ডিপ্রেশন এমন একটি ব্যাধি, যা আক্রমণ করে সবাইকে। আমার নিজেরও ডিপ্রেশন আসে, আমিও বেশ হতাশ হয়ে পড়ি। কিন্তু তখনই মনে হয় ডিপ্রেশন আমাকে পেয়ে বসার আগে আমি ডিপ্রেশনকে হারিয়ে দেবো! এই চিন্তাটা থাকার কারণে ডিপ্রেশন জিনিসটা আর জেঁকে বসতে পারে না। ডিপ্রেসড হয়ে বসলে আমি বেশকিছু কাজ করতে থাকি, যতক্ষণ না এই ডিপ্রেশন ব্যাটা হার না মানে! আজ তোমাদের এই কাজগুলো নিয়েই বলি
১. কাউকে খুশি করার চেষ্টা কর
খেয়াল করে দেখবে, তুমি ডিপ্রেসড থাকলে তোমার মধ্যে একটা ধারণা চলে আসে, তুমি কোন কাজের না, তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। এই সময়টায় যদি তুমি চেষ্টা কর অন্য কারো মুখে হাসি ফোঁটানোর, তাহলে দেখবে অন্যরকম একটা তৃপ্তি আসবে তোমার মনে। এর কারণ দুটো। একটা হলো, তোমার কারণে কেউ আনন্দ পেল, এতে তোমার ডিপ্রেশনটা ধারে কাছে আসতে পারলো না। আরেকটা হলো, তুমি কোনো কাজের না এই ধারণাটা ভুল প্রমাণিত হলো তোমার নিজের কাছেই!
২. নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করা বন্ধ কর
ডিপ্রেশনে পড়লে আরেকটা খুব কমন ব্যাপার ঘটে, অন্যান্য সুখী এর সাথে আমরা নিজেদের তুলনা করা শুরু করি। তাতে আরো বেশি ডিপ্রেসড হয়ে পড়ি সবাই। তাই এমন ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সবার আগে অন্যদের সাথে তুলনা বন্ধ করে নিজেকে নিয়ে ভাবা শুরু করতে হবে।
৩. উদার মানসিকতা বজায় রাখো
ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির আরেকটি অস্ত্র হলো উদার মানসিকতার প্রকাশ। ভেবে দেখ তো, যদি তোমার রাগ দুঃখ সব একাকার হয়ে যায় তাহলে ডিপ্রেশন কি আরো বেশি বাড়বে না? তাই সুন্দর ও উদার মানসিকতা দেখাতে পারলে ডিপ্রেশন ধারে কাছে ভিড়তে সাহস পাবে না!
৪. নিজেকে নিয়ে আশাবাদি থাকো
নিজেকে নিয়ে আশাবাদি থাকাটা হতাশা থেকে দূরে থাকার একটি দরকারী কৌশল। ডিপ্রেশন সবার আগে আঘাত করে আত্মবিশ্বাসে, আশাবাদ কমিয়ে দেয় গোড়া থেকেই। তাই মানসিক শক্তি সঞ্চয় করে যদি তুমি একবার প্রতিজ্ঞা করে উঠতে পার–আমার উপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। তাহলেই কেল্লাফতে! ডিপ্রেশন আর তোমাকে ছুঁতেও পারবে না।
৫. মন থেকে ঈর্ষা দূর করে ফেলল
আমরা নিজেদের যতই উদারমনা মনে করি না কেন, অপরের সাফল্য মেনে নিতে সবারই কষ্ট হয়। ডিপ্রেশনে থাকার সময় সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে এই ঈর্ষা দূর করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার। শুধুমাত্র তখনই ভিপ্রেশনের ভয়কে জয় করা যাবে, অন্যের সাফল্য যখন তোমার মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াবে না।
৬. নেতিবাচক মানুষদের এড়িয়ে চলল
ডিপ্রেশনের সময়গুলোতে কেন যেন নেতিবাচক মনের মানুষগুলোর সাথেই লেখা হয়ে যায়। এই নেতিবাচক মানুষগুলোর কথায় আশার আলো পাওয়া তো যায়ই না, বরং তাদের সমালোচনার চোটে হতাশা কাটিয়ে ওঠার আশাগুলো হারিয়ে যেতে থাকে। এরকম হতাশা উদ্রেগকারী মানুষদের যথা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে যেতে হবে।
এ কাজগুলো শুধুমাত্র ডিপ্রেশনের সময়গুলোতেই নয় অন্যান্য সৎ করতে থাকলে দেখবে আর কখনো ডিপ্রেশন তোমার ধারেকাছেও তাস পারবে না! তাই এগুলোকে অভ্যাসে পরিণত কর, সুখী সুন্দর জীবন তোমার নিশ্চিত হবেই!
