ভয়েজার স্পেস প্রোবগুলোয়** কোনো মানুষ ছিল না, অবশ্যই। কি তাদের পাঠানো ইমেজগুলো বাস্তব। একই সাথে একেবারে অকল্পনীয়। ভুবনগুলো অবাক করা। আইওর সার্বক্ষণিক ফুটতে থাকা জ্বালামুখ, ক্যাসিস্টোর বিচিত্র মুখাবয়ব, গ্যানিমিতের চষে ফেলা বুক- আমরা যেন একেবারে আনকোরা এক সৌজগত আবিষ্কার করে ফেলেছি। এসবই আমাকে ২০১০ লিখতে উদ্বুদ্ধ করে। ডেভ বোম্যানের বাকিটুকু ব্যাখ্যা করার সুযোগও আসে সেই সাথে।
[** এটা বৃহস্পতির কাছে সিং-ট বা গ্র্যাভিটি এ্যাসিস্ট ম্যানুভার নিতে পেরেছিল- যা ডিসকৰি করে ২০০১ এর তালে।]
১৯৮১ সালে নতুন বইটা লেখা শুরু করি। স্নায়ুযুদ্ধ চলছে তখনো। মনে হল আমেরিকা-রাশিয়ার যৌথ মহাকাশ অভিযানের নকশা প্রকাশ করে আমি যেন তোপের মুখে পড়ব। আন্দ্রে শাখারভ আর এলেক্সি লিওনকে উৎসর্গ করে আগুনে যেন আরো ঘৃতাহুতি দিলাম। লিওনকে আমি জানিয়েছিলাম, শিপটার নাম হচ্ছে আপনার নামে, তিনি বলেছিলেন, ‘তাহলে সেটা খুব ভাল শিপ হবে।’
এখনো আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়- ১৯৮৩ সালে পিটার হাইমস ছবিটা বানানোর সময় সত্যি সত্যি তিনি বৃহস্পতিয় চাঁদগুলোর ক্লোজআপ নিতে পেরেছেন তয়েজার মিশন থেকে (কোনো কোনোটা জেট পোপালশন ল্যাবরেটরি থেকে কম্পিউটার প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে আসে)।
গ্যালিলিও মিশন বৃহস্পতিয় এলাকায় থাকবে মাসের পর মাস। ছবি পাঠাবে অজস্র। এ সময়টায় আমাদের জ্ঞান বেড়ে যাবে বিস্ময়করভাবে। এখন ওডিসি থ্রি না লেখার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিন্তু ১৯৮৬ সালে কিছু সমস্যা হয়ে যায়। আমরা আরো এক দশকের আগে গ্যানিমিড ক্যালিস্টে আইও ইউরোপার কোনো পরিষ্কার চিত্র পাব না।
আমি আর দেরি করার পক্ষপাতী নই। ১৯৮৫ সালে হ্যালির ধূমকেতু সৌরজগতের ভিতরের দিকে আসবে। পরেরবার আসছে ২০৬১ সালে। ওডিসি খ্রির জন্য সময়টা উপযুক্ত। সামান্য এ্যাডভান্সের বিনিময়ে প্রকাশককে যে সময়ে দেয়ার কথা তখন এটা দিতে পারব কিনা সে সম্পর্কেও আমার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। তাই আমি ডেল রের প্রকাশককে উৎসর্গ করেছিলাম বইটা।
একটা সায়েন্স ফিকশন সিরিজ লেখা হয় চার খন্ডে, ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে, প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের সময় (বিশেষত মহাকাশবিদ্যায়)। ২০১০ এর ভূমিকাতেই উল্লেখ করে দিয়েছি, এ বইগুলো একই সিরিয়ালের হলেও একই কাহিনী নয়, একই থিমের উপর ভিন্ন ভিন্ন প্রসারিত ধারণা।
তাই, এ ফাইনাল ওডিসিতে আগের বইগুলোর অনেক ধারণা বাতিল করা হয়েছে। অন্য গৌণ ধারণাকে করেছি মুখ্য। কেউ যদি এ প্রবাহ দেখে দুঃখিত হন, তাহলে এক আমেরিকান প্রেসিডেন্টের মতো রাগি বার্তা পাঠাব, এটা গল্প, বোকা।
এবং এসবই আমার নিজের গল্প, আপনি হয়ত টের পাননি। আমি জেন্ট্রি লি’র সাথে কাজ করে মজা পেয়েছি। মজা পেয়েছি আর সবার সাথেও। পরবর্তী বড় প্রজেক্টগুলোর যেগুলো আমি নিজে চালাতে কষ্ট পাব সেসবের জন্য এমন দামি মানুষ টেনে আনতে পিছপা হব না।
তাহলে, প্রতিটা শব্দই আমার: হ্যাঁ, প্রায় প্রতিটা শব্দ। আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে অধ্যায় ৩৫ এর প্রফেসর থিরুগনানাসাম্পাহামূর্তিকে পেয়েছি কলম্বো টেলিফোন ডিরেক্টরি থেকে। আশা করি নামের বর্তমান মালিক অভিযোগ করবেন না ধার নেয়াতে। বিশাল অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি থেকে আরো কিছু ঋণ আছে। আর দেখে অবাক হই যে এখানে আমার লেখা থেকে বিভিটা কোটেশন নেয়া হয়েছে বাক্য আর শব্দ বোঝানোর জন্য।
প্রিয় ও ই ডি, যদি এখানেও ব্যবহার করার মতো কোনো উদাহরণ পাও, প্লিজ, আমার আতিথেয়তা নিতে ভুল করোনা।
আমি এ কথাটুকু লেখার সময় যে কাশিগুলো দিয়েছি (অন্তত দশটা) তার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
সবশেষে, আমি আমার অসংখ্য বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু, মুসলমান বন্ধুকে আন্ত রিকভাবে জানাতে চাই যে আপনাদের ধর্ম শাস্তি যে বাণী বহন করে তা মানসিক উৎকর্ষে অত্যন্ত কাজে লাগবে, এটাই আমার বিশ্বাস। পশ্চিমা গবেষণায় দেখা যায় শারীরিক উন্নয়নেও ধর্মের প্রভাব রয়েছে।
সম্ভবত সজ্ঞান ও অসুখি হওয়াটা অজ্ঞান ও সুখি হওয়ার চেয়ে ভাল।
আশা রাখি আমাদের অনাগত বংশধররা দ্বিতীয় পথেই থাকবে।
আর্থার সি ক্লার্ক
কলম্বো, শ্রীলঙ্কা
সেপ্টেম্বর ১৯, ১৯৯৬