নতুন কোনো কিছু শুরু করলে সমালোচনা আসবেই। আসবে হতাশা, আসবে ব্যর্থতা। তাই বলে তুমি সব ছেড়েছুঁড়ে চলে যাবে? হাল ছেড়ে দেবে? নাকি দ্বিতীয় অপশনের মতো সব হতাশা আর সমালোচনা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে কাজে লেগে পড়বে নতুন করে?
পাশের বাসার আন্টি কেন তোমার ক্যারিয়ারের দিকপ্রান্তে থাকবে? তুমিই গড়বে তোমার ভাগ্য। আর এজন্য তোমাকেই নিতে হবে জীবনের সিদ্ধান্ত গুলো। নিজেই ভাবো জীবন নিয়ে কী করবে। যেখানে আগ্রহ, সেখানে কাজ কর। যা নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছা করে, সেটা নিয়েই এগোও। ইচ্ছাশক্তি থাকলে তোমাকে আটকাবে কে?
.
একটি কমন অভ্যাস
অভ্যাস না বলে এটিকে আসলে বদঅভ্যাস বলাই ভালো। এটি হলো, সবরকম ব্যর্থতার পেছনে আমরা ভাগ্যকে দায়ী করতে থাকি। পরীক্ষায় ফেল করলে, বলে বসলাম ভাগ্যে ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ হলে না, অজুহাত তৈরি ভাগ্য সহায় হলো না। চাকরির ইন্টারভিউতে বাদ হয়ে গেলে, তখনও সেই ভাগ্যকেই আসামি করতে হচ্ছে।
সত্যি বলতে কী, সবকিছুতে এভাবে ভাগ্যের দোষ দেবার কোনো কারণই নেই। Luck, Fate এগুলো আমাদের জীবনের অংশ বটে, কিন্তু তুমি নিজেই পারো তোমার ভাগ্য বদলাতে। তুমি চাইলেই সাফল্য আসবে, তখন আর ভাগ্যের নাম নিতেও হবে না। নিজের সাফল্য তাই তোমার নিজের কাছেই।
নিজের ভাগ্য নিজেই গড়তে চাইলে কিছু ধাপ ফলো করে দেখতে পার। আমার নিজের জীবনে এই ধাপগুলো বেশ কাজে লেগেছে, আশা করছি। তোমারও অনেক উপকারে আসবে!
ধাপ-১
শুরুটা হোক নিজের একটা লক্ষ্য ঠিক করে ফেলা দিয়ে। হ্যাঁ, সব মানুষ। সমান নয়, সবার কর্মক্ষমতা বা মেধা সমান নয়। তাই নিজের সামর্থ অনুযায়ী ঠিক করে ফেলো তুমি জীবন নিয়ে কী করতে চাও, তাহলেই সফলতার পথে এগিয়ে যেতে পারবে। চেষ্টা করবে নিজের লক্ষ্যটি নির্দিষ্ট করে সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে।
ধাপ-২
এবার চেষ্টা কর লক্ষ্য অর্জনের পথে যে ধাপগুলো পার করবে, সেগুলো একটি একটি করে কাগজে টুকে রাখার। তাহলে পেছনে ফিরে তাকালে তোমার জীবনের ভুলগুলো চোখে পড়বে, তোমার অসঙ্গতিগুলোকে ঠিক করে আগের থেকে বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে এগিয়ে যেতে পারবে।
ধাপ-৩
অঙ্গীকারবদ্ধ থাকো, যে ধরনের কাজই কর না কেন। তুমি যদি তোমার কাজের প্রতি আগ্রহী হও, সেটি নিয়ে সফল হতে চাও, তবে সবসময় অঙ্গীকারবদ্ধ থেকে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে কাজ করে যেতে হবে।
ধাপ-8
ভাগ্যকে দোষারোপ করবে না, একেবারেই না। ভাগ্য তোমার সাথে থাকবে তখনই, যখন তুমি নিজ আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে কাজ করবে। কথায় বলে না, Fortune Favours the Brave? তাই বীরত্বের সাথে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেলে ভাগ্য এভাবেই তোমার সহায় হবে।
ধাপ-৫
নিজের ভুলকে স্বীকার করাটা খুব বেশি দরকার। তুমি মানুষ, কোনো মেশিন নও যে নিখুঁতভাবে সব কাজ করবে। তোমার ভুল হতেই পারে, আর তাই সেগুলোকে অস্বীকার করবে না। নিজের ভুল স্বীকার করে সেগুলো ভবিষ্যতে আর যাতে না হয়, সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
ধাপ-৬
সময়ের সদ্বব্যবহার করতেই হবে। একজন সফল মানুষের জীবনে সময়ানুবর্তিতা খুবই দরকারি একটা কাজ। ধরো তুমি সময়ের কাজ সময়ে করলে না, ফেলে রাখলে। তাহলে পরের কাজগুলোর সাথে নতুন এই কাজটাও এসে যোগ হবে, আর তাতে পুরনো এই কাজটা আর কখনোই করার সময় হবে না। এজন্য সময়কে ঠিকভাবে কাজে লাগাও!
