The assimilation of the fruit-bearing soil to the child-bearing women is universal ….. the fecundity of the earth and the fecundity of women are viewed as being one and the same quality.
James Frazer-ও বলেন :
In the opinion of those who performed them (ceremonies) the marriage of trees and plants could not be fertile without the real union of the human sexes …. ruder races in other parts of the world have consciously employed the intercourse of the sexes as a means to ensure the fruitfulness of the earth; and some rites which are still of were till lately, kept up in Europe can be reasonably explained only as stunted relics of similar practice.
G. Thomson-ও বলেন :
The desired reality is described as though already present.
এ বিশ্বাসের আরো একটি দিক রয়েছে। পৃথিবীর পিছিয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে আজো এ বিশ্বাস টিকে আছে যে, নারীদেহ থেকেই আদি শস্যের উদগম হয়েছে। আমাদের দেশেও এ বিশ্বাস চালু ছিল তার প্রমাণ রয়েছে মার্কেন্ডেয় পুরাণে, আর আভাস আছে অনেক ক্ষেত্রে। মার্কেন্ডেয় পুরাণে দেবী বলেছেন :
ততোহহম খিলং লোকমাত্মদেহসমুদ্ভবৈ:।
ভবিষ্যামি সুরা: শাকৈরাবৃষ্টৈ: প্রাণধারকৈ: ॥
শাকম্ভরীতি বিখ্যাতিং তদাস্যাম্যহং ভূবি।
[অনন্তর আমি নিজদেহ উদ্ভুত প্রাণধারক শাকের সাহায্যে যত দিন না বৃষ্টি হয়, ততদিন জগৎ পালন করব। এইজন্য আমি শাকম্ভরী নামে বিখ্যাত হব ] এই শাকম্ভরীই দুর্গা। দুর্গোৎসব হয় শরৎকালে। এতে সেই শস্যদেবীর পূজা উৎসবের আভাস মেলে। দুর্গাপূজার ভিতরেই দেখিতে পাই ….. একটি কলাগাছের সহিত কচু, হরিদ্রা, জয়ন্তী, বিন্দু, ডালিম, মানকচু, অশোক এবং ধান্য একত্রে যে শস্যবধূ নির্মাণ করা হয়, …. এই শস্যবধূকেই দেবীর প্রতীক বলিয়া গ্রহণ করিয়া প্রথমে পূজা করিতে হয়। শাকম্ভরী বলেই দুর্গা অন্নদা-অন্নপূর্ণা রূপেও পরিচিতা। হরপ্পায় আবিষ্কৃত একটি সীলে দেখা যায় একটি নগ্ন নারীমূর্তির দুটো পা দুপাশে ছড়ানো আর তার যোনি থেকে একটি লতা বেরিয়ে এসেছে। এ নারী যে শস্যদেবী এবং ফসল যে এদেবীর আত্মদেহসমুদ্ভবৈ : তাতে সন্দেহ নেই। এদেশের উমা ও প্রাচীন আনার্যদেবী; কেবল তাই নয়, এর বহির্ভারতিক অস্তিত্বও দেখা যায় :
The babylonian word for mother is Ummu or Umma, the Accadian Ummi and the Dravidian is Umma. These words can be connected with each other and with Uma the mother goddess.
কৃষির শুরু নারীদের হাতেই। প্রসবিনী নারীরা হয়তো নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে ফসলি উৎপাদনী ভূমির প্রজননক্রিয়া কল্পনা করেছে। তা থেকেই মৈথুন-প্রজননে এবং প্রসব উৎপাদনেও অভিন্ন পদ্ধতি কল্পিত হয়েছে। R. Briffault বলেন :
The art of cultivation has developed exclusively in the hands of women.
G. Thomson 76901 :
Food-gathering led to the cultivation of seed in plots adjacent to the settlement and so garden tillage is womens work.
