আজকে বিকেল চারটার মধ্যে ব্যাংক স্টেটমেন্টটা পাঠিয়ে দিতে পারবেন?
— seen 12.45PM
এর মানে কী? পারবেন? পারবেন না? সময় লাগবে? দেখছি?
কিছু কিছু সময় মেসেজ না দেখার চেয়ে seen করে রাখা বেশি বিরক্তিকর। এমন অবস্থায় হ্যাঁ হলে জানিয়ে দিন। না হলে বলে রাখুন যে দেরি হবে যাতে অন্য ব্যবস্থা করা যায়। অনেকে না বলতে লজ্জা পায়, তাই তারা চুপ করে থাকে। কখনই এমন করবেন না। ফাস্ট এবং ফার্স্ট রেসপন্স কমিউনিকেশন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরে রিপ্লাই করবো মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে মেসেজ আর মেইল দেখার সাথে সাথে রিপ্লাই করবেন।
*
যাবেন কি যাবেন না?
ইদানীং বিভিন্ন ইভেন্টের জন্য ফেসবুকে ইভেন্ট খোলা হয়। সেখানে আপনি চাইলে, Going, Maybe কিংবা Not Going দিতে পারেন। খুবই সিম্পল কিন্তু মানুষ কেন যেন জিনিসটাকে আরও বেশি জটিল করে ফেলে। অনেকে Going দিয়েও আসে না। দেওয়ার কাজ দিয়ে রেখেছি এমন একটা ভাব।
কারও বিয়ের দাওয়াতে Going দিয়ে রাখা মানে হল তাদেরকে আপনার জন্য আয়োজনের বন্দোবস্ত করতে বলা। আপনার একটা বাটন ক্লিক করার উপর কারও কষ্টে অর্জিত টাকার খরচ নির্ভর করছে। তাই আমাদের যেন এই ন্যূনতম ভদ্রতাগুলো আনার চেষ্টা আমরা করি।
*
নিজের সম্পর্কে কথা বলুন
আমার আপনার চেনা এমন অনেক প্রতিভাবান মানুষ আছেন, যারা তাদের কাজের স্বীকৃতি যথেষ্ট পরিমাণে পাচ্ছেন না। এর পেছনে একটা বড় কারন হচ্ছে, অনেকে এতটাই বিনয়ী যে, নিজের অর্জনগুলো কারও সামনে বলে লজ্জা পান। তারা ভয় পান যে, তাদের নিজেদের কথা বললে অন্যরা অহংকারী ভাববে। তাই তারা চুপ থাকেন আর পাশ দিয়ে অন্য ধুরন্ধর মানুষজন তাদের কাজের ক্রেডিট নিয়ে নেয়।
তো নিজের ঢোল একটু হলেও নিজেকে পেটাতে হবে। এখন কিছু দৃষ্টিকোণ আপনার সামনে তুলে ধরছি যেগুলো হয়তোবা আপনাকে নিজের এবং নিজের কাজ সম্পর্কে বলতে আরেকটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করাবে।
প্রথমত, আপনি মনে করেন অনেক সুন্দর একটা কেক বানালেন। কেক বানিয়ে তারপর সেটা আপনি আপনার ওভেনে রেখে আসলেন। এই অবস্থায় যদি কেউ আপনার কেক না খায়, তাহলে তো নিশ্চয়ই আপনি বলবেন না যে, কেউ আমার হাতের রান্না খেতে চায় না! বরং, দোষ আপনার যে, এত সুন্দর কেক বানিয়ে আপনি মানুষকে জানাননি। তাই, আপনি হয়তোবা দারুণ কোনো কাজ করছেন, কিন্তু মানুষকে না জানালে আপনাকে তারা কদর কীভাবে করবে বলেন?
