৪। আপনি নিজে যখন সাইকিক অপারেটরের ভূমিকায় থাকছেন, মনের সমস্ত সন্দেহ আর সংশয় একপাশে সরিয়ে রেখে সোজা ঝাঁপিয়ে পড়ুন। আপনার কল্পনার লাগাম ছেড়ে দিন, মনকে অনুমতি দিন যা খুশি তাই অনুমান করার। সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, অতীন্দ্রিয় জগতে বিচরণের সময় যাই পান, যাই দেখেন, যাই করেন, কোনো কিছুকেই যুক্তি দিয়ে বিচার করতে যাবেন না। কার্যকারণ খোঁজার কোনো দরকার নেই। দূর, এ সম্ভব নয়। এ ধরনের কথা যেন ভুলেও মুখ থেকে না বেরোয়। প্রথম যে চিন্তা বা অনুমান মাথায় আসবে সেটাকেই সত্যি এবং গুরুত্বপূর্ণ বলে মেনে নেবেন, দ্বিতীয় চিন্তাটাকে পাত্তা দেবেন না। কারণ দেখা গেছে, প্রথম চিন্তাটাই বেশিরভাগ সময় সঠিক হয়।
মুখ চালু রাখুন। নিচে থেকে ওপর পর্যন্ত তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা করুন শরীরটা। যা দেখতে পান, গড় গড় করে সব বলে যান।
৫। আপনি যখন ওরিয়েন্টোলজিস্টের ভূমিকায় থাকবেন, সাইকিককে কোনো ইঙ্গিত বা আভাস দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করবেন না। আপনি চান আপনার সাইকিক অপারেটর সফল হোক। আবার বুকে ফিরে যাও। ভালো করে দেখো, ওখানে কোনো ত্রুটি নেই তো? –এই ধরনের কথা বললে তাকে সাহায্য করা হবে না।
সাইকিককে কখনো বলবেন না যে তোমার ভুল হচ্ছে বা তুমি ভুল করছে। একেবারে শুরুর দিকে, যখন ভুরি ভুরি ভুল-ভ্রান্তি হবার সম্ভাবনা থাকে, প্রায়ই একটা ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। তা হলো, যাকে নিয়ে কাজ করার কথা তাকে না নিয়ে ভুল করে অন্য কাউকে নিয়ে কাজ শুরু করে দেয় সাইকিক। এ-ধরনের ভুল খুব স্বাভাবিক, এবং এটা বড় ধরনের ভুলও নয়, একটু চর্চা করলেই এর হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে। উৎসাহ না দিয়ে ওরিয়েন্টোলজিষ্ট যদি উল্টোটা করে, কাজের অগ্রগতি থেমে যাবার সম্ভাবনাই বেশি। সাইকিক ভুল করলে তাকে শুধু বলুন, ‘এ-ব্যাপারে আমার কাছে তথ্য নেই।
৬। সবাই যখন কেস নিয়ে কাজ করে নিয়মিত সফল হতে শুরু করেন, দলটাকে ভেঙে যেতে না দিয়ে এক রাখতে চেষ্টা করুন। গোটা দল নিয়ে ঘন ঘন সভা করা দরকার। কেস নিয়ে একসাথে কাজ করা দরকার। এভাবে কাজ করতে করতেই একদিন আপনি একটা কেস নিয়ে একা কাজ করার যোগ্য হয়ে উঠবেন। হয়ে উঠবেন। প্রচণ্ড অনুভূতিপ্রবণ, এবং তখন শুধু গুরুতর অসুস্থতার খবরই নয়, দৈনন্দিন জীবনের অনেক সূক্ষ্ম খবরও অনায়াসে পেতে শুরু করবেন।
৭। উপস্থিত কাউকে কেস হিসেবে গ্রহণ করবেন না। এটা করা আর দূরের কাউকে নিয়ে কাজ করার মধ্যে আইনগত পার্থক্য আছে। প্রথমটাকে বলা যায় প্রত্যক্ষভাবে রোগ নির্ণয়, যা কিনা আইনত শুধু পাস করা ডাক্তারদেরই করার অধিকার রয়েছে। দ্বিতীয়টাকে বলা যায়, সাইকিক ডিটেকশন অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা ব্যবহার করে, দূর থেকে ভালো-মন্দ লক্ষ্য করা। এটা করায় আইনগত কোনো বাধা নেই।
