৪১৩। মিত্রদ্রোহী কৃতঘাশ্চ যশ্চ বিশ্বাসঘাতকঃ।
কে ত্রয়ো নরকং যাস্তি যাবচ্চন্ত্র দিবাকরো।
(অনুবাদ : যে-সকল লোক মিত্রদ্রোহী, কৃতঘ্ন এবং বিশ্বাসঘাতক, তারা যতদিন পর্যন্ত চন্দ্র সূর্য উঠবে, ততদিন নরকগামী হবে।)
৪১৪। সাত ভাই তাঁত বোনে, আপন কোলে সবাই টানে।
৪১৫। সাত সতীনে নড়ি চড়ি, বেরা আগুনে পুড়ে মরি।
৪১৬। সারাদিন থাকব নায়, কখন দিব খরম পায়?
৪১৭। সারাদিন বড়শি হাতে, সন্ধেবেলা আমড়া ভাতে।
৪১৮। সারাদিন যায় হেসে খেলে,
সন্ধেবেলা বৌ কপাল ডলে।
৪১৯। সুজন-পিরিত সোনা, ভেঙে গড়া যায়।
কুজন-পিরিত কাঁচ ভাঙিলে ফুরায়।
৪২০। সুদিনের বারো ভাই, দুর্দিনের কেউ নাই।
৪২১। সেই মন খসালি, তবে কেন লোক হাসালি।
৪২২। সেই ধানে সেই চাল, গিন্নি বিনে আল থাল।
৪২৩। স্বামী নাই, পুত্র নাই, কপাল ভরা সিঁদুর
চাল নাই, ধান নাই, গোলা ভরা ইঁদুর।
৪২৪। স্বামীর মা শাশুড়ি, তারে বর মানি
কোথা হতে এলেন আমার খুড় শাশ ঠাকুরানি।
৪২৫। হক কথা বলব, বন্ধু বিগড়ায় বিগড়াবে,
পেট ভরে খাব, লক্ষ্মী ছাড়ে ছাড়বে।
৪২৬। হয় না হয় বিয়ে, ঢাক বাজাও গিয়ে।
৪২৭। হাতি চড়ে ভিক্ষা মাঙি,
ইচ্ছেয় না দাও ঘড় ভাঙি।
৪২৮। হাতে কড়ি পায় বল, তবে যাই নীলাচল।
৪২৯। হাল যদি ধরে ঠেসে, যায় কি তরী তুফানে ভেসে?
৪৩০। হেলায় কার্য নষ্ট বুদ্ধি নষ্ট নির্ধনে,
যাচনে মান নষ্ট, ভোজন নষ্ট দুই বিনে।
৪৩১। হরি বাচান প্রাণ, বৈদ্যের বাড়ে মান।
৩৪. চিরন্তন বাণী
[লজ্জা, মান, ভয়–তিন থাকতে নয়]
গৌরবের–জীবে দয়া, গুরুজনে শ্রদ্ধা, ঈশ্বরপ্রীতি।
সম্মানের–ন্যায়পরায়ণতা, নিরহঙ্কারিতা, উপেক্ষা।
প্রশংসার–পরোপকারিতা, সদাচার, সদালাপ।
আনন্দের–সৌন্দর্য, সারল্য, স্বাধীনতা।
আদরের–জ্ঞান, বিবেক, বৈরাগ্য।
ঘৃণার–পরনিন্দা, বিশ্বাসঘাতকতা, কৃতঘ্নতা।
চঞ্চল–ধন, জীবন, যৌবন।
অবশ্যম্ভাবী–রোগ, শোক, মৃত্যু।
পরিহার্য–কাম, ক্রোধ, ভোল।
দাতব্য–মিষ্টবাক্য, ক্ষমা, সদ্ব্যবহার।
রক্ষণীয়–সত্য, মৈত্রী, আত্মসংযম।
বর্জনীয় –আলস্য, চাপল্য, রঙ্গরস।
সন্দেহের–তোষামোদ, কপটতা, অযাচিত বন্ধুত্ব।
কামনার–স্বাস্থ্য, চিত্ত-প্রসন্নতা, সৎস্বভাব।
সহবাসের–সাধু, সদ্গ্রন্থ, সচ্চিন্তা।
দুর্লভ–মনুষ্যত্ব, মুমুক্ষা মহাপুরুষ-সংস্রব।
প্রার্থনীয়–ভক্তি, প্রেম, শান্তি।
৩৫. শিশু চিরন্তনী
সমালোচনার মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে কেবল নিন্দা করতে শেখে।
শত্রুতার মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে কেবল হানাহানি করতে শেখে।
বিদ্রূপের মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে কেবল লাজুক হতে শেখে।
