ইমোটিকন ব্যাপারটা বেশ আপেক্ষিক আর ইনফর্মালও বটে। একেক ইমোটিকনের মানে একেকজনের কাছে একেকরকম। তাই ইমেইলে ইমোটিকনের ব্যবহার না করাই ভালো।
Out of Office Replies কী?
আমাদেরকে নিজেদের প্রয়োজনে ছুটি নিতে হতেই পারে। কিন্তু আমরা ছুটিতে গেলে যে কাজকর্মও ছুটি নেবে ব্যাপারটা তো তাও না। আপনার এক্সটার্নাল স্টেকহোল্ডারদের মেইল তো আসবেই। এক্ষেত্রে করা কী যায়? এই সমস্যার সমাধানই হলো Out of Office Replies. এই রিপ্লাই আগে থেকে সেইভ করে রাখা যায়। আপনার ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে আপনার ঠিকানায় আসা সবগুলো মেইলের উত্তরে এই অটোমেটেড রিপ্লাইটা যাবে। কী কী থাকবে এই অটো রিপ্লাইতে? আপনি কতদিনের জন্যে ছুটিতে (একদিনের ছুটি হলে এই রিপ্লাই নিষ্প্রয়োজন), খুব জরুরি বিষয়ে কাকে জানাতে হবে, এবং অবশ্যই সাবজেক্ট লাইনে [OOO] যোগ করে দেবেন।
কতক্ষণের মধ্যে ইমেইলের রিপ্লাই দেওয়া উচিত?
একটা ইমেইল আসার কতক্ষণের মধ্যে রিপ্লাই করা উচিত এটা নিয়ে আমাদের অনেকেই কনফিউশনে ভোগেন। সহজ করে দেই একদম।
নিজের টিমের কারও অর্থাৎ সরাসরি আপনার কাজের সাথে যুক্ত এমন কারও মেইলের রিপ্লাই দেখামাত্র করুন। অফিসের অন্য সহকর্মীর পাঠানো মেইলের উত্তর দিন অফিসের ওয়ার্কিং আওয়ারের মধ্যে। আর চেষ্টা করুন বাকি অন্য প্রয়োজনীয় মেইলের উত্তর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিয়ে দিতে।
নিখুঁত ইমেইল পাঠানোর কয়েকটি ট্রিক!
ইমেইল যেহেতু ইংরেজিতে লেখা হয় তাই পাঠানোর আগে কয়েকবার প্রুফরিড করে নিন যাতে বানান আর গ্রামার সংক্রান্ত ভুল না থাকে। ডাবল। চেক করুন যা যা অ্যাটাচ করার করেছেন কি না, প্রাপকের ঠিকানা সবার। শেষে বসান। আর রিপ্লাই করার সময় আবার চেক করুন আসলে রিপ্লাই দেওয়া উচিত নাকি সবাইকে রিপ্লাই করা উচিত।
ইমেইলে আমাদের করা ২ টি সাধারণ ভুল!
আমরা যেহেতু এখনও ইমেইলে অতটা অভ্যস্ত নই তাই এই ইমেইল করার বেলায় কিছু সাধারণ ভুল আমরা সবাই করি। প্রথম ভুল হলো, একটা ঠিকঠাক ইমেইল অ্যাড্রেস না থাকা। উল্টাপাল্টা নাম দিয়ে ইমেইল আইডি খুলবেন না। ইমেইল অ্যাড্রেসে নিজের নামের সাথে একটা সংখ্যা থাকলেই যথেষ্ট।
দ্বিতীয় ভুল হলো, ইমোটিকন আর অনেকগুলো আশ্চর্যবোধক চিহ্ন একসাথে ব্যবহার করা। ইমেইলে আমরা প্রফেশনালি কমিউনিকেট করি। ইমোটিকন ব্যবহারের কোনো দরকার নেই এখানে। আর একের অধিক আশ্চর্যবোধক চিহ্ন ব্যবহার করলে প্রাপক আশ্চর্য হয়ে যেতে পারে আপনার বুদ্ধি নিয়ে।
বিরাম চিহ্ন আর ব্যাকরণ ঠিক রাখা যায় কীভাবে?