৮। যাকে নিয়ে কাজ করছেন, তার শরীরে কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কিছু যদি দেখেন, দুঃসংবাদটা তাকে দেবার জন্যে ছুটবেন না। দায়িত্বটা আপনার নয়, তার ডাক্তারের। আপনার দায়িত্ব হলো নিজের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা বাড়িয়ে নেয়া, যাতে লোকটাকে এবং অন্যান্যদের এই পন্থায় এবং আইনসঙ্গতভাবে সাহায্য করতে পারেন। আপনার মনের চোখে যে-সব ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়বে সেগুলো আপনি নিজের মন দিয়েই সারাবার চেষ্টা করবেন।
১৩. অন্যান্যদেরও সারিয়ে তুলুন
দূর থেকে অচেনা একজন লোকের অসুস্থতা ধরতে পারা বিস্ময়কর একটা ব্যাপার, কিন্তু এখানেই আপনি থেমে যেতে চান না। যেসব শরীরে আপনি আপনার সচেতনতা প্রজেক্ট বা আরোপ করেন সে-সব শরীরের রোগ বা অসুস্থতা সারিয়ে তোলার প্রতিক্রিয়াও আপনি প্রয়োগ করবেন। ডাক্তার-কবিরাজ না হয়ে, কোনো রকম ওষুধপত্র ব্যবহার না করে সাধু-সন্ন্যাসী, পীর-ফকিররা তাঁদের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার সাহায্যে রোগ বালাই সারিয়ে তুলতে পারলে, আপনি কেন পারবেন না! ব্যাপারটা চ্যালেঞ্জ বা তর্ক নয়, কারণ পারা যে যায় সেটা নিঃসন্দেহে প্রমাণ হয়েছে। সাধু-সন্ন্যাসী বা অন্যান্যদের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা ব্যবহারে ভুল-ভ্রান্তি থেকে যাবার প্রচুর সম্ভাবনা আছে, কারণ এই ক্ষমতা অর্জন এবং ব্যবহার সম্পর্কে তাঁদের কোনো রকমের ট্রেনিং নেয়ার সুযোগ হয়নি। বোধহয় সেজন্যেই অভিযোগ শোনা যায়, অমুক লোককে ফকির বাবাজী চিকিৎসা করেছিল, কিন্তু রোগটা আরো বেড়ে গেল। এদের প্রতি কিছু লোকের যেমন ভক্তি আছে, তেমনি কিছু লোকের রয়েছে চরম অবিশ্বাস। অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করতে না জানার ফলে বা অপব্যবহার করায় ফলাফল সব সময় সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারে না, সেটাই এই অবিশ্বাসের কারণ।
আপনি পদ্ধতি এবং কৌশল শিখে রীতিমত চর্চার পর রোগ সারাবার কাজে হাত দেবেন, কাজে ভুল-ভ্রান্তির সম্ভাবনা নেই। এই সব পদ্ধতি এবং কৌশল সাধারণ মানুষের অলস মস্তিষ্ক থেকে আসেনি, এসেছে নিবেদিত প্রাণ গবেষকদের দীর্ঘকাল গবেষণার ফসল হিসেবে। এগুলোকে সঠিক এবং ত্রুটিহীন মনে না করার কোনো কারণ নেই।
একটা বিষয় পরিষ্কার, মনকে কোথাও বা কারো ভেতর ঢোকাবার ব্যাপারে এনার্জি বা শক্তির একটা ভূমিকা আছে। এই শক্তি চালিত হয় আমাদের মনের অভিপ্রায় বা সংকল্পের দ্বারা। মনের এই সংকল্প যদি বদলে দেয়া যায়, তাহলে শক্তির গতিবিধি এবং অর্জনও বদলে যাবে। মনের সংকল্প যদি তথ্য পাওয়া হয়, শক্তি তখন সেটা। সংগ্রহের জন্যে ছোটে। সেই রকম, মনের সংকল্প যদি রোগ-বালাই সারিয়ে তোলা হয়, শক্তিও তখন সেই কাজ সম্পাদন করার জন্যে উঠেপড়ে লাগে।