কলঙ্কের মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে কেবল অপরাধবোধ শেখে।
ধৈর্যের মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে সহিষ্ণুতা শেখে।
উদ্দীপনার মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে আত্মবিশ্বাসী হতে শেখে।
প্রশংসার মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে মূল্যায়ন করতে শেখে।
নিরপেক্ষতার মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে ন্যায়পরায়ণতা শেখে।
নিরাপত্তার মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে বিশ্বাসী হতে শেখে।
অনুমোদনের মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
শিশু নিজেকে ভালোবাসতে শেখে।
স্বীকৃতি আর বন্ধুত্বের মাঝে শিশু বেঁচে থাকলে
সে শিশু পৃথিবীতে ভালোবাসা খুঁজে পেতে শেখে।
৩৬. কথা চিরন্তন
উপাসনা করো প্রেমের মাধ্যমে
নত হও সংযমের সাথে
সাধনা করো একাগ্রচিত্তে
কামনা করো ভক্তিসহকারে
দান করো মুক্তহস্তে
পান করো ধীরে ধীরে
আহার করো পরিমিতভাবে
ব্যয় করো আয় বুঝে
চিন্তা করো গভীরভাবে
বিশ্বাস করো মনেপ্রাণে
অপেক্ষা করো ধৈর্যের সাথে
শ্রবণ করো মন দিয়ে
সংকল্প করো দৃঢ়চিত্তে
তর্ক করো যুক্তির সাথে
কথা বলো সংক্ষেপে
কাজ করো নীরবে
পথ চলো সাবধানে
সেবা করো যত্নের সাথে
সাহায্য করো গাম্ভীর্যের সাথে
খেলা করো অবসরে
বাস করো সুজনের সাথে
ভালোবাসো প্রাণ খুলে
বন্ধুত্ব করো যাচাই করে
দুর্বৃত্তকে এড়িয়ে চলো
জ্ঞানীর সঙ্গে কাজ করো
নিজের কাজ নিজেই করো।
৩৭. সত্য বাণী
ঠাট্টা করিও না–করিলে সম্মান নষ্ট হইবে।
মিথ্যা বলিও না–বলিলে ইমানের জ্যোতি নষ্ট হইবে।
নিরাশ হইও না–হইলে হকের উপর থাকিতে পারিবে না।
কুসংগে থাকিও না–থাকিলে নিন্দিত হইবে।
পাপ করিও না–করিলে আল্লাহর ক্রোধে পড়িবে।
কৃপণতা করিও না–করিলে মর্যাদা নষ্ট হইবে।
লোভলালসা করিও না–করিলে উচ্চশির থাকিবে না।
চোগলখোরি করিও না–করিলে জাহান্নামি হইবে।
এমন উপদেশ দিও না–যাহা নিজে কর না।
সালাম করিতে কার্পণ্য করিও না–করিলে কৃপণ বলিয়া গণ্য হইবে।
এমন ওয়াদা করিও না–যাহা পূরণ করিতে পারিবে না।
নামাজ ছাড়িও না–ছাড়িলে আল্লাহর জিম্মায় থাকিবে না।
অহংকার করিও না–করিলে ধ্বংস হইবে।
সীমালংঘন করিও না–করিলে আল্লাহ্ ভালোবাসিবেন না।
স্বামীর অবাধ্য চলিও না–চলিলে বেহেশত পাইবে না।
আলস্য করিও না–করিলে কর্তব্যকর্মে ত্রুটি হইবে।
হিংসা করিও না–করিলে আত্মপীড়ন হইবে।
এই তিন জিনেসের দেরি করিবে না–নামাজ, জানাজার দাফন ও বালেগা মেয়ের বিবাহ।
এই তিন জিনিসকে জায়েজ মতে ব্যবহার করিবে–চক্ষু, জবান ও হাত।
৩৮. সত্য চিরন্তন
প্রশ্রয় দিলে মাথায় ওঠে
সমাদর করলে খোসামোদ ভাবে