সময় সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার কোনো ধারণা নেই, একে আমরা ভাগ করে নিয়েছি নিজেদের সুবিধে মতো। এই ভাগ যদি না করা হতো, দৈনন্দিন জীবনে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে উঠতো আমাদের। আমরা ধরে নিয়েছি সময় একটা সরলরেখা ধরে ছুটছে, অতীত থেকে শুরু করে, বর্তমান হয়ে, ভবিষ্যতের দিকে। সময়কে এই ভঙ্গিতে ভাগ করে নিয়ে চিন্তা করলে যা ঘটে গেছে সেগুলোকে অতীত বলে চিহ্নিত করতে পারি, উপলব্ধি করতে পারি বর্তমানকে, এবং বুঝতে পারি এরপর যা ঘটবে তা ভবিষ্যতের অন্ধকারে লুকিয়ে আছে।
কিন্তু অন্য পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপারটা তা নয়। আলফা এবং থিটায় আমরা শুধু অতীতকে দেখতে পাই না, দেখতে পাই ভবিষ্যৎকেও। যে ঘটনা ঘটেনি কিন্তু ঘটবে। তার ছায়া পড়ে আগেই, ট্রেনিং নেয়া থাকলে সে ছায়া আমরা দেখতে পাবো।
আলফা আর থিটা থেকে ভবিষ্যৎকে যদি এখানে এখনই দেখতে পাওয়া যায়, তারমানে ভবিষ্যৎ নিশ্চয়ই কোনো এক ধরনের এনার্জি সামনের দিকে পাঠাচ্ছে, যার আঁচ আমরা ওই লেভেলগুলোয় থাকলে পাই। ভবিষ্যৎ সময়ের একটা রূপ, সে যদি কোথাও কোনো রকম এনার্জি পাঠায়, তাহলে নিশ্চয়ই সময় নিজেই একটা এনার্জি।
এবার হাইয়ার ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে দুটো কথা। গবেষকরা হাইয়ার ইন্টেলিজেন্স বলতে কি সৃষ্টিকর্তাকে বোঝাতে চেয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তর তাঁরা যুক্তি দিয়ে নয়, দিয়েছেন বিশ্বাস থেকে। এবং তাঁরা স্বীকার করেছেন, তাঁদের এই বক্তব্য তাঁরা প্রমাণ। করতে পারবেন না।
উত্তর হলো–না, হাইয়ার ইন্টেলিজেন্স বলতে তাঁরা সৃষ্টিকর্তাকে বোঝাতে চাননি। জিনিসটার অস্তিত্ব সম্পর্কে তাঁরা নিঃসন্দেহ, কিন্তু পরিচয় সম্পর্কে অতটা নয়। তবে সৃষ্টিকর্তা যে নয় সে-ব্যাপারে তাঁরা সবাই একমত। অনেক পণ্ডিত ইন্টেলিজেন্সের বিভিন্ন স্তরকে অবিচ্ছিন্ন একটা ধারা বলে মনে করেন–শুরু হয়েছে। জড় বস্তু থেকে, তারপর উদ্ভিদ, তারপর প্রাণী, তারপর মানুষ, তারপর হায়ার ইন্টেলিজেন্স এবং শেষ হয়েছে সৃষ্টিকর্তায়। তাঁদের ধারণা, প্রতিটি লেভেলের সাথে, জড় পদার্থ থেকে শুরু করে হাইয়ার ইন্টেলিজেন্স পর্যন্ত, বিজ্ঞান ভিত্তিক যোগাযোগ করার উপায় নিশ্চয়ই আছে।
আমাদের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে আমরা মানুষরা ক্রমবিকাশের একটা পর্যায় অতি সম্প্রতি শেষ করেছি। ওটা ছিলো আমাদের ব্রেনকে উন্নত করার প্রয়াস। এই কাজে আমরা সফল হয়েছি, অর্থাৎ কাজটা শেষ হয়েছে যতোগুলো ব্রেন সেল আমাদের পাবার ছিলো তার সবগুলোই আমরা পেয়ে গেছি। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে পরবর্তী পর্যায়ের কাজ–আর তা হলো, আমাদের মনের উন্নয়ন। এখন যেটাকে বিশেষ অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, অচিরেই আমরা সবাই সেই ক্ষমতার অধিকারী হতে পারবো। এর জনপ্রিয়তা এবং প্রসার ঠেকিয়ে রাখার কোনো উপায় নেই।
.
ব্যাস, এই পর্যন্তই। বই শেষ করবার আগে আপনাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনার সাথে সময়টা আমার চমৎকার কেটেছে।
: সমাপ্ত :