৩. হারার আগেই হেরে যাবে না
আমরা প্রায়ই কোনো কাজ শুরু করার আগেই হা-হুঁতাশ শুরু করে দেই। টিমমেট নেই, যারা আছে তারা ভালো না, আইডিয়া ভালো না, টাকা নেই, সময় নেই- এরকম হাজারটা অজুহাতের ভিড়ে তোমার কাজের সফলতা কোথায় যে লুকিয়ে যায়! শেষমেষ আর তোমার কাজ করাই হয়ে ওঠে না। এমন অবস্থা হয়, তোমার কাজ শুরু করার আগে কাজে ব্যর্থতার ভীতিহ তোমাকে আর এগোতে দেয় না।
এই ভয়টাই ঝেড়ে ফেলে দেয়া দরকার। আমার খুব প্রিয় একজন বক্তা, টনি রবিন্স একটা কথা বলেছিলেন। তাঁর কথা হলো যে, রিসোর্স না থাকাটা কোনো সমস্যা নয়। আমরা যে রিসোর্সফুল নই, সেটাই একটা সমস্যা। আসলেই তাই, সব কাজে একটু রিসোর্সফুল হতে পারলেই সাফল্য আসবে।
৪. জীবনকে উপভোগ কর কাজের মধ্যে
মত্যশয্যায় যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয়, তোমার জীবন নিয়ে কি তোমার কোনো আক্ষেপ আছে? বেশিরভাগ উত্তরই হ্যাঁ বোধক আসে। সবাই বলে, তার জীবনে কোনো একটা কাজ না করে যাওয়ার হতাশাটা তার মধ্যে এখনো আছে। এই আক্ষেপ বুকে নিয়েই তাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে।
ওই মৃত্যু পথযাত্রীদের আর করার কিছু নেই। কিন্তু তোমার করার আছে অনেক কিছু। এমনভাবে কাজ শুরু কর, যাতে তোমাকেও ওই মানুষগুলোর মতো শেষ সময়ে এসে হা-হুঁতাশ করতে না হয়। জীবনে কোনো আক্ষেপ রাখার চেষ্টা করবে না। কোনো কাজ করার ইচ্ছা থাকলে শুরু করে দাও কাজ। বাধা বিপত্তি আসতেই পারে, সেগুলো পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়াই তো বীরের লক্ষণ!
একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত আমাদের সবার। আমরা ভুল করি প্রতিনিয়ত, করতেই পারি। কিন্তু এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে গেলে ওই ভুলটা আর কখনোই করি না আমরা। তাই এই শিক্ষা মাথায় রেখে এগিয়ে চলা উচিৎ কোনোরকম আক্ষেপ আর আফসোস ছাড়াই। কারণটা আমরা সবাই জানি– Life is too short to live with regrets.
.
বিনোদনের ফাঁকে ফোকাস করে নিজের উন্নতি
একটা বড় সাদা কাগজ নাও। একটা বলপয়েন্ট কলম নিয়ে কাগজের ঠিক মাঝখানটায় একটা গোল ডট দাও। এবার চোখের সামনে মেলে ধরা কাগজটা। কী দেখতে পাচ্ছ? চোখের সামনে বারবার ওই কালো ডটটাই পড়ছে? যেদিক থেকেই তাকাও, কালো ডট তোমার চোখ থেকে কিন্তু সরছেই না!
এর কারণ কি জানো? এর কারণ হলো ফোকাস। বিশাল সাদা কাগজে যখনই কালো একটা ডট আঁকা হলো, তোমার ফোকাস তখন ঠিক সে জায়গাটিতেই পড়ল। আর এজন্যেই চাইলেও আর মাথা থেকে সেই কালো ডটটাকে সরানো যায় না!
