*
উদ্ধত মানুষদের কীভাবে সামলাবেন?
১) মনে করার চেষ্টা করুন সেইসব মুহূর্তের কথা যেগুলোতে আপনি মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার। করেছিলেন এবং মানুষ আপনাকে সেগুলোর জন্য মাফ করে দিয়েছিল। আপনি বদলাতে পারলে আপনার সামনের উদ্ধত মানুষটি কেন বদলাতে পারবে না? এই প্রশ্নের উত্তরে উদ্ধত মানুষটি সম্পর্কে আপনার সমগ্র ধারণাই পাল্টে যেতে পারে।
২) কোনো কথাকেই ব্যক্তিগতভাবে নিবেন না। হয়তোবা মানুষটি খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
৩) মানুষটিকে তার অতিমাত্রার আচরণের কথা উল্লেখ করুন যদি সে বেশি বাড়াবাড়ি করে। চুপ করে থাকলে বদ আচরণকে সে তার অধিকার মনে করবে।
8) মানুষটি যে কারণে রেগে আছে, সেটা সমাধান করার সুযোগ থাকলে নিজের দিক থেকে চেষ্টা করুন।
৪) উপেক্ষা করুন। কাউকে এর চেয়েও কম গুরুত্ব দেয়া সম্ভব না।
৫) মানুষটির কথাবার্তা এবং আচরণ তার। এ জীবনের সাপেক্ষে তুলনা করে দেখুন।
৬) তার নেতিবাচক দিকগুলো উপেক্ষা করে ভালো দিকগুলোর জন্য প্রশংসা করুন।
৭) বোঝার চেষ্টা করুন যে মানুষটি ব্যক্তিগত কারণে নাকি পারিপার্শ্বিক কাজের কারণে রেগে আছে।
৯) উদ্ধত মানুষটিকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, আমি কীভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি?
১০) কোনোভাবেই নিজেকে ছোট করে তার সামনে উপস্থাপন করবেন না।
১১) উদ্ধত মানুষটির আচরণ খারাপ থাকলে থাকতে পারে। কিন্তু, আপনি নিজে আচরণ খারাপ করলে, সে তার আচরণের জন্য অজুহাত পেয়ে যাবে।
১২) আপনার চেয়ে সিনিয়র কিংবা বস যদি উদ্ধত হয় তাহলে তাদের লেভেলের। কোনো সিনিয়রের সাহায্য নিন।
১৩) উদ্ধত মানুষটির বিষয়টি যে আপনাকেই সমাধান করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আপনার ওপর চাপ বেশি হয়ে গেলে বিরত থাকুন।
১৪) অন্য মানুষটির আগে নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণে আনুন।
১৫) হঠাৎ করে ব্যবহার পাল্টে যাবে, এমন আশা করবেন না। পরিবর্তন আসতে সময় লাগে। অথবা সে মানুষটাই বোধ। হয় এমনই।
আমরা হয়তোবা অনেকগুলো পয়েন্ট বললাম। এগুলোর তিন/চারটি এমনকি এক দুটি প্রয়োগ করলেই বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে একটা পরিবর্তন চলে আসার কথা।
*
একবারে পুরো মেসেজটি পাঠান
আপনি বন্ধুদের সাথে কিংবা অনলাইনে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে আড্ডা দেওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু, পারলে কর্পোরেট কাজে কোষ্ঠকাঠিন্যমূলক বার্তা পাঠাবেন না! অর্থাৎ, একটা একটা লাইন না করে, পুরো কথাটা একবারে পাঠাবেন। খুবই ছোট্ট একটা তফাৎ, কিন্তু এটা করলে আপনার খুদে বার্তাগুলো আরও গোছানো লাগবে।
*
আমাদের মন এবং তুষারপাত
