আর এই প্রশংসা আর নিন্দা আমাদের জীবনে সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলে যখন আমাদের বয়স কম থাকে। এই বিষয়ে শিক্ষক এবং অভিভাবকরা যদি কিছু জিনিস মেনে চলতেন, তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ব্যাপক আত্মবিশ্বাস নিয়ে গড়ে উঠতো।
*
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মধ্যে কথোপকথন কেমন হওয়া উচিত?
যেভাবে বলতে পারেন,
১) গুনের চেয়ে সেই গুনুটাকে কী করে কাজে লাগিয়েছে সেটা প্রশংসায় উল্লেখ করুন। যেমন- আপনার বাচ্চা নিজে নিজেই এই সমস্যার সমাধান করেছে। যেমন (কাজটার উদাহরণ)
২) আপনার ভূমিকাটাও উল্লেখ করুন। আপনি কী কী করেছেন ওকে বোঝানোর জন্যে সেটাও বলুন।
৩) নিজেকে অপর প্রান্তের মানুষটার জায়গায় বসিয়ে এরপর পরিস্থিতিটা চিন্তা করুন।
৪) সংক্ষেপে পুরো পরিস্থিতিটার ব্যাখ্যা দিন।
যেটা না বলাই ভালো
১) প্রশংসা করার সময় কোনো গুণের কথা সরাসরি উপসংহার হিসেবে বলবেন না।
যেমন- আপনার বাচ্চা তো বেশ স্মার্ট।
২) কোনো ভুলের জন্য বাচ্চাকে দোষারোপ করবেন না।
৩) যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না।
৪) অপভাষা ব্যবহার করবেন না।
*
যারা ‘না’ বলতে পারেন না!
মানুষের সব কথায় হ্যাঁ বলতে থাকলে আপনি মানুষের পুতুল হয়ে যাবেন। আপনি অন্যের পুতুল হবেন নাকি নিজের জীবন নিজে তৈরি করবেন সেটা আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। এরপরও কয়েকটি মেন্টাল কনসেপ্ট মাথায় রাখলে আপনার জন্য না বলা সহজ হয়ে যাবে। সেই কনসেপ্টগুলো হল :
১. সবকিছুতে হ্যাঁ বললে আপনি এমন অনেক কাজে হ্যাঁ বলে ফেলবেন যেগুলো করার কোনো দরকার ছিল না।
২. নিজেকে বেশি সস্তা করে ফেলতে চান? সবকিছুতে সবাইকে হ্যাঁ বলতে থাকুন।
৩. হ্যাঁ বলে কাঁচুমাচু করার চেয়ে না বলে ক্লিয়ার থাকাটা সবার জন্যই ভালো।
৪. সব কাজ আপনার উপর আসলে আপনি হয় মানুষ চিনতে ভুল করেছেন, না হয় কাজ বুঝে নিতে ভুল করেছেন।
*
আমি আমার সোশ্যাল স্কিল কীভাবে বাড়াবো?
নিচের বাক্যগুলো আপনার জন্য সত্য হলে টিক এবং মিথ্যা হলে ক্রস দিন।
অন্যের মানসিক অবস্থা ভেবে কি আমি কথা বলি?
আমি খুব বেশি দিন বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে পারি না।
জয় কিংবা পরাজয়ের সময় আমার হুশ থাকে না।
কথা শোনার সময় খুব সহজেই আমার মনোযোগ চলে যায়।
আমি খুব সহজেই অন্যেদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মনের বিরুদ্ধে কাজ করি।
কী বলবো তা না জানা থাকায় অনেক সময় মানুষের সাথে কথাই বলা হয় না।
মানুষ কী চিন্তা করছে কিংবা অনুভব করছে সেটা আমার বুঝতে অনেক সমস্যা হয়।
রেগে গেলে আমি খারাপ শব্দ ব্যবহার করি এবং জিনিসপত্র ছোঁড়াছুড়ি করি।
মানুষ আমাকে প্রায়ই আরও ম্যাচিউর/পরিণত হতে বলে।
মানুষ আমার কথায় কখনই হাসে না।
আমি মাঝে মাঝে অশালীন ভাষা ব্যবহার করি।
মানুষের বডি ল্যাঙ্গুয়েজের মানে বুঝতে পারি না।
কী বলবো না তা না জানা থাকায় কথাবার্তা বেশি দূর আগাতে পারি না।
ধন্যবাদ, প্লিজ এসব শব্দ ব্যবহার করতে কার্পণ্য বোধ করি।
মানুষের পার্সোনাল স্পেসের মধ্যে অনেক সময় ঢুকে পড়ি।
নতুন বন্ধু বানাতে পারি না।
আমার আশেপাশে মানুষ থাকলে নার্ভাস হয়ে যাই।
নিজের কথার আওয়াজ অনেক সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
মানুষের আচরণে কষ্ট পেলে নিজের মধ্যে পুষে রাখি।
আমি আমার সোশ্যাল স্কিল বাড়ানোর চেষ্টা করছি (যেমন এই বইটা পড়ছি)।
.