দ্বিতীয়ত, আপনি কি আসলেই আপনার কাজে বিশ্বাসী? আপনি যদি আপনার কাজে বিশ্বাসী হন, তাহলে সেটার কথা মানুষকে জানান। আমরা যখন বইয়ের কথা মানুষকে বলি, আমরা জানি যে অনেকে ভাববে যে আমরা হয়তোবা বইয়ের বিক্রি বাবদ অর্থ পাওয়ার জন্য নিজেদের বইয়ের কথা বলছি। কিন্তু, বাস্তবে বই লিখারও অনেক আগে থেকে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা ফ্রিতে শত শত ভিডিও দিয়ে এসেছি। আমরা আমাদের বইয়ের প্রতিটা কথার মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায় বিশ্বাসী। তাই, আমরা বইয়ের কথা বলতে, মার্কেটিং করতে সংকোচ বোধ করি না।
তৃতীয়ত, আপনি নিজেই যেন নিজের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা না হন। আপনি হয়তোবা বড় কোনো কাজ করছেন, সুন্দর কোনো শিল্পকর্ম তৈরি করছেন। কিন্তু, মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে যদি লজ্জা পান, তাহলে আপনার কাজ পৃথিবীকে যতটা ভ্যালু দিতে পারতো, তা সম্ভব হবে না কেবলমাত্র আপনার কথা বলতে অপারগতার জন্য। তাই, নিজের কাজকে ভালবাসলে, নিজের কাজকে আসলেই মূল্যায়ন করতে মানুষের সামনে নিজের প্রজেক্টগুলো নিয়ে কথা বলুন।
চতুর্থত, আপনি মনে করেন কোনো নন-প্রফিট সংস্থার জন্য কাজ করেন। আপনার কাজের সম্প্রসারণ হলে আরও অনেক শিশুর পড়াশোনা চলবে। এখন আপনি যদি নিজ থেকে এগিয়ে গিয়ে মানুষের সামনে কথা বলতে না পারেন, তাহলে আপনার নীরবতার জন্য হাজারো শিশু হয়তোবা শিক্ষার সুযোগ হারাবে। তাই, অনেক সময় খালি নিজের জন্য না, পারলে অন্যের। ভালোর জন্য হলেও আপনার প্রজেক্ট সম্পর্কে কথা বলুন।
*
নয়টার ট্রেইন কয়টায় ছাড়ে?
ওই কথাটা যখন প্রথম শুনেছিলাম তখন আসলে কৌতুকটা ধরতে পারিনি কারণ আমার নিয়মিত যাতায়াতের মাধ্যম ছিল বাস। ট্রেইনে ওঠাই হত না। বুঝতে পারছি না দেখে আমাকে আমার চাচু ব্যাখ্যা করলেন যে, নয়টার ট্রেইন কখনও নয়টায় ছাড়ে না। লেট করে কয়টায় ছাড়ে, এটা জানতে এবং একই সাথে একটা কৌতুক বিনিময় করতে আসলে প্রশ্নটা করা হয়।
এমন অনেক কথা আছে, যেগুলো প্র্যাক্টিকালি এক্সপিরিয়েন্স না করলে আসলে বোঝাটা কঠিন। মনে করেন আপনি বিদেশে গিয়ে বললেন যে, আপনার দেশে মানুষ বাম পায়ে আগে নামে। বিদেশীরা হয়তোবা ভাববে যে কুসংস্কারবশত বাঙ্গালীরা এই কাজটা করি। কিন্তু, আসল কারণ তো হচ্ছে। চলন্ত বাস থেকে আমাদের নামার স্বভাব। চলন্ত বাস থেকে ফট করে নেমে জড়তার কারণে মানুষ উল্টে রাস্তায় না পড়ে যায় সেজন্যই হেল্পাররা প্রায়ই চেঁচিয়ে বাম পায়ে নামতে বলে। চলন্ত বাস থেকে যে যাত্রীরা নামবে সেটা অনেক দেশের মানুষই বোধহয় কল্পনাও করতে পারবে না।
*
নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে কথা বলা
এই টপিকটা বোধ হয় ইন্ট্রোভার্টদের জন্য বেশি প্রযোজ্য। যারা চুপচাপ থাকেন, নিজে থেকে যেচে কথা বলেন না–তারা নিজেদের মত করে থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু, নেটওয়ার্কিং-এর জগতে আপনি চুপ করে বসে থাকলে কেউ এসে আপনাকে জিজ্ঞেস করে করে বের করবে না যে, আপনার প্রতিভা কী। আপনাকে নিজে থেকে গিয়ে নিজের পরিচয় দেন। নেটওয়ার্কিং করার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। তাই, আপনার যদি নি থেকে এগিয়ে কথা বলতে বেশি লজ্জা লাগে, তাহলে আপনি কিছু হ্যাকস অ্যাপ্লাই করতে পারেন।