১. সিজিপিএ বনাম অন্যান্য :
চাকরির শুরুতেই সিজিপিএর এমন দরকার দেখে অনেকেই হয়তো মনে করছো, তাহলে কি সিজিপিএই সব? অন্যান্য কাজ, এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি, এতশত ক্লাবে কাজ করা কি বৃথা? আসলে কিন্তু মোটেও তা নয়। হ্যাঁ ভালো একটা জব পেতে হলে সিজিপিএটা দরকার, কিন্তু তার পাশাপাশি দরকার হয় অভিজ্ঞতারও। ভালো সিজিপিএ আছে অনেকেরই, কিন্তু কোন ইভেন্টে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কিংবা হঠাৎ করে কোনো অবস্থা সামলাতে পারার ক্ষমতা আছে কজনের?
সিজিপিএর পেছনে ছোটার পাশাপাশি এগুলো করলেও কিন্তু তুমি এগিয়ে থাকতে পার অন্য সকলের থেকে। একটা রুমে যদি দুজন ক্যান্ডিডেট থাকে, যাদের একজনের অনেক ভালো সিজিপিএ কিন্তু বিন্দুমাত্র অভিজ্ঞতা আর অন্যজনের মোটামুটি ভালো সিজিপিএর সাথে আছে অভিজ্ঞতার ঝুলি, দ্বিতীয়জনের দিকেই কিন্তু জবের পাল্লাটা ঘুরে যায়। তাই অন্য সবার থেকে তোমাকে এগিয়ে রাখতে দরকার একটুখানি অভিজ্ঞতার ঝলক!
কিন্তু কী করলে অর্জন করা যাবে এসব অভিজ্ঞতা? কীভাবে অভিজ্ঞতার বলে এগিয়ে থাকা যাবে বাকিদের থেকে? এর জন্যে আসলে কোনো শর্টকাট নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম বছরটায় কিন্তু পড়ালেখা কিছুটা শিথিলভাবে চলে। এটাই হচ্ছে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যে সেরা সময়। শিথিলতাটাকে কাজে লাগিয়ে অনেক কিছুই করে ফেলতে পার তোমরা। যেমন :
২. এক্সটা কারিকুলার এক্টিভিটি
বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমার বছরগুলি কেটে যাবে একের পর এক অনুষ্ঠান আর আয়োজনে। তুমি গান গাইতে পার? তোমারই সুযোগ নিজের পরিচিতি বাড়ানোর এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে। তুমি নাচতে বা অভিনয় করতে পার? অন্যান্য প্রতিভা আছে তোমার? সেগুলো দেখিয়ে দেবার শ্রেষ্ঠ সময় এটিই। শুধু বাসায় বসে পড়াশোনা না করে এমন প্রতিভার বিকাশ তোমার অভিজ্ঞতা আর পরিচিতি বাড়াতে সাহায্য করবে। তাছাড়া লেখালেখির অভ্যেস থাকলে সেটাও কাজে লাগাতে পার তুমি। আমাদের ১০ মিনিট স্কুল এর ইমেইলে লেখা দিয়ে তুমি হয়ে যেতে পার আমাদের বস্মগের একটা অংশ!
৩. প্রতিযোগিতা
ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো বিষয়ের উপর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিতর্ক ভালোবাসলে আছে নানা বিতর্ক প্রতিযোগিতা। আছে বিজনেস কম্পিটিশন, যেখানে ভালো করলে বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ থাকে, সুযোগ থাকে পড়ালেখার পাট চুকিয়ে সেখানে চাকরি করারও! আরও আছে MUN, যাকে এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা বললে একটুও ভুল হবে না! MUN এ ভালো করতে পারলে সেটি নিঃসন্দেহে তোমার সিভিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে থাকবে!
৪. ক্লাব
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন রকম ক্লাব থাকে। ডিবেট ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব আরো কত কি? তুমিও যোগ দিতে পার এসব ক্লাবে। ক্লাবগুলো থেকে বিভিন্ন দিবসে ইভেন্ট আয়োজন করা হয় সেগুলোয় অংশ নিয়ে কিংবা ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করেও তুমি অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে পার! পড়ালেখার ফাঁকে ভিন্ন কিছু করলে মন্দ হয় না কিন্তু!
৫. পার্ট টাইম জব
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্যে পার্ট টাইম জব অসাধারণ একটি মাধ্যম। এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে যারা পার্ট টাইম জবের সুযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের। এদের মধ্যে কোনো কোনোটা অবৈতনিক, আবার কোনোটা থেকে উপার্জন করাও সম্ভব। নিজে টাকা উপার্জন করলে কেমন একটা আনন্দ হয় না? তার সাথে যদি যোগ হয় অফুরন্ত অভিজ্ঞতা, ব্যাপারটা তখন সোনায় সোহাগা হয়ে দাঁড়ায়!
৬. ইন্টার্নশিপ
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করার স্বপ্ন দেখাটাও অনেকটা দুঃসাহসের মতো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এমন কোম্পানিতেও তোমরা কাজ করতে পরো ইন্টার্ন হিসেবে! এমন সব কোম্পানিগুলো প্রায়ই ইন্টার্ন চেয়ে বিজ্ঞাপন দেয় খবরের কাগজে। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে এমন কোনো কোম্পানির ইন্টার্ন হতে পারলে তুমিও পাবে সেই অভিজ্ঞতা আর সিভিতে যোগ হবে আরেকটি শক্তিশালী কৃতিত্ব!
৭. ভার্চুয়াল সুপারহিরো
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে থাকতেই তুমি শিখে ফেলতে পারো পাওয়ার পয়েন্ট আর ডিজাইনিং নিয়ে নানা কিছু শিখে সেগুলো প্রয়োগ করতে পারলে সেটি তোমার স্কিলের একটি অংশ হয়ে যাবে। সোশ্যাল মিডিয়া কাজে লাগিয়ে তুমি শুরু করতে পার ইউটিউবিং আর সেগুলো প্রয়োগ করে হয়ে উঠতে পার অভিজ্ঞ আর পরিচিত!
এতকিছু বলার কারণ হচ্ছে যে, সিজিপিএই সব এ ধারণা দূর করতে পারলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যাবে। আজ আমরা চাই সবাই সিজিপিএর পাশাপাশি অন্যান্য কাজও করবে, তাহলে তোমাদের জীবন হবে আরো রঙ্গিন। কীভাবে করতে হবে সেটা? উত্তর একটাই এ লেখাটি পড়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তবেই স্বপ্নের জগতে পাড়ি দেয়া সম্ভব হবে!
.
মন ভালো করার টোটকা
আমরা সবাই কিন্তু শারীরিক ভাবে সুস্থ্য হলেও মানসিকভাবে কমবেশী অসুস্থ।
শুনে হয়তো আমাকেই পাগল ভাবছো অনেকে, সবাই কী করে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়? কিন্তু, কথাটার সত্যতা আছে। এই যে আমাদের নতুন প্রজন্ম ভুগছে ভাল্লাগে না রোগে, এটি কি অসুস্থতা নয়? কাজ করতে ভাল্লাগে না, ঘুমাতে ভাল্লাগে না, খেতে ভাল্লাগে না, পড়তে ভাল্লাগে না ভালো না লাগার পাল্লাই ভারি তাদের জীবনে। আবার অনেকেই আছে ডিপ্রেশন জোনে। আমাকে দিয়ে কিছু হবে না, আমার জীবন রেখে কী। লাভ, সমাজের কাছে বোঝা আমি। এমন সব চিন্তায় প্রতিনিয়ত ডিপ্রেসড হচ্ছে অনেকেই।