সব মিলিয়ে, আমি আশা করি তাদের কথাই ঠিক। কিন্তু এখানে মৌলিক কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যদি এফ টি এল সব হয়, এত সব হিচহিকাররা কোথায়? অs ত ট্যুরিস্টদের দেখা পাওয়া যেত।
একটা জবাব হল, কোনো অনুভূতি সম্পন্ন ই টি বা ভিনগ্রহী ইন্টারস্টেলার ভেহিক্যল বানাবে না, যে কারণে আমরা কয়লা চালিত উড়োজাহাজ বানাই না- সে কারণেই কাজটা করার মতো আরো ভাল উপায় আছে।
.
একজন মানুষকে প্রকাশ করার জন্য যে সামান্য বিট প্রয়োজন, অন্য কথায় তার সারা জীবনের সমস্ত স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা ধরে রাখতে যা প্রয়োজন সেটা নিয়েই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় রয়্যাল এ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ত্রৈমাসিক জার্নালের ৩৫ তম বছরের দ্বিতীয় সংখ্যায় [জুন ১৯৯৪] প্রকাশিত লুইস কে শেফারের ‘মেশিন ইন্টেলিজেন্স, দ্য কস্ট অব ইন্টারস্টেলার ট্র্যাভেল এ্যান্ড ফার্মিস প্যারাডক্স’ শীর্ষক জার্নাল থেকে। এ পেপার নিঃসন্দেহে প্রতিষ্ঠানটার মন অস্থির করা লেখাগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এখানে দেখানো হয় পুরোপুরি সুস্থ, স্মৃতিসম্পন্ন একশ বছর বয়সী মানুষের স্মৃতি ধরে রাখা যাবে এক পেটাবিটে। এমনকি আজকের দিনের অপটিক্যাল ফাইবারগুলোও এক মিনিটের মধ্যে এ তথ্য আদানপ্রদান কতে পারবে।
স্টারট্রেকের ট্রান্সপোর্টার ৩০০১ সালেও আবিকৃত হবে না, এটাই মনে করি আমি। মহাজাগতিক কোনো ট্যুরিস্ট এখনো এখানে আসেনি এভাবে, তার একটাই কারণ, পৃথিবীর বুকে এখনো ট্রান্সপোর্টারের রিসিভার বসানো হয়নি।
অধ্যায় ১৫: শুক্রের পথে
এ অধ্যায়ের কৃতীত্ব এ্যাপোলো ১৫’র কুদের দিতে পেরে আমার ভাল লাগছে। চাঁদ থেকে ফিরে এসে তারা আমাকে লুনার মডিউল ফ্যালকনের ল্যান্ডিং সাইটের রিলিফ ম্যাপ দিয়েছিল, আমার অফিসে এখনো দেখানোর মতো জিনিস হিসাবে টানানো আছে সেটা। এখানে তিনবারের অভিযানে লুনার রোভারের পথনির্দেশ করা ছিল। একবার সে যানটায় করে তারা গিয়েছিল পৃথিবী-জোছনার জ্বালামুখে। ম্যাপটায় লেখা আছে, এ্যাপোলো ১৫র অভিযাত্রীদের পক্ষ থেকে আধার কার্কের প্রতি, আপনার মহাকাশ ভিশনারি আমাদের সহায়তা করেছে। ডেভ স্কট, আল ওয়ার্ডেন, জিম অরউইন।
আমিও তাদের উৎসর্গ করেছিলাম কিছু লিখে।
সি বি এস স্টুডিওতে ওয়াল্টার ক্রনকাইট আর ওয়ালি শিরার সাথে এ্যাপোলো ১৫ ল্যন্ডিং কভার করার পর মিশন কন্ট্রোলে উড়ে গিয়েছিলাম রেন্ট্রি আর স্প্যাশউড দেখার জন্য। আল ওয়ার্ডেনের ছোট মেয়েটা প্রথম লক্ষ্য করে তিন প্যারাস্যুটের একটী ডিপ্রয় করতে পারেনি। ব্যাপারটা ভাবিত করে আমাদের, কিন্তু বাকি দুজনেই কাজ করার জন্য যথেষ্ট।