মনে করেন একটি পাহাড়ে অনেক তুষারপাত হয়েছে। এমন হলে বাইরের অনেক ঠান্ডার দেশে মানুষ স্লেজ গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়ে। পাহাড়ের উপর থেকে স্লেজ গাড়িতে করে স্লাইড করে নিচে চলে যায়। প্রতিবার স্লাইড করে নিচে যাবার সময় বরফের উপরের স্তর একটু করে দেবে যায়। তিন-চারবার স্লাইড করে নামার পর কিছু জায়গায় বরফের স্তর এতটাই দেবে যায় যে। এরপরে যতবারই কেউ স্লাইড করে নিচে নামুক না কেন, ওই দেবে যাওয়া। অংশ দিয়েই খালি নিচে নামে।
প্রথম প্রথম স্লাইড করে নামার কোনো বাধাধরা রাস্তা না থাকলেও, তিন চারবার নামার পর দেবে যাওয়া পথেই সবাই নামা শুরু করে।
আমাদের চিন্তা-ভাবনাও আসলে এভাবে কাজ করে। প্রথম প্রথম আমরা সব কিছু নিয়ে চিন্তা করতে পারি। কিন্তু, যতই আমরা কোনো জিনিস নিয়ে বেশি জেনে ফেলি, তখন আমরা ঐ একই লাইনেই কেবল চিন্তা করতে থাকি। আমাদের অধিকাংশের দৈনন্দিন চিন্তা-ভাবনার ৯০-৯৫ শতাংশই কিন্তু গতকালের চিন্তা-ভাবনা!
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে কীভাবে আমরা নতুন চিন্তা-ভাবনা করবো? তিনটি জিনিস সহজেই করা সম্ভব :
১. নিজের বন্ধুমহলের বাইরের মানুষের সাথে কথা বলুন। (গত সাতদিনে চেনা-জানা মানুষের বাইরে কয়জন মানুষের সাথে কথা বলেছেন? কয়জন বিদেশি মানুষের সাথে কথা বলেছেন? নিজেই নিজেকে যাচাই করুন)
২. নতুন নতুন লেখকের বই পড়ুন, নতুন নতুন বিষয়ের বই পড়ন। যেমন : বেশিরভাগ দিন আত্মউন্নয়নমুলক বই পড়ে থাকলে কিছুদিন সাহিত্যের বইও পড়ুন।
৩. নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। যেমন : কখনও রক্ত না দিয়ে থাকলে রক্তদান করুন, কখনও ভিডিও না বানালে নিজের একটা ভিডিও বানিয়ে দেখুন (আপলোড করা বাধ্যতামূলক নয়!), কখনও
আর্ট এক্সিবিশনে না গিয়ে থাকলে ঘুরে আসুন। নতুন নতুন বই পড়লে, মানুষের সাথে কথা বললে, নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিলে আপনার মনে নতুন করে তুষারপাত হয়ে আগের দেবে যাওয়া পথগুলো হারিয়ে যাবে। তখন আপনি আবার একদম নতুন করে পাহাড়ের উপর থেকে স্লেজ গাড়িতে করে সম্পূর্ণ নতুন পথে নামতে শিখবেন!
*
প্রশংসা আর নিন্দার কমিউনিকেশন
আপনি একটা কাজ ভালো করলে একটা প্রশংসা পেতে পারেন। আর আপনি যদি একটা কাজ খারাপ করেন, তাহলে সেই কথা সবাইকে বলে বেড়ানো। হয়। আমরা যেই আগ্রহ ও উদ্যমের সাথে গীবত করি, সেই উদ্যমের সাথে যদি মানুষকে আমরা উৎসাহ দিতাম, তাহলে সত্যি বলতে আমাদের বোধ। হয় আর কোনো মোটিভেশন লাগতো না।
ঠিক একইভাবে আমরা মানুষকে অন্যের সামনে যতটা মজার সাথে অপদস্ত করি, ততটা আনন্দের সাথে প্রশংসা করি না। আমরা যদি ব্যক্তিগতভাবে সমালোচনা করতাম এবং প্রকাশ্যে প্রশংসা করতাম, তাহলে দুনিয়া আসলেই বদলে যেত।