.
একজন বৃক্ষমানবের গল্প
ফরিদপুরের ছোট্ট একটা গ্রাম। ভগণডাঙ্গা নাম। কাকডাকা ভোর। দূরে দেখা যাচ্ছে একটা রিকশা এগিয়ে আসছে। রিকশার চালকের বয়স হয়েছে। রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে। বিন্দু বিন্দু ঘামের রেখাও দেখা যাচ্ছে। রিকশায় কিন্তু মানুষ নেই। একটা গাছের চারা। মানুষটা পরিশ্রম করে একটা গাছের চারা নিয়ে কোথায় যাচ্ছে? একটু পরেই মিলল সে প্রশ্নের উত্তর। রাস্তার এক পাশে অদ্ভুত মায়ার সাথে পুঁতে দিলেন তিনি গাছের চারাটা। কিন্তু কে এই শুশ্রুমন্ডিত মানুষটি? কেনই বা এমন কাজ করছেন?
কাছে গিয়ে দেখা গেল, ইনি তো ফরিদপুরের বিখ্যাত সামাদ চাচা! ষাটোর্ধ্ব মানুষটি পরিশ্রমে ক্লান্ত, কিন্তু তার চোখেমুখে খুশির আভাস দেখা যাচ্ছে। আরো একটি দিন তো তিনি গাছ লাগাতে পেরেছেন! প্রশ্ন আসে, কে এই সামাদ চাচা! কেন একজন সাধারণ রিকশাচালককে একটা জেলার সবাই চেনে? উত্তর সেই গাছেই।
একজন বৃক্ষমানব
ফরিদপুরের এই পৌঢ় মানুষটি গত আটচল্লিশ বছর ধরে প্রতিদিন অন্তত একটি হলেও গাছ লাগিয়েছেন। সেই ছোটবেলা থেকে শুরু, এখনো বিপুল উদ্যমে তিনি বৃক্ষরোপণ করেই চলেছেন! এখন পর্যন্ত এই মানুষটি সতেরো হাজারেরও বেশি গাছ লাগিয়েছেন!
সামাদ চাচার এই দারুণ কাজ চোখ এড়ায়নি এলাকাবাসীর। সেই থেকেই প্রবীণ এই রিকশাচালককে সবাই চেনে বৃক্ষ সামাদ হিসেবেই। তার ভাষ্যমতে, গাছ না লাগালে নাকি তার ঘুম হয় না! একবার ভাবো তো, একজন মানুষ, যার দৈনিক আয় একশ টাকাও হয় না অনেক সময়, তিনি প্রতিদিন একটি করে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ উন্নত করছেন। আর আমরা কী করছি?
সত্যিকারের সুপারহিরো
ছোটবেলায় আমার শখ ছিল, যখন যেই ট্রেন্ড চলে, তার সাথে তাল মিলিয়ে চলা। তাতে নিজেকে অনেক কুল ভাবা যেত! একদম ছোটবেলায় দেখতাম সবাই ব্যাগি প্যান্ট পরে ঘুরে বেড়াতো, আব্বুর সাথে বাজারে গেলে তাই প্রতিনিয়ত ব্যাগি প্যান্টের খোঁজে অস্থির হয়ে যেতাম। আর খেলতাম পোকেমন কার্ড, সবাই যাতে বলে–আরে! আয়মান ছেলেটার তো অনেক ভাব!