*
অনলাইনে যে ৮টি ভুল আমরা প্রায়ই অজান্তে করে ফেলি!
১. কাজের কথা ঠিক হলে নিশ্চিত করে Acknowledgment না পাঠানো। আপনাকে কোনো কাজ দেওয়া হলে আপনি সেটা ঠিকঠাক বুঝেছেন কি না, করতে পারবেন কি না, কতক্ষণের মধ্যে পারবেন, কীভাবে করবেন সেটা জানিয়ে কাজ শুরু করুন।
২. মনে রাখবেন অনলাইনে একবার শেয়ার হওয়া যেকোনো কিছু আজীবন অনলাইনেই থেকে যাবে। তাই, বিব্রতকর কিছু পাঠানো অনুচিত।
৩. শব্দের শর্ট ফর্ম (gdn8, alr8, tnq, cu, nc, r8, pls) ব্যবহার করা। শব্দের শর্ট ফর্ম লিখে আপনি যে সময়টা বাঁচান ঐ সময়টায় কী করেন বলেন তো?
৪. Caps Lock দিয়ে কথা বলা। কারণ Caps Lock দিয়ে কথা বলা চিৎকার করে কথা বলা একই জিনিস।
৫. চলে যাবার আগে জানিয়ে না যাওয়া।
কথা বলার মাঝখানে হুট করে গায়েব হয়ে যাওয়া অপর প্রান্তের মানুষটির জন্যে বিব্রতকর। তাই কোনো কারণে কোথাও যেতে জানিয়ে যান।
৬. অহেতুক গ্রুপ চ্যাটে কাউকে যোগ দেয়া। এটা নতুন মানুষ এবং গ্রুপ চ্যাটের অন্য সবার জন্যেই বিব্রতকর।
৭. হাই/ হ্যালো বলার পর মূল উদ্দেশ্যটা জানিয়ে না রাখা।
এখনকার সময়ে খুব কাছের না হলে একটা মানুষকে কাজ ছাড়া নক করা। হয় না কারও। এই নক করতে গিয়ে যদি হাই/হ্যালোর চক্করে ঘুরপাক খেতে থাকেন তাহলে সেটা আসলে সময় নষ্ট। তাই হাই/হ্যালো বলে। ছোট করে যে কারণে নক করেছেন সেটা জানিয়ে রাখুন।
৮. ফোন করার আগে অনুমতি না নেওয়া।
অপরিচিত কাউকে অনলাইনে ফোন করার আগে একটা টেক্সট পাঠিয়ে অনুমতি নেওয়া ভদ্রতা।
*
না মানে কী?
আমাদের দেশে লাখ লাখ মানুষ চাকরির পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরছে। আর একেকটি চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে তাদের দিনের পর দিন চলে যায়। একটা ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে আরেকটা ইন্টারভিউ বোর্ডে যেতে অনেক শ্রম, সময় এবং অর্থ চলে যায়। চাতক পাখির মত অনেকেই তাকিয়ে থাকে। কখন কোম্পানি থেকে ফোন আসবে। যাদের চাকরি হয়ে যায়, তাদের জন্য তো সেটা অনেক খুশির খবর। কিন্তু, এমন প্রায়ই হয় যে, যাদের চাকরি হয়নি, তাদের বলাও হয় না যে তারা বাদ পড়েছেন। তারা হয়তোবা অন্য চাকরির জন্য আবেদন না করে অপেক্ষা করছেন। এতে তাদের অনেক সময় নষ্ট হয় এবং এভাবে চুপ করে থাকাটাও খুবই খারাপ। যারা চাকরি পায়নি। তাদের সবাইকে বলতে সময় লাগলে, খালি একটা নোটিশ দিয়ে রাখা ভালো যে সিলেকশন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে।
আমাদের মধ্যে এই জিনিসটা আছে যে, হ্যাঁ বললে হ্যাঁ বলি কিন্তু না বলার সময় চুপ থাকি। ভাবি যে অন্য মানুষটা নিজে থেকেই বুঝে নিবে।
চুপ থাকলেই কি অন্য মানুষটা না বুঝে নেয়? নাকি নীরবতাই সম্মতির লক্ষণ ভেবে আসা নিয়ে থাকে? একটু পরিষ্কার করে বললেই বরং অনেক মানুষের অনেক সুবিধা হয়।
এবং ব্যাপারটা খালি অপেক্ষার না, অনেক জায়গাতেই আমরা না বলতে পারি না বলে অনেক বড় কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি করে ফেলি।