বই আর ইন্টারনেট থেকে পাওয়া দুটো উক্তি দিয়ে শেষ করি,
সবাইকে খুশি করতে চাইলে নেতা না হয়ে আইসক্রিম বিক্রি করেন গিয়ে।
দ্বিতীয়টা স্টিভ জবস বলেছিলেন বোধ হয়, একটা আইডিয়াকে হ্যাঁ বলা মানে এক হাজারটা আইডিয়াকে না বলা।
*
ইমোটিকনে কমিউনিকেশন
এই ইমোটিকন জিনিসটা অনেক কনফিউজিং। একই ইমোটিকনের অর্থ একেকজনের কাছে একেক রকম। তাই, আপনি যা বলছেন, তা অন্যজন বুঝছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাটাই ইমোটিকন কমিউনিকশনের মূল জটিলতা। একই বাক্য কেবল ইমোটিকন দিয়ে সম্পূর্ণ পাল্টে দেয়া যায়।
বর্তমান যুগে আমাদের অনেক কথা যেহেতু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়, তাই ইমোটিকনের ব্যবহারও অনেক বেড়ে গেছে। এখন সমস্যা হচ্ছে ইমোটিকনের ব্যাপারটা অনেক আপেক্ষিক। একেকজনের কাছে একেক ইমোটিকনের মানে একেকরকম হতে পারে। কিন্তু, নিচের ৩টি গাইডলাইন মানলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে :
১. আপনার মোবাইলে যে ইমোটিকন দেখাচ্ছে, সেটা অন্যের মোবাইলে গিয়ে বদলে যেতে পারে। তাই, আপনি বলছেন দুষ্টুমি করে কিছু, সেটা অন্যের হ্যান্ডসেটে বদলে গিয়ে আদেশ হয়ে যেতে পারে।
২. পেশাগত কাজে যেমন ইমেইলে একদমই ইমোটিকন ব্যবহার করা উচিত না। বাইরের দেশে অনেক উদারমনা ম্যানেজার থাকলেও, লোকাল মেইলে ইমোটিকন ব্যবহার করে বিপদে পড়লে আমরা দায়ী থাকবো না কিন্তু!
৩. ইমোটিকন ব্যাপারটা আপেক্ষিক। আপনার কাছে একটা অর্থ থাকতে পারলে, অন্যজনের কাছে সেটার অর্থ বদলে যেতে পারে। এটা জেনেশুনে তারপর ব্যবহার করবেন।
*
লিগ্যাল কমিউনিকেশন
পেশাদার দুনিয়ায় কাজ করার সময় জীবনেও মুখের কথার উপর সম্পূর্ণ ভিত্তি করে কাজ করবেন না, যা কিছু করছেন, সবকিছুর লিগ্যাল কাগজপত্র রাখবেন; তারপর বাকি সব কাজ।
এখন আসি মূল প্রসঙ্গে। আপনি কখনও যদি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলে। থাকেন, তাহলে দেখবেন কয়েকশ শুধু শর্ত আর শর্ত। অফিশিয়াল অনেক ডকমেন্টে দেখবেন নিচে একদম ছোট করে সারির পর সারি কঠিন শব্দে অনেক কিছু লেখা থাকে।