকে অক্ষর দান এবং আধো-আধো শব্দ শিখানোর মাধ্যমে যেই জিনিসটি শেখানো হয়, সেটা হল কমিউনিকেশন। আর পনেরো বছরের শিক্ষা জীবন শেষে শখানেক বই পড়ে, হাজারখানেক পরীক্ষা দিয়েও অনেকে নিজের মনের চিন্তাগুলো আরেকজনের সামনে প্রকাশ করতে পারে না।
কমিউনিকেশন স্কিল আবার শেখানোর কী আছে? আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষা কারিকুলামেই তো এসব জিনিস শিখে এসেছি। দরখাস্তের হাজারো নিয়ম, স্মারক লেখার কৌশল কিংবা দুই বন্ধুর মধ্যে ডায়ালগের বাহার, সবই আমাদের জানা, কিন্তু মজার বিষয় হল দিনশেষে না আমরা চিঠি লিখি, আর না আমাদের দিয়ে স্মারক লেখা হয়। শেষমেষ আমরা কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার আর ইমোতেই আমাদের দৈনন্দিন কথোপকথন সারি। কিন্তু, এসব তো কোনো কারিকুলামে ছিল না। এসব নিয়ম কোথায় পাওয়া যায় কিংবা এসব নিয়ম বানাছেহ বা কে? আমরা অবশ্য নিয়ম বানানোর দায়িত্ব নিচ্ছি না, বরং এসব মাধ্যমে কথা বলার কিছু কৌশল শিখিয়ে আপনার জীবনটাকে সহজ করার এবং আপনার কথার গুরুত্ব বাকিদের সামনে বাড়িয়ে তোলার অভিপ্রায় হল এই বইটি।