ধাপ-৭
আত্মনির্ভরশীল হও। পরনির্ভরশীলতা সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লে সেক্ষেত্রে তুমি সাফল্য পেলেও সেটি তোমার একার হবে না, আর তাকে আদতে সাফল্য বলা যায় কি না তাতে তুমি নিজেও সন্দিহান হয়ে পড়বে। তাই নিজের উপর নির্ভরশীল হবার চেষ্টা কর।
ধাপ-৮
জীবনে চলার পথে যেকোনো সময়, যেকোনো সিদ্ধান্ত নেবার সময় পরামর্শ নিতে লজ্জার বালাই করবে না। পরামর্শ পেতে পার তোমায় চরম শত্রুর কাছ থেকেও, পরামর্শ পেতে পার একেবারে ক্ষুদ্র কোনো ব্যক্তির কাছ থেকেও, তাই কখনো পরামর্শকে অগ্রাহ্য করবে না। মনে রাখবে, কারো পরামর্শই ফেলনা নয়, তাই সফল জীবন গড়তে এগুলোর অনে দরকার রয়েছে।
সফলতা পাওয়া খুব সহজ কোনো কাজ নয়। তাই বলে ভাগ্যের হাতে সবকিছু সঁপে দেয়াটা হবে চূড়ান্ত বোকামির পরিচয়! নিজের মতো করে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করে গেলে ভাগ্যও তোমায় সঙ্গ দেবে, দিতেই হবে!
.
পরিশ্রমকে হ্যাঁ বলো
আমাদের জীবনে ব্যর্থতা আসার অন্যতম একটা কারণ কি জানো?
আমরা আসলে পরিশ্রম করতে চাই না। আমাদের সবসময় লক্ষ্য থাকে। কীভাবে সহজে, শর্টকাটের সাহায্য নিয়ে হলেও কোনো কাজ শেষ করে ফেলতে পারবো। পরিশ্রম করতে আমাদের ইচ্ছেটা থাকে না, খুঁজতে থাকি এমন কোনো উপায় যাতে একফোঁটা ঘাম না ফেলেই কাজ করে নিতে পারব। সত্যি বলতে কি, এমন মানসিকতা প্রায়শই ব্যর্থতার জন্ম দেয়। পরিশ্রম দেখলে এই যে আমরা উল্টো পথে দৌড় দেই, এখান থেকে ফিরে আসতে পারলে কিন্তু সাফল্যের দেখাও মিলবে। তাই পরিশ্রমের রাস্তায় যাওয়ার চিন্তা করতে হবে সবাইকে। প্রশ্ন আসতেই পারে, পরিশ্রমী হতে হলে কী করতে হবে? এ প্রশ্নেরও উত্তর আছে। কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে পরিশ্রমী না হোক সেটি হবার পথে এগিয়ে যাওয়া যাবে।