‘আপনার সময়ের একটা ফ্রেজ আমাকে শিখিয়েছিলেন। সেটা কাজে লাগবে। দিস ইজ এ ক্যান অব ওয়ার্মস।
‘কিন্তু শুধু বোম্যান- হালম্যান এটাকে খুলেছে।’ বলল কমিটির এক সদস্য, মনোলিথের মতো জটিল জিনিসের অপারেশন বুঝতে পারা কি তার পক্ষে সম্ভব? নাকি এসব কল্পনাপ্রসূত
মনে হয়না তার খুব একটা কল্পনাশক্তি আছে, জবাব দিল ডক্টর ওকন, ‘সবকিছু ভালভাবেই চেক করেছে। আর নোভা স্করপিওর রেফারেন্স আছে যখন… আমাদের ধারণা ছিল সেটা কোনো দূর্ঘটনা। এখন দেখা যাচ্ছে- বিচার।
‘প্রথমে বৃহস্পতি, তারপর স্করপিও, ডক্টর কাউসম্যান বলছে, আইনস্টাইনের সাথে টক্কর দেয়ার জন্য সে খুব বিখ্যাত এক পদার্থবিদ, ‘এখন লাইনে কে থাকবে?
‘আমরা সব সময় ধারণা করেছি,’ বলল চেয়ার, যে টি এম এ গুলো আমাদের দেখভাল করে, এক মুহূর্তের জন্য থামে সে, তারপর শক্তি দিয়ে বলে, কী দূর্ভাগ্য কী চরম দূর্ভাগ্য- মানবজাতি তার খারাপ অধ্যায়গুলো শেষ করে এসে এ রিপোর্ট পাঠাল নিজ হাতে।
আবার নিরবতা। সবাই জানে যে বিংশ শতাব্দিকে অত্যাচারের শতাব্দি বলা হয়।
কোন বাধা না দিয়ে শুনছে পোল। আবারো কমিটির মান নিয়ে সন্তুষ্ট হয় সে। কেউ নিজের নিজের তত্ত্ব কপচানোর বা তর্ক তোলার চেষ্টা করছে না। আত্মম্ভরিতা প্রকাশেরও অবকাশ নেই। তার সময়ে এমন সব বিচিত্র তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যেত সবার মধ্যেই স্পেস এজেন্সি ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে এ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের, কংগ্রেশনাল স্টাফ আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল এক্সিকিউটিভদের মধ্যে…
সত্যি, মানবজাতির উন্নতি হয়েছে। ব্রেইনক্যাপ শুধু অকেজো ধারণাগুলোকে বাতিল করে দেয়নি, শিক্ষার ব্যবহারের হার বাড়িয়ে দিয়েছে সাঘাতিকভাবে। একটু সমস্যাও আছে এতে, এখনকার সমাজে খুব বেশি ব্যতিক্রমী চরিত্র দেখা যায় না। মাত্র চারজনের কথা সে মনে করতে পারে- ডক্টর খান, ইন্দ্রা, ক্যাপ্টেন চ্যান্ডলার আর ড্রাগনলেডি।
চেয়ারপার্সন প্রথমে সবার কথা শুনল, সবাইকে সবটুকু প্রকাশ করতে দিল, এরপর যোগবিয়োগের পালা।
‘প্রথমেই যে প্রশ্নটা এসে পড়ে- এ হুমকিকে আমরা কতটা সিরিয়াসলি নিব সময় নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট আছে এখানে। মিথ্যা এ্যালার্ম বা ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকলেও ব্যাপারটা এত বেশি জটিল যে আমাদের সিরিয়াসলি নিতে হবে। সত্যি বলে ধরে নিতে হবে। বিপরীত কোনো বিষয় নিয়ে প্রমাণ পাওয়ার আগ পর্যন্ত এটাই আমাদের করণীয়, সবাই রাজি?’
‘ভাল। আর আমরা জানি না কতটা সময় আছে হাতে। সুতরাং ধরে নিতে হবে বিপদ ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে। হয়ত পরেও হালম্যান নতুন কিছু জানাতে পারে, তদ্দিনে দেরি হয়ে গেলে?