অধ্যায় ১৬ : কাপ্তানের টেবিল
প্রোবের ইম্প্যাক্ট জানার জন্য ২০০১: আ স্পেস ওডিসি’র ১৮ অধ্যায় দেখুন।
সেখানে বলেছিলাম, ৭৭৯৪ গ্রহাণু আবিস্কৃত হয়েছে চান্দ্র অবজার্ভেটরিতে, ১৯৯৭ সালে! যাক, ঘটনাটাকে ২০১৭ সাল, আমার শততম জন্মদিনে নিয়ে যাচ্ছি।
জেনে আনন্দিত হয়েছি যে গ্রহাণু ৪৯২৩ এর নামকরণ হয়েছে ক্লার্ক, প্রজেক্ট স্পেসগার্ডের স্মরণে (রঁদেভু উইথ রামা, দ্য হ্যাঁমার অব গড)।
জেনে মন খারাপ হয়েছে যে এ আইনস্টাইনের স্মরণে গ্রহাণু ২০০১ এর নাম দেয়া হয়েছিল; সেটা হারিয়ে গেছে। দুঃখজনক, দুঃখজনক…।
এ জেনে খুব ভাল লেগেছে যে এ্যস্টেরয়েড ৫০২০ আবিস্কৃত হয় ৪৯২৩ এর সাথে, একই দিনে, সেটার নাম দেয়া হয় আজিমভ- কিন্তু কষ্টের ব্যাপার এই যে, আমার এ পুরনো বন্ধু সে খবর জেনে যেতে পারলেন না।
বিদায়বাণী আর ২০১০: ওডিসি টু এবং ২০৬১; ওডিসি থ্রি’র অথর নোটে ব্যাখ্যা করেছি যে উচ্চাকাক্ষার গ্যালিলিও মিশনে বৃহস্পতি আর বৃহস্পতিয় উপগ্রহ চষে ফেলা যাবে, আমরা অনেক বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারব; মাথা ঝিম ধরানো সব ছবি দেখতে পাব এসব অজানা রহস্যপুরীর।
যাক, অনেক দেরি করে হলেও গ্যালিলিও অবশেষে প্রথম লক্ষ্যের দিকে চলে গেছে- স্বয়ং গ্রহরাজ বৃহস্পতিতে- কাজও করছে ভালভাবে। কিন্তু, হায়, এখানে একটু সমস্যাও আছে- কোনো এক কারণে মূল এ্যান্টেনা আর ভোলা যায়নি। তাই ইমেজগুলো পাঠানো হবে লো-গেইন এ্যান্টেনা দিয়ে, খুব যন্ত্রণাদায়ক ধীরগতিতে। কম্পিউটারের প্রোগ্রামিংয়ে পরিবর্তন এনে জাদু ফলানোর চেষ্টা আংশিক সফল হলেও এক মিনিটে যেটুকু ডাটা পাঠানো যেত সেজন্য লাগবে কয়েক ঘন্টা।
আমাদের ধৈর্য ধরতেই হবে। আমি কল্পনাচোখে গ্যানিমিডকে দেখা শুরু করি সেটাকে সত্যি সত্যি দেখে ফেলেছে গ্যালিলিও ২৭ জুন, ১৯৯৬ সালে।
জুলাই, ১১, ১৯৯৬। বইটা শেষ করতে আর দুদিন বাকি। আমি জে পি এল থেকে প্রথম ইমেজটা ডাউনলোড করি। কপাল ভাল- এখন পর্যন্ত আমার বর্ণনা থেকে খুব বেশি দূরে নয় আসল চিত্র। কিন্তু যদি সেখানে বরফমোড়া এলাকা বাদ দিয়ে কোথাও না কোথাও পাম গাছের সারি দেখা যায়, সেই সাথে লেখা থাকে- ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাও। তাহলে আমি সত্যি বেকায়দায় পড়ব, মনশ্চক্ষে দেখতে পাচ্ছি…
আমি বিশেষ করে গ্যানিমিড সিটির ক্লোজ-আপের অপেক্ষায় আছি (অধ্যায় ১৭ দেখুন)। অবাক ব্যাপার- এখানেও আমার ধারণা পুরোপুরি মিলে গেছে। আর এর রাস্তাঘাট যদি দশ কিলোমিটার চওড়া হয়ে থাকে তো ভাবনা কী? মিডরা হয়ত আসলেই বিশালবপু…