আসলে, সিদ্ধান্ত একটাই, ডিজিটাল অকল্যাণের প্রতিনিধিদের বায়োলজিক্যাল আর কেমিক্যালদের সাথেই বসিয়ে রাখতে হবে। আশা করা যায় চিরদিনের জন্য। পিকো ভন্টে।
৩৭. অপারেশন ডেমোক্লেস
পোল মানুষ আশা করে কখনো ব্যবহার করতে হবে না- সেই অস্ত্র এ্যাসেল করা লোকদের সাথে খুব বেশি যোগাযোগ করেনি। অপারেশনটার নাম দেয়া হয় ডেমোক্রেস। ব্যাপারটা এত বেশি উচ্চ স্তরের যে সে খুব বেশি অবদান রাখতে পারবে না। টাস্কফোর্সের যে রূপ সে দেখেছে, তাতে স্পষ্ট মনে হয় তারা মানুষ নয়, এ্যালিয়েন। একজন পাগলাগারদের ছিল, এখনো এ জিনিসের অস্তিত্ব আছে ভেবে অবাক হয় পোল। চেয়ারপার্সনের অভিমত অবশ্য স্নি, একজন কেন, অত আরো দুজনকে সেখানে পাঠানো উচিৎ।
‘এনিগমা প্রজেক্টের কথা কখনো শুনেছ নাকি? মন নষ্ট করা একটা সেশনের পর জিজ্ঞেস করে মহিলা পোলের দিকে তাকিয়ে।
মাথা ঝাঁকায় পোল।
বলে যাচ্ছে চেয়ারপার্সন, ‘আমি ভেবে অবাক হই তোমার জন্মের মাত্র কয়েক দশক আগের কথা। ডেমোক্রসের জন্য আমি এসব ঘেঁটেঘুঁটে এসেছি। সমস্যার ধরণ মোটামুটি একই রকম- তোমাদের আমলের এক যুদ্ধে শত্রুদের কোড ভাঙার জন্য একদল মেধাবী গণিতবিদকে একত্র করা হল, অত্যন্ত গোপনে… ঘটনাক্রমে, কাজটাকে বাস্তবরূপ দিতে তারা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম সত্যিকার কম্পিউটারটা বানিয়ে ফেলে।
‘এ নিয়ে দারুণ গল্প আছে একটা আশা করি ঘটনাটা সত্যি, কারণ এতে আমাদের টিমে দারুণ উৎসাহ জাগবে- একদিন প্রধানমন্ত্রী ভিজিটে এল, তারপর এনিগমার ডিরেক্টরকে বলল: “দুনিয়া ছেনে ফেলে হলেও কাজের লোক নিয়ে আসুন, যখন বলেছিলাম, ভাবিনি সত্যি সত্যি আমার কথাটাকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন।’
প্রজেক্ট ডেমোক্লেসের জন্যও দুনিয়া ছেনে ফেলা হয়েছে। সবচে বড় কথা, এ প্রজেক্টের লোকেরা জানে না কখন কাজে লাগবে এটা- কয়েকদিন পর, কয়েক মাস পর, নাকি বছর কয়েক পর… প্রথম দিকে তাড়া দিয়েও কাজ হচ্ছিল না। খুব একটা গা করছিল না গবেষকরা। গোপনীয়তাও সমস্যা সৃষ্টি করে। তথ্য এখন যে কোনোভাবে যে কোনো জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে বলে এ ডোমোক্র প্রজেক্টের কথা আর কেউ জানে না সংশ্লিষ্ট পঞ্চাশজন ছাড়া। কিন্তু এসব লোকের হাতেই সর্বময় ক্ষমতা- যে কোনো তথ্য লুকাতে পারবে, যে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে পারবে, যে কোনো শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে, একাই পিকো ভল্ট খুলতে পারবে পাঁচশ বছর পর…
ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সিতে গ্রেট ওয়ালের ডাটা পাবার কথা হালম্যান প্রকাশ করার পরই ধারণা করা হয় কোনো একটা গন্ডগোল আছে। এই কদিন ব্রেইনক্যাপের এন্টি-ইনসমনিয়া প্রোগ্রাম নিয়েও পোলের ঘুমাতে সমস্যা হয়েছে। অবশেষে ঘুমাতে গেলে মনে প্রশ্ন জাগত, আর জেগে ওঠা হবে তো? কি অবশেষে অস্ত্রের সমস্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়ে গেল। অস্পৃশ্য, অদৃশ্য, অকল্পনীয় এক মারণাস্ত্র। ঢুকিয়ে দেয়া হয় বিশালবপু এক ক্রিস্টালাইন বস্তুতে, ধাতব আবরণে ঢেকে কিছুতকিমাকার করা হয়।
পোল অনিশ্চয়তার সাথে গ্রহণ করে জিনিসগুলো। কে জানে, হিরোশিমার জাপানি ঘাঁটিতে ফেলার জন্য পারমাণবিক বোমা বহনকারী পাইলটেরও এমন লেগেছিল কিনা। তাদের সব ভয় যদি ঠিক হয়ে থাকে, তাহলে দায়িত্ব আরো বেড়ে যাবে, কমবে না।
মিশনের প্রথম ভাগ সফল হবে কিনা তাও জানা নেই। কারণ কোনো সার্কিটই পুরোপুরি নিখাদ হতে পারে না। হালম্যানকে এখনো প্রজেক্ট ডেমোক্লেসের ব্যাপারটা জানানো হয়নি। গ্যানিমিডে ফিরে আসার সময় কাজটা করবে পোল।
এখন শুধু একটাই আশা- হালম্যান ট্রয়ের ঘোড়র কাজ নিবে এবং, হয়ত, এ পদ্ধতির শিকার হয়ে মিলিয়ে যাবে শূন্যে।
৩৮. প্রিম্পটিভ স্ট্রাইক
এত বছর পর হোটেল গ্যানিমিডে ফিরে আসাটা বিচিত্র লাগে- সবচে অবাক ব্যাপার, সবকিছু একেবারে অপরিবর্তিত মনে হয় এত ঘাত-প্রতিঘাতের পরও। ঘরে প্রবেশ করে পোল। আবারও খুব অস্বস্তি হয়, এ সুইট এমন এক লোকের নামে যে তার সফরসঙ্গি ছিল তখন পর্যন্ত মানব ইতিহাসের সবচে বড় অভিযানে। ছবির ভিতর থেকে তাকিয়ে আছে ডেভ বোম্যান। অন্যদিকে বোম্যান/হালম্যান অপেক্ষা করছে ইউরোপার বুকে।
স্যুইটের পুরনো ধাচের ভিডফোনে পরিচিত মুখাবয়ব ফুটে উঠল।
ফ্র্যাঙ্ক! চিৎকার করে কান ঝালাপালা করে দিতে চায় যেন থিওডোর খান, আসবে সেকথা আমাকে আগে বলনি কেন? ভিডিওতে আর কাউকে দেখা যাচ্ছেনা কেন? তোমার সাথে ল্যান্ড করা পোশাকি অফিশিয়াল ধাচের লোকগুলোই বা কে
প্লিজ, টেড। হ্যাঁ, আমি দুঃখিত, কি বিশাস কর, এসবের পিছনে কারণ আছে, খুবই ভাল কারণ আছে। পরে ব্যাখ্যা করব। যা, সাথে আরো একজনতো আছেই। যত দ্রুত সম্ভব কল করছি। গুডবাই।
‘ডু নট ডিস্টাব সাইন অন করে দেয়ার পর মাফ চাওয়ার ভঙ্গিতে বলল, স্যরি এ্যাবাউট দ্যাট- তুমিতো জানই লোকটা কে, তাই না?
হ্যাঁ- ডক্টর খান। মাঝে মাঝে আমার সাথে যোগাযোগের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে যায়।
“আর তুমি কখনো জবাব দাওনি। কেন, জানতে পারি কি? আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকতে এ প্রশ্নটা না করে পারে না পোল।
শুধু আমাদের চ্যানেলটা ভোলা রাখতেই ভাল লাগে। মাঝে মাঝে দূরে চলে যাই। কখনো বছরের পর বহর দুরেই থাকি।’