শ্যামা তন্বী আমি মেঘ-বরনা
(বর্ষা)
মেঘ তেতালা
শ্যামা তন্বী আমি মেঘ-বরনা।
মোর দৃষ্টিতে বৃষ্টির ঝরে ঝরনা॥
অম্বরে জলদ-মৃদঙ্গ বাজাই,
কদম-কেয়ায় বন-ডালা সাজাই,
হাসে শস্যে কুসুমে ধরা নিরাভরণা॥
পুবালি হাওয়ায় ওড়ে কালো কুন্তল,
বিজলি ও মেঘ – মুখে হাসি, চোখে জল।
রিমিঝিমি নেচে যাই চল-চরণা॥
সহসা কী গোল বাধাল পাপিয়া আর পিকে
সিন্ধু–ভৈরবী মিশ্র দাদরা
সহসা কী গোল বাধাল পাপিয়া আর পিকে।
গোলাপ ফুলের টুকটুকে রং চোখে লাগে ফিকে॥
নাই বৃষ্টি বাদল ওলো
দৃষ্টি কেন ঝাপসা হল?
অশ্রুজলের ঝালর দোলে চোখের পাতার চিকে॥
পলাশকলির লাল আখরে বনের দিকে দিকে
গোপন আমার ব্যথার কথা কে গেল সই লিখে।
মনে আমার পাইনে লো খেই,
কে যেন নেই, কী যেন নেই!
কে বনবাস দিল আমার মনের বাসন্তীকে॥
স্নিগ্ধ-শ্যাম-বেণি-বর্ণা এসো মালবিকা
মিয়া কি মল্লার তেতালা
স্নিগ্ধ-শ্যাম-বেণি-বর্ণা এসো মালবিকা!
অর্জুন-মঞ্জরী-কর্ণে গলে নীপ-মালিকা, –
মালবিকা॥
ক্ষীণা তন্বী জলভার-নমিতা,
শ্যাম জম্বুবনে এসো অমিতা!
আনো কুন্দ-মালতী-জুঁই ভরি থালিকা
মালবিকা॥
ঘন-নীল বাসে অঙ্গ ঘিরে
এসো অঞ্জনা-রেবা নদীর তীরে!
পরি হংসমিথুন-আঁকা শাড়ি ঝিলিমিল
এসো ডাগর চোখে মাখি সাগরের নীল।
ডাকে বিদ্যুৎ-ইঙ্গিতে দিগ্বালিকা –
মালবিকা॥