আমাদের জীবনে আমরা এমন অনেক কিছুই করি, যেগুলোর কারণে আমাদের সময় নষ্ট হয় ঠিকই, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। কোনো ভ্যালু যোগ হয় না এসব কাজ করে, তবুও নিজের বিনোদন বলো, বা পারিপার্শ্বিক কারণে বলো- কাজগুলো করেই থাকি আমরা। আজ তাই এরকম কিছু কাজ নিয়ে কথা বলব, যেগুলোয় ঠিক জায়গাটায় ফোকাস করতে পারলে নিজের অনেক বেশি উন্নতি করতে পারবে।
১. ফেসবুক
ফেসবুককে বলা যায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ। সকল বয়সের, সকল মানসিকতার সবার ফোনেই এখন ফেসবুক, তাই এই সামাজিক মাধ্যমটি থেকে বের হয়ে আসার কোনো উপায় নেই বললেই চলে! সমস্যা হলো, প্রতিদিন ফেসবুক তোমার জীবন থেকে বেশ অনেকটা সময় কেড়ে নিচ্ছে অকারণেই!
কার্যকর লেখা বা তথ্যের কথা মানলাম, কিন্তু অযথা চ্যাটিং করা কিংবা অকারণে মানুষের পোস্টে কমেন্ট করে যে সময়টা নষ্ট হচ্ছে, সেটার কী হবে? এই সমস্যার সমাধান করতেও দরকার ফোকাস। অবাক লাগছে? ভাবছো, ফোকাস করে কীভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে? আসলে ঠিক জায়গায় ফোকাস করতে পারলে ফেসবুক থেকেই অনেক উন্নতি করে নিতে পার নিজের। ফেসবুকে দেখবে অনেক শিক্ষামূলক পেজ রয়েছে, যেখান থেকে শেখা যায় অনেক কিছুই! ফেসবুক যে ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়ে আছে, সেই কমিউনিকেশন নিয়েই না হয় শিখে নিলে নিজের মতো করে! অযথা চ্যাটিংয়ে ফোকাস না করে ঠিক এই শেখার জায়গায় ফোকাস কর, ফেসবুক তোমাকে শেখাবে অনেক কিছুই!
২. ইউটিউব
খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠার আরেকটা সাইট হচ্ছে ইউটিউব। ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, কিন্তু তবুও ভিডিও দেখার এই সাইটটিতে প্রতিদিন একবারও প্রবেশ করে না এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। তরুণ প্রজন্ম দিনে এক ঘণ্টা নিশ্চিত করেই ব্যয় করে ইউটিউবের পেছনে। এই সময়টাতে ঠিক দিকে ফোকাস করলে কিন্তু ইউটিউবকেও নিজের কাজে লাগানো যায়!
ইউটিউবে কিন্তু শুধু ফানি বাংলা ভিডিওই নেই। এখানে শেখার মতো অনেক কিছুই আছে, আছে জানার অনেক কিছু। তুমি তোমার ইউটিউবের সময়টা যদি ফোকাস কর এই শেখার দিকে, তাহলেই কিন্তু সেটা অনেক কাজে লেগে যায়! কমিউনিকেশন টিপস কিংবা অন্যান্য স্কিল ডেভলাপমেন্ট নিয়ে কিছু ভিডিও দেখলে, তোমার এক ঘণ্টা মহা কাজে লেগে গেল!
৩. টেলিভিশন
টিভি দেখে দিনের একটা সময় ব্যয় করে না এমন মানুষ পাওয়া বেশ কঠিন। হ্যাঁ, ফেসবুক-ইউটিউবের যুগে টিভির জনপ্রিয়তা কিছু কমেছে, কিন্তু প্রজন্মের টিভি দেখা কমেনি। দিনের একটা বড় সময় টিভির সামনে কাটালে নিশ্চিত করেই সময় নষ্ট হয়, আর তাই এই সময় নষ্ট হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে টিভির প্রোগ্রামের দিকে ফোকাস করতে পার। টিভিতে সংবাদ পাঠক পাঠিকারা বলতে গেলে সব থেকে শুদ্ধ করে বাংলা আর ইংরেজি পড়েন। তুমি তাদের বাচনভঙ্গি দেখে সেভাবে কথা বলা শিখতে পার।