অন্যান্য বিদ্বানেরাও এ মত সমর্থন করেন। পিতৃপ্রাধান্য অর্থে বীজ প্রাধান্য, আর মাতৃপ্রাধান্যসূচক ক্ষেত্র প্রাধান্য–শব্দদুটোর অভিধার মধ্যেও কৃষিপদ্ধতির আভাস রয়েছে। নারী উদ্ভাবিত কৃষিপদ্ধতির সঙ্গে নারীদেবীর যোগ থাকাই স্বাভাবিক। তাই পৃথিবীর সর্বত্র বসুমাতার কল্পনা প্রশ্রয় পেয়েছিল। পশুজীবী আর্যেরা এদেশে এসে কৃষিজীবী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষি সংক্রান্ত ও কৃষিজীবী সমাজের সংস্কারের প্রভাবে পড়েছিল বলে অনুমান করি। তাই বাজসনেয়ী সংহিতা, ব্রাহ্মণ, বৃহদারণ্যক, ছান্দোগ্য প্রভৃতিতে মৈথুন, প্রজনন, জীবন ও সম্পদ প্রভৃতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্বীকৃত হয়েছে।১৭ ছান্দোগ্যে আছে :
ক. হে গৌতম, স্ত্রীলোকই হলো যজ্ঞীয় অগ্নি, তার উপস্থই হলো সমিধ। ওই আহ্বানই হলো ধূম। যোনিই হলো অগ্নিশিখা। প্রবেশক্রিয়াই হলো অঙ্গার। রতি সম্ভোগই হলো স্ফুলিঙ্গ।
অগ্নিতে দেবতারা রেতর আহুতি দেন। সেই আহুতি থেকেই গর্ভ সম্ভব হয়।
খ. ছান্দোগ্যের বামদেব্য ব্রতকথায় আছে।
যে একইভাবে বামদেব্য সামকে মৈথুনে প্রতিষ্ঠিত জানে; সে মৈথুনে মিলিত হয়। (তার) মিথুন থেকে সন্তান উৎপন্ন হয়। সে পূর্ণজীবী হয়; সন্তান, পশু ও কীর্তিতে মহান হয়। কোনো স্ত্রীলোককেই পরিহার করবে না–এই-ই ব্রত।
এসব আদিম ধারণা থেকেই উদ্ভূত আদিম আচার আজো নতুন তাৎপর্যে ধর্মশাস্ত্রের অঙ্গ হয়ে আছে। আজো তাই লতা, স্ত্রীভগ, যন্ত্র প্রভৃতি সাধন-পূজনের অপরিহার্য অঙ্গ। কেবল এখানেই শেষ নয়, দেবতার হাতের ডালিম হচ্ছে রক্ত তথা রজ : ঋতুর প্রতীক। রজ: আবার সিন্দুরেও প্রতীকীরূপ নিয়েছে। আর পদ্ম হচ্ছে নারীযোনির প্রতীক।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে চেয়েছি যে আর্যেরা প্রাকৃতিক শক্তির পূজারী ছিল। পশুজীবী আর্যরা প্রকৃতি-প্রতীক দেবতা বায়ু, বরুণ, অগ্নি, ইন্দ্র প্রভৃতি কল্পনা করেছে। আর অনার্যেরা গুণময় শক্তির পূজারী ছিল। প্রকৃতির প্রসাদ নির্ভর আদিকালের অজ্ঞ অসহায় মানুষ কল্পনাশ্রয়ী না হয়েই পারেনি। অসহায় অসমর্থের অপ্রাপ্তি-অসাফল্যের ভয় থেকেই বিশ্বাস উৎসারিত। আজো দুর্বলচিত্তে তুকতাক ও শুভাশুভ প্রতাঁকের প্রভাব অপরিমেয়। নিজের মনোবাঞ্ছা সিদ্ধির অনুকূল পরিবেশ পেলে যে-কোনো মানুষ তার প্রয়াসে ও বাঞ্ছায় সিদ্ধি সম্বন্ধে আশান্বিত হয়ে ওঠে। বাহ্য নিদর্শন ঘিরে এই যে সিদ্ধির বা অসিদ্ধির কল্পনার প্রশ্রয় তা আজো কম নয়। তুকতাক, দারু-টোনা এবং শুভাশুভ প্রতীক, তিথি, নক্ষত্র ও দিনক্ষণের উপর কর্মের ফলাফল নির্ভরতায় বিশ্বাস আজো অধিকাংশ লোকের মনে দৃঢ়মূল। অক্ষম মানুষকে বাঞ্ছ সিদ্ধির কামনার তীব্রতাই যাদু বিশ্বাসের প্রবর্তনা দেয়। মনের এমনি অবস্থায় সিদ্ধির অনুকূল কাল্পনিক ও আচারিক আবহ সৃষ্টি করাও অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়। দুনিয়ার মানুষের আদিম জীবন-জীবিকা সংস্থায়। স্বাভাবিকভাবেই তাই এ মনোবল সঞ্চয়ের সহায় যাদুবিশ্বাস চালু ছিল। প্রয়োজন ও ক্ষেত্র অনুসারে নানা বৈচিত্র্যে বিবর্তিত হয়ে আজকের দিনের সমাজে ও ধর্মে রূপ নিয়েছে।