[এমনি সময়ে অন্তঃপুরের নানাবিধ কলরব শঙ্খধ্বনি কানে আসিতে লাগিল]
দয়াল। শুভকার্য নির্বিঘ্নে সমাপ্ত হয়েছে। আজ মনের মধ্যে কোন গ্লানি না রেখে তাদের আশীর্বাদ কর ভাই, তারা যেন সুখী হয়, ধর্মশীল হয়, দীর্ঘায়ুঃ হয়।
রাস। হুঁ। আমাকে বললেই পারতে দয়াল, তা হলে ছল-চাতুরি করতে হতো না। ওতেই আমার সবচেয়ে ঘৃণা।
[এই বলিয়া তিনি গমনোদ্যত হইলেন। নলিনী
কোথায় ছিল ছুটিয়া আসিয়া পড়িল]
নলিনী। (আবদারের সুরে বলিল) বাঃ—আপনি বুঝি বিয়েবাড়ি থেকে শুধু শুধু চলে যাবেন? সে হবে না, আপনাকে খেয়ে যেতে হবে রাসবিহারীমামা। আমি কত কষ্ট করে আপনাকে নেমন্তন্ন করে আনিয়েছি।
রাস। দয়াল, মেয়েটি কে?
দয়াল। আমার ভাগনী নলিনী।
রাস। বড় জ্যাঠা মেয়ে।
[প্রস্থান
দয়াল। (সেইদিকে ক্ষণকাল চাহিয়া) অন্তরে বড় ব্যথা পেয়েছেন। ভগবান ওঁর ক্ষোভ দূর করুন। গাঙ্গুলিমশাই, চলুন আমরা অভ্যাগতদের খাবার ব্যবস্থাটা একবার দেখি গে। আজকের দিনে কোথাও না অপরাধ স্পর্শ করে।
পূর্ণ। প্রজাপতির আশীর্বাদে কোথাও ত্রুটি নেই দয়ালবাবু—সমস্ত ব্যবস্থাই ঠিক আছে।
দয়াল। (ইঙ্গিতে বর-বধূকে দেখাইয়া) নলিনী, এদেরও যা হোক দুটো খেতে দিতে হবে যে মা! যাও তোমার মামীমাকে বল গে।
নলিনী। যাই মামাবাবু—
দয়াল। আমিও যাচ্চি চল—
[প্রস্থান
[ক্ষণকালের জন্য রঙ্গমঞ্চে বর-বধূ ভিন্ন আর কেহ রহিল না]
নরেন। গম্ভীর হয়ে কি ভাবচ বল ত?
বিজয়া। (সহাস্যে) ভাবচি তোমার দুর্গতির কথা। সেই যে ঠকিয়ে microscope বেচেছিলে তার ফল হলো এই। অবশেষে আমাকেই বিয়ে করে তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হলো।
নরেন। (গলার মালা দেখাইয়া) তার এই ফল! এই শাস্তি?
বিজয়া। হাঁ তাই ত। শাস্তি কি তোমার কম হলো নাকি!
নরেন। তা হোক, কিন্তু বাইরে এ কথা আর প্রকাশ করো না,—তা হলে রাজ্যিসুদ্ধ লোক তোমাকে microscope বেচতে ছুটে আসবে। (উভয়ের হাস্য)
নলিনী। (প্রবেশ করিয়া) এস ভাই, আসুন Dr. Mukherji, মামীমা আপনাদের খাবার দিয়ে বসে আছেন,—কিন্তু অমন অট্টহাস্য হচ্ছিল কেন!
বিজয়া। (হাসিয়া) সে আর তোমার শুনে কাজ নেই—