ইমেইল বাংলায় লেখার প্রচলন এখনও শুরু হয়নি। যতদিন ইংরেজিতে মেইল করা হবে ততদিনই গ্রামার আর বানান নিয়ে একটু বাড়তি সতর্ক থাকা আমাদের জন্যেই ভালো। চারটা সাধারণ ভুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। কেননা এই ভুলগুলোই ঘুরে ফিরে আমরা সবাই করি।
১. “…” এর বাইরে নয় ভেতরে বিরাম চিহ্ন বসে।
২. (…) এর ভেতরে নয় বাইরে বিরাম চিহ্ন বসে।
৩. ( 🙂 কোলন দুটো আলাদা স্বাধীন বাক্যের সংযোজক। কোলনের পরের বাক্যের প্রথম শব্দের শুরুর আদ্যক্ষর বড় হাতের।
৪. ( 😉 সেমিকোলন দুটো আলাদা স্বাধীন সম্পর্কযুক্ত বাক্যের সংযোজক। সেমি কোলনের পরের বাক্যের প্রথম শব্দের শুরুর আদ্যক্ষর ছোট হাতের।
এই আদব-কায়দাগুলো মেনে ইমেইল করা গেলে আপনার ইমেইল কমিউনেশন হবে আরও অনেক বেশি প্রফেশনাল।
আজকে থেকে এগুলো বদলে ফেলুন
একদম চোখ বন্ধ করে বদলে ফেলুন! এগুলো ব্যবহার করতে বেশি চিন্তা করে লাগবে না।
যা বলা বন্ধ করতে হবে / যা বলতে হবে
আপনার কী সমস্যা? / কীভাবে সাহায্য করতে পারি?
আমি জিতেছি। / আমরা জিতেছি!
আমি পারবো না। / আমার সাহায্য লাগবে।
আমাকে দিয়ে হবে না। / আমার সময় লাগবে।
কষ্ট দিলাম! / বাসায় আসার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ! / ধন্যবাদ + (ধন্যবাদের কারণ)
চুপ করো। / আমি একটু বলি?
কার দোষ? / এখন তাহলে কী করা যায়?
অসম্ভব! / কাজটা একটু কঠিন।
পারবা না। / হেল্প লাগবে?
এই বেসিক শব্দগুলো নিজের ভোকাবুলারিতে নিতে সক্ষম হলে এর পরবর্তী ধাপে আপনার মাথার ফিল্টার ঠিক করতে মনোযোগ দিন।
*
আর একটা জিনিস!
মনে করেন কেউ আপনার কথায় রাজি হয়ে কোনো একটা জিনিস কিনলো। যখন মানুষ আপনার সাথে কোনো চুক্তি করে মৌখিক, লিখিত কিংবা ব্যবসায়িক যাই হোক না কেন, তারা আপনাকে তখন অনেকটা বিশ্বাস করে
এবং যারা আপনাকে অনেক বিশ্বাস করে, তাদের কাছে আপনি আরেকটু কিছু চাইতেই পারেন। যেমন : আপনি একজনের কাছে একটা ব্যাগ বিক্রি করলেন। ব্যাগ বিক্রি করার পর আল্লাহ্ হাফেজ বলার আগে তাকে বলুন, স্যার! আমাদের এই কার্ডটা নিন, আপনার কোনো বন্ধুর এমন সুন্দর ব্যাগ লাগলে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিবেন।
খুব ছোট একটা জিনিস, কিন্তু এর পেছনের সাইকোলজিটা ব্যাখ্যা করলে আসলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে। মানুষ যখন কোনো জায়গায় শ্রম, সময় কিংবা অর্থ দেয়, তখন সে নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে সে সবচেয়ে ভালো কাজটাই করেছে। আপনার কাছ থেকে ব্যাগ কিনলে সে নিজেকে বোঝাবে যে ব্যাগটা অনেক ভালো। ব্যাগটা যদি ভালো না হয় তাহলে তো সে বোকার মতো টাকা ব্যয় করেছে! তাই সে নিজেকে এবং অন্যদেরকেও বোঝাবে যে তার ব্যাগটা কত ভালো।