তাই এখন সিদ্ধান্তে আসতে হবে: কী করে আমাদের টিকিয়ে রাখতে পারি? বিশেষত মনোলিথের মতো শক্তিমান কিছুর বিরুদ্ধে বৃহস্পতির কপালে কী
জুটেছিল একবার ভেবে দেখুন! আর নোভা স্করপিও’….
জানি না কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করে লাভ হবে কিনা। তবু, খতিয়ে দেখতে হবে। ডক্টর ক্রাউসম্যান, একটা সুপারব বানাতে কতদিন সময় লাগবে?
‘আশা করি ডিজাইনগুলো এখনো আছে, তার মানে রিসার্চ করতে হবে না উ… সম্ভবত হপ্তা দুয়েক। থার্মোনিউক্লিয়ার উইপন বানানো সহজ, সেখানে কমন ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয় হাজার হলেও, জন্ম নিয়েছিল দ্বিতীয় সহস্রাব্দে। কিন্তু আরো ভাল কিছু চাইলে- যেমন এন্টিম্যাটার ব, অথবা ছোট ব্ল্যাকহোল- তখন কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।’
‘থ্যাঙ্ক ইউ। দেখাশোনা শুরু করে দিতে পারবেন কিন্তু আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, এতে কাজ হবে না। এত শক্তিশালী জিনিস যারা তৈরি করবে তারা কাছাকাছি প্রযুক্তির ধ্বংস-ক্ষমতার জিনিসের হাত থেকে রক্ষার ব্যবস্থাও করবে। তাহলে আর কোনো সাজেশন?
‘আমরা কি মধ্যস্থতা করতে পারি? খুব বেশি আশা না রেখেই প্রশ্ন তুলল এক কাউন্সিলর।
কীসের সাথে… বা কার সাথে? জবাব দিল কাউসম্যান, আমরা এর মধ্যেই আবিষ্কার করে ফেলেছি, মনোলিথটা একেবারে খাঁটি মেকানিজম। যা করার কথা শুধু তাই করছে। প্রোগ্রামে ফ্লেক্সিবিলিটি থাকতেও পারে। আছে কি নেই সেটা আমরা জানি না। আর হেড অফিসের কাছে আপিল করার উপায়ও নেই- মাত্র সাড়ে চারশ আলোকবর্ষ দূরে সেটা।
কোন বাধা না দিয়ে শুনছিল পোল; এ আলোচনায় কাজে লাগবে এমন কথা বলতে পারবে না সে। বেশিরভাগই মাথার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। এখন, এ কথা যদি বাইরে প্রকাশ পেয়ে যায়, আর ভুল হয়, তাহলে সমস্যা আছে। ল না হলে মানবজাতির মঙ্গল হোক।
পরিচিত একটা বাক্যাশং শোনার আগ পর্যন্ত এসব ভাবনায় মগ্ন ছিল সে।
কমিটির সাধারণ এক সদস্য, নামটা এত বড় তার যে পোল কখনো মনে রাখতে পারে না, শুধু দুইটা শব্দ ঢেলে দিল আলোচনায়।
‘ট্রোজান হর্স!
প্রথমে সবাই নিশ্চুপ, তারপর একজন বলে উঠল, ‘প্রেগন্যান্ট।’
সবাই একবাক্যে বলা শুরু করল, ইস! আমার মনে কেন আগেই এল না কথাটা!”
‘অবশ্যই।
দারুণ আইডিয়া।
অবশেষে প্রথমবারের মতো সবাইকে চুপ করতে বলল চেয়ারপার্সন।
‘ধন্যবাদ, প্রফেসর থিরুগনানাসাম্পায়ামূর্তি!’ বলল সে, একটুও ভুল না করে, ‘আরো একটু খুলে বলবেন কি?
‘অবশ্যই। যদি মনোলিথ সবার ধারণা অনুযায়ী সত্যি সত্যি একটা অনুভূতিহীন যন্ত্র হয়ে থাকে এবং সেলফ মনিটরিং সিস্টেম যদি সীমিত হয়ে থাকে তাহলে আমাদের হাতে এর মধ্যেই এমন কিছু অস্ত্র আছে যা কাজে লাগবে। ভন্টে লুকানো আছে সেটা।