ওগো বন্ধু, বিশ্বাস করো না তাকে।
মুচকি হেসে উপেক্ষা কবো তার ভালোবাসার প্ৰতিজ্ঞা
দয়িতের জন্যে ছলাকলা,
আর প্রতারণা– কিছুই অসাধ্য নয় তার।
একান্ত নিবিষ্ট মনে যখন সে পশমের কারুকার্যে রত,
তখনো আচ্ছন্ন থাকে পরকীয়া প্রেমে
মনে রেখো সেই কথা– ইউসুফের,
কান পেতে শোনো সেই আদমের মর্মভেদী করুণ ক্ৰন্দন–
আজও শোনা যায়.
সব ধর্মেই নারী অশুভ, দূষিত, কামদানবী। নারীর কাজ নিষ্পাপ স্বর্গীয় পুরুষদের পাপবিদ্ধ করা; এবং সব ধর্মেই নারী অসম্পূর্ণ মানুষ। নারী কামকৃপ, তবে সব ধর্মই নির্দেশ দিয়েছে যে নারী নিজে কাম উপভোগ করবে না, রেখে দেবে পুরুষের জন্যে; সে নিজের রন্ধটিকে একটি অক্ষত টাটকা সতীচ্ছদে মুড়ে তুলে দেবে পুরুষের হাতে। পুরুষ সেটি ইচ্ছেমতো ভোগ করবে, নিজের জমি যেভাবে ইচ্ছে চাষবে। ইসলাম নারী সম্পর্কে এ-ধারণাই পোষণ করে। ইসলামে একজন নারী, সে যতোই অসাধারণ হোক, একজন পুরুষের, সে যতোই তুচ্ছ অপদাৰ্থ পাশবিক হোক, অর্ধেক। গাজালি বলেছেন, ‘হাওয়া নিষিদ্ধ ফল খেয়েছে ব’লে আল্লা তাকে আঠারো রকমের শাস্তি দিয়েছে।’ এর মাঝে রয়েছে ঋতুস্রাব, গর্ভ নিজের পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্নতা, অচেনা পুরুষের সাথে বিয়ে ও তার বাড়িতে বন্দীজীবন কাটানো প্রভৃতি, এবং নারীকে দেয়া হয়েছে মেধার ১০০০ উপাদানের মধ্যে মাত্র একটি, আর পুরুষকে, সে যতোই দুশ্চরিত্র হোক, দেয়া হয়েছে বাকি ৯৯৯টি [দ্র মাইলস (১৯৮৮, ৬৯-৭০)]। ইসলামে পুরুষ নারীর থেকে তুলনাহীনভাবে শ্রেষ্ঠ, এবং নারী হচ্ছে কামসামগ্ৰী– পৃথিবী থেকে বেহেশত পৰ্যন্ত।
কোরান-এ আছে :
পুরুষ নারীর কর্তা, কারণ আল্লা তাদের এককে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এজন্যে যে পুরুষ ধনসম্পদ ব্যয় করে।…স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা করো তাদের সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন করো এবং তাদের প্রহার করো [সুরা নিসা : ৩৪]।
হাদিসে রয়েছে। [মিশকাত, দ্র। রফিক (১৯৭৯, ১৮১)] :
যদি আমি অন্য কাউকে সিজদা করতে আদেশ দিতাম তাহলে নারীদেরই বলতাম তাদের স্বামীদের সিজদা কবতে।
পুরুষ ও নারী ইসলামে ব্যক্তি হিশেবে প্ৰভু ও দাসী। পুরুষের প্রতিনিধিরূপে প্রতিটি পরিবারে কাজ করে স্বামী, নারীর প্রতিনিধিরূপে স্ত্রী। নারী দাসী, তবে সম্ভোগের বস্তুও। সব রকম সম্ভোগের চূড়ান্তরূপ হচ্ছে নারীসম্ভোগ; এবং এ-ধর্মেও নারীকে নির্দেশ করা হয়েছে কামসামগ্ৰীৱৰূপে: পুরুষের কামকে পৃথিবী থেকে স্বর্গ পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, আর নারীর কামকে ক’রে দেয়া হয়েছে নিষিদ্ধ।
কোরান-এ আছে :
তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র, তাই তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছে প্রবেশ কবতে পারো [সুরা বাকারা : ২২৩] ;
হাদিসে আছে [দ্র নূর মোহাম্মদ (১৯৮৭, ১৮৭-২০০১); রফিক (১৯৭৯, ১৮১-১৮৩)] :
পুরুষের পক্ষে নারী অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর বিপদের জিনিস আমি আমার পরে আর কিছু রাখিয়া যাইতেছি না।
সতর্ক হও নারী জাতি সম্পর্কে। কেননা বনি ইসাইলের প্রতি যে প্রথম বিপদ আসিয়াছিল তাহা নারীদের ভিতর দিয়াই আসিয়াছিল।
অকল্যাণ রহিয়াছে তিন জিনিসে নারী, বাসস্থান ও পশুতে।
নারী শয়তানের রূপে আসে আর শয়তানের রূপে যায়।
নারী হইল আওরত বা আবরণীয় জিনিস। যখন সে বাহির হয় শয়তান তাহাকে চোখ তুলিয়া দেখে। যখন কোনো রমণীকে তার স্বামী শয্যায় আহ্বান করে এবং সে অস্বীকার করে এবং তার জন্য তার স্বামী ক্ষোভে রাত কাটায়–সেই রমণীকে প্রভাত পৰ্যন্ত ফেরেশতাগণ অভিশাপ দেয়।
স্ত্রীগণকে সদুপদেশ দাও, কেননা পাঁজরের হাড় দ্বারা তারা সৃষ্ট। পাজরের হাড়ের মধ্যে ওপরের হাড় সবচেয়ে বাঁকা–যদি ওকে সোজা করতে যাও তবে ও ভেঙে যাবে, যদি ছেড়ে দাও তবে আরো বাঁকা
হবে।
পুরুষ নারীর বাধ্য হলে ধ্বংসপ্ৰাপ্ত হয়।
এর সারকথা হচ্ছে নারী অবাধ্য, অশুভ, ও কামুক। তবে নারী তার কাম চরিতার্থ করতে পারবে না, পুরুষ নারীতে চরিতাৰ্থ করবে কাম। ইসলামে কামসামগ্ৰী নারীর চরম রূপ হূর বা স্বর্গের উর্বশী। পুরুষের কামকল্পনা চূড়ান্ত রূপ ধরেছে হূর-এ। বেহেশত সম্পূর্ণরূপে পুরুষের প্রমোদপল্লী; অধিকাংশ নারী জুলবে দোজখে [হাদিসে আছে : ‘দোজখ পরিদর্শনকালে আমি দোজখের দ্বারে দাঁড়ালাম এবং জানতে পারলাম যে দোজখীদের মধ্যে নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ’ : হাদিস, দ্র বোখারী শরীফ, ২১৬], আর যাদের দেহ হচ্ছে পুরুষের আদিম কামকল্পনার প্রতিমূর্তি।
কোরান-এ আছে :
ওদের সঙ্গিনী দেবো আয়তলোচনা হূর [সুরা দুখান : ৫৪]।
সাবধানীদের জন্যে রয়েছে সাফল্য উদ্যান, দ্রাক্ষা, সমবয়স্কা উদ্ভিন্নযৌবনা তরুণী এবং পূর্ণ পানপত্র [সুরা নাবা : ৩১-৩8]।
সে সবের মাঝে রয়েছে বহু আনতনয়না যাদের এর আগে কোনো মানুষ বা জিন স্পর্শ করে নি। [সুরা রাহমান : ৫৬]।
আমি তাদের মিলন ঘটাবো আয়তলোচনা হূরের সঙ্গে [সুরা তূর : ২০]।
হাদিসে আছে [দ্র রফিক (১৯৭৯, ৩০১)] :
হরিণনয়না স্বৰ্গসুন্দরীগণ তাদের পত্নী হবে। তারা সবাই (৩৩/৩৪ বছরের পূর্ণ যৌবনপ্রাপ্ত) সমবয়স্ক হবে।
যদি বেহেশতের কোনো নারী পৃথিবীতে অবতীর্ণ হতো। তবে তার দেহভবা মৃগনাভির সৌরভো পৃথিবী ভরপুর হয়ে যেতো এবং তার সৌন্দর্যে সূর্য ও চন্দ্ৰ মলিন হতো।