বস হয়তোবা মেসেজ করলে, ফাইলটা কি হয়েছে? ফাইল যে হয়নি, এটা বললে মহা-ঝাড়ি খেতে পারে এই ভয়ে চুপ করে কাজ করতে থাকে। আরে ভাই, খালি বলে দেন, স্যার ৫টার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
এসব না বলে চুপ করে থাকলে মানুষ আরও বেশি বিরক্ত হয়। তাই হ্যাঁ বা না যা হোক, পরিষ্কারভাবে সবাইকে বলে রাখুন সব সময়।
*
কমিউনিকেশনের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র
আপনার হাসি। যত যাই বলেন না কেন, হাসি সংক্রামক, আপনি হেসে কথা বললে অপর প্রান্তের মানুষটিও না চাইতেও একটু একটু করে হাসার চেষ্টা করবে। আজ থেকেই আমরা চাইবো আপনি একটা জিনিস করা শুরু করেন। সেটা হলো : যার সাথেই কথা বলেন না কেন, যেই হোক না কেন; একটা হাসি দিয়ে কথা বলা শুরু করেন। দেখবেন অচেনা মানুষ হলেও আপনার সাথে একটু আনন্দিত হবার ভান করে কথা বলা শুরু করবে। এমন। অনেক মানুষ আছে যাদের সাথে আপনার মাত্র এক-দুই লাইন কথা হয়। গার্ড, ক্যাশিয়ার, রিক্সাওয়ালা– এসব মানুষের সাথে যেই এক–দুটো লাইনও বলবেন, একটু খালি হেসে বলবেন। বিশ্বাস করেন, এটা যতটা না পৃথিবীকে উজ্জ্বল করবে, তার চেয়ে বেশি আপনার মনকে খুশি করবে। আপনি খালি করেই দেখেন না!
*
কমিউনিকেশনের ইকোনমি
মানুষ খালি গাড়ির ইকোনমি খুঁজে। কোন গাড়িতে সবচেয়ে কম লিটারে বেশি মাইল চলবে। একই ইকোনমি মানুষ যদি তাদের কমিউনিকেশনেও খুঁজতো তাহলে কেমন হত?
অর্থাৎ, আমরা যদি প্রতিটা শব্দ মেপে বলতাম? মনে করেন, আপনার জীবনে আপনি আর মাত্র ১ লাখ শব্দ বলতে পারবেন। যেই মাত্র আপনি ১ লাখ তম শব্দটা বলবেন, সেই মুহূর্তে আপনি মারা যাবেন (আমাদের আধকাংশ মানুষের জীবনেই আসলে এমন একটা সময় আসে যখন আমরা আমাদের মৃত্যু থেকে ১ লাখ শব্দ দূরে থাকি, কিন্তু আমরা সেটা কখনই জানতে পারি না)। এমন অবস্থা হলে, আপনি খালি পাঁচ মিনিট চিন্তা করে দেখেন যে, আপনি কীভাবে কথা বলতেন।
আরেকবার বলা যাবে এই কারণে আমাদের কমিউনিকেশনে আমরা অনেক ক্রটি রেখে দেই। মানুষকে কিছু একটা বললেন। পরের দিন আবার একই জিনিস জিজ্ঞেস করলে আপনাকে আবার বলতে হচ্ছে। আর আপনিও ম্যানেজার হলে তো একশবার রিপিট করতে হচ্ছে। তাই, একই কথা যদি দশবার রিপিট করতে হয়, তাহলে সেটা একবার লিখে রাখুন এবং তারপর সারকুলেট করুন। একই কথা, একই প্রসেস প্রতিদিন রিপিট করার চেয়ে একবার ইস্ট্রাকশন বানালে আপনার হাজারো ঘণ্টা বেঁচে যাবে। আমরা যেই প্রশ্ন বারবার পাই, সেগুলো নিয়ে আমরা ভিডিও বানিয়ে ফেলি। আমরা ঘুমাই আর বাইরে ঘুরতে যাই, ভিডিওর মাধ্যমে আমরা প্রতিদিন লাখ লাখ উত্তর দিয়ে যাচ্ছি অটোমেটিক। খালি ওখানেই নয়, স্টুডেন্ট লাইফ নিয়ে এত প্রশ্ন যে আমাদের আগের বই স্টুডেন্ট হ্যাকস পুরোটা ওই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়েই ছিল। বই যতজনকে উত্তর দিয়েছে, সবাইকে নিজে মুখে উত্তর করতে যেই সময় লাগতো, সেই সময় দিয়ে হয়তো আরও দশটা বই